স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করায় কলেজ ছাত্রের কারাদন্ড

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীতে স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করার অভিযোগে উজ্জল চন্দ্র দাস (২৬)নামের এক  কলেজ ছাত্রের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পটুয়াখালীর নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন্ । দন্ডপ্রাপ্ত উজ্জল পটুয়াখালী সরকারী কলেজের এইচ,এস,সি’র প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বাবা বিমল চন্দ্র দাসের শহরের সবুজবাগ মোড় এলাকায় সেলুনের ব্যবসা রয়েছে।  অভিযোগকারী সাইরা তাবাসসুম সেবা (১৬) সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তার বাবার নাম তসলিম শিকদার। তিনি জেলা কৃষকলীগের প্রভাবশালী নেতা ও শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে শহরের সবুজবাগ মোড় এলাকায় কলেজ ছাত্র উজ্জল ওই স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করে। এ ঘটনা তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থল থেকে উজ্জলকে আটক করা হয়। রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসালে উজ্জল তার দোষ স্বীকার করায় অভিযুক্ত উজ্জলকে ১মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ৫শ’ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৭দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। রায় ঘোষনার সময় অভিযোগকারী স্কুল ছাত্রী ও তার অভিভাবকমহল আদালতে উপস্থিত ছিলো।

এদিকে দন্ডপ্রাপ্ত উজ্জলের পিতা বাবু বিমল চন্দ্র দাস জানান, তার ছেলে নির্দোষ। প্রভাবশালী মহলের শিকার তিনি এবং তার গোটা পরিবার। দন্ডপ্রাপ্ত উজ্জল জানান, তিনি মেয়ের বাবার আক্রোশের শিকার। ঘটনার সময় ডিবি পুলিশ তার বাসা থেকে তাকে আটক করেছে বলেও তিনি জানান। তবে দোষ স্বীকার কেন করলে-এমন প্রশ্নের উত্তরে উজ্জল জানায়, দোষ স্বীকার না করলে পুলিশ তাকে মেরে ফেলত। এ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে উজ্জলের বন্ধুরা আরো জানান, ‘ডিবি পুলিশ (অজ্ঞাত কারণে) বাসা থেকে উজ্জলকে আটক করে নিয়ে আসে। কথা আছে বলে পুলিশ তাকে বাসা থেকে নিয়ে যায়। তাছাড়া মেয়ে নিজে আদালতে স্বিকার করেছে যে, উজ্জলের সাথে তার মোবাইল প্রেম ছিল। তবে এটি যে পরিকল্পিত একটি ঘটনা তা এলাকার প্রায় সকলেই অকপটে স্বিকার করেন।’

অপরদিকে অভিযোগকারীর বাবা তসলিম শিকদার জানান, ছেলেটি বেয়াদব। কিছুদিন আগেও তাকে এবং তার পরিবারকে এ ব্যপারে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু সে(উজ্জল) কিছুতেই থামেনি। মঙ্গলবার তিনি যখন তার মেয়েকে নিয়ে কচিংয়ে যাচ্ছিল তখনও উজ্জল শিস দিয়ে তার মেয়েকে উত্যক্ত করছে বলে তিনি জানান। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে উজ্জলের বাবাকে এব্যপারে সতর্ক করা হয়েছিল যে, উজ্জল যেন সবুজবাগ মোড় এলাকায় কিছুদিন না আসে। তারপরেও মঙ্গলবার সে ওই এলাকায় এসে ওই মেয়েকে উত্যক্ত করেছে। ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম উজ্জলকে তার বাসা থেকে আটকের কথা অস্বীকার করে জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে ওই মেয়েকে উত্যক্ত করার সময় হাতে নাতে উজ্জলকে আটক করা হয়েছে। তবে এ কথার সপক্ষের কোন স্বাক্ষি বা যুক্তি তিনি দেখাতে পারেনি। আপনি কি আগেই জানতেন যে উজ্জল মঙ্গলবার ৪টার সময় ওই মেয়েকে উত্যক্ত করবে- এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর ডিবি পুলিশের এসআই নজরুল দিতে পারেননি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যা রাত থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আদালতে মেয়ের বাবা-মা, মেয়ের নিকটাত্মায়ী সাবেক সিভিল সার্জন নুরুন্নাহার বেগম শিরি, তার স্বামী পটুয়াখালী খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক মমতাজুল করিমসহ শহরের অনেক নামীদামী ভিআইপি পারসোন মেয়ের সাথে আদালতের মধ্যে ও বাইরে উপস্থিত ছিল। তারা সকলেই সার্বক্ষনিক ব্যস্ত ছিল মোবাইল ফোন নিয়ে কথা বলতে।