গৌরনদীতে ধর্ষণের চেষ্টার বিচার চাওয়ায় আট বছরের শিশুকে নষ্টা আখ্যায়িত করে স্ব-পরিবারকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বার্থী বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে খুপরি ঘর করে বসবাস করা ভূমিহীন আলম বেপারী জানান, গত ৭ বছর পূর্বে তিনি স্ত্রী নাছিমা বেগম ও একমাত্র কন্যা সন্তান আনোয়ারা খানমকে নিয়ে বার্থী বাজার এলাকার সড়ক ও জনপথের জমিতে জীর্নশীর্ন একটি কুড়ে ঘর নির্মান করে বসবাস শুরু করেন। গত শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় তিনি দিনমজুরের ও তার স্ত্রী নাসিমা বেগম ঝিয়ের কাজ করতে যান। ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে তার বসত ঘর সংলগ্ন বার্থী বাজারের তেলের দোকানদার উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ এসাহাক মোল্লার পুত্র রিপন মোল্লা (১৮) তার আটবছরের কন্যা আনোয়ারা খানমকে কথা বলার জন্য দোকানে ডেকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে বন্ধ দোকানের মধ্যে নিয়ে রিপন শিশুটিকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এ সময় শিশু কন্যা ডাকচিৎকার শুরু করলে বখাটে রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধরে খুটির সাথে আঘাত করে। এতে শিশুটি রক্তাক্ত জখম হয়। এপর্যায়ে শিশুটি কান্নাজুড়ে দিলে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে। আহত শিশুটিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে রিপনের লোকজন বাঁধা প্রদান করে। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে শিশুটিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
ভূমিহীন আলম বেপারী আরো জানায়, তিনি ও তার স্ত্রী বাড়িতে ফিরে এ ঘটনা শুনে কন্যা আনোয়ারাকে নিয়ে রাতে তারা বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও রিপনের নিকট আত্মীয় মোঃ সহিদুল ইসলাম বেপারীর কাছে বিষয়টি জানিয়ে বিচার চান। তারা বিচার না করে উল্টো তাদের শ্বাসিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছলে শিশু কন্যা আনোয়ারা ও তার বাবা-মা অসংখ্য লোকের সামনে এ ঘটনার বর্ননা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সহিদুল ইসলাম শিশুটিকে নষ্টা মেয়ে আখ্যায়িত করে আগামী তিনদিনের মধ্যে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে  বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তারা স্থান ত্যাগের নির্দেশ প্রদানের কথা স্বীকার করে বলেন, মেয়েটি নষ্টা প্রকৃতির। বাজারের স্বার্থেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিপন মোল্লার সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার পিতা এসাহাক মোল্লা বলেন, মেয়েটি নষ্টা, তার কোন অভিযোগে আপনাদের কান দেয়া উচিত নয়। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। শিশু কন্যার অভিভাবকরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।