চাল নিয়ে প্রতিনিয়ত চুলোচুলি

আছিলো সব দ্যাওয়া হইয়া গ্যাছে, আমনেরা এ্যাহন সবাই চইল্লা যান। এইয়া কইয়াই দোকান বন্ধ কইরা দেছে। টাহা দিয়া সরকারি চাউল কেনতে আইয়াও কেনতে পারলাম না” OSM Rice Gournadiক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বলছিলেন গেরাকুল গ্রামের রিকসা চালক কালাম সিকদার (৩৫)। একথা শুধু কালামেরই নয় একইভাবে জানালেন আশোকাঠী গ্রামের নিলুফা বেগম (৩৩), ইয়াসমিন বেগম (৪০), আছিরোন নেছা (৪৫), দক্ষিণবিজয়পুর গ্রামের ইয়াকুব আলী (৫০), সোনা মিয়া (৪০), আছিরোন নেছা (৩৫) সহ অনেকেই। নায্যমূল্যে চাল কিনতে এরা সবাই গতকাল শনিবার সকালে এসেছিলেন বরিশালের গৌরনদী পৌর সদরের আশোকাঠী বাসষ্ট্যান্ডের ওএমএস ডিলারের দোকানে। সকাল সাতটা থেকে লাইনেও দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। কিন্তু তাদের লাইনের আগের লোকদের চাল দিতে গিয়ে ডিলারের সকল চাল শেষ হয়ে যায়। ফলে তাদের ভাগ্যে আর জোটেনি সরকারি নায্য মূল্যের চাল। এ ঘটনা শুধু একদিনের নয় প্রতিনিয়তই এ রকম ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে ডিলার পরিচালনাকারি গোলাম রাসেল মিয়া জানান, জনপ্রতি ৫ কেজি করে বরাদ্দকৃত চাল ২’শ জনার মধ্যে সমবন্টন করে দেয়া হয়েছে। সপ্তাহের ছয়দিনই তার ডিলারের দোকানে আশোকাঠী, কাসেমাবাদ, দক্ষিণবিজয়পুর, টিকাসার ও বিল্লগ্রাম থেকে হাজার-হাজার নারী-পুরুষ আসেন নায্যমূল্যে চাল নিতে। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় দু’শ জনের পরে আর কাউকে চাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিধায় প্রতিনিয়তই চাল না পেয়ে আগত লোকজন ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরো জানান, প্রথম লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে প্রায় প্রতিনিয়তই তার ডিলারের দোকানের সামনে মহিলাদের মধ্যে চুলোচুলির মতো ঘটনাও ঘটছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পৌর সদরে সর্বমোট ৫টি ওএমএস ডিলার রয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। ইউনিয়ন ভিত্তিক ওএমএস ডিলার নিয়োগ করা হলে পৌর সদরের ডিলারদের ওপর অনেকাংশে চাপ কমে যাবে। তিনি আরো জানান, ডিলাররা তাদের কাছ থেকে ২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে প্রতিকেজি চাল করে তা ২৪ টাকা দরে বিক্রি করছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়া ডিলারদের চাল বৃদ্ধি কিংবা ইউনিয়ন ভিত্তিক ডিলার নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ইউনিয়ন ভিত্তিক ডিলার নিয়োগ ও ডিলারদের চাল বৃদ্ধি করে দেয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।