সাসপেন্ড হয়েও বহাল তবিয়তে উদয়ন স্কুলের শিক্ষিকা লাকি – স্কুলের নামে শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করা হচ্ছে – নেপথ্যে খলনায়ক স্কুলের ব্রাদার

বরিশাল সংবাদদাতাঃ উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর রজনীগন্ধা শাখার শিক্ষিকা সারমিন সাকিলা লাকি সাসপেন্ড হওয়ার পরও ব্রাদারকে ম্যানেজ করে আবারো ক্লাস নিতে শুরু করেছে। উদয়ন স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করার কারণে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৭ দিন আগ থেকে অভিভাবকরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুলে পাঠায় না। কারণ হিসেবে জানা যায়, উদয়ন স্কুলের বাচ্চারা সকালের নাস্তা করে শিক্ষকদের চড়-থাপ্পড় খেয়ে আর ক্লাস শুরু করে কান ধরে। অভিভাবকরা শিক্ষকদের এহেন আচরণের প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে একাধিকবর ব্রাদারকে জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নির্যাতনের কারণ হিসেবে জানা যায়, সে স্কুলের শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠিত কোচিং সেন্টারে না পড়ায় শিক্ষার নামে কৌশলে এই অত্যাচারের অভিযোগ। এ স্কুলের প্রতিজন শিক্ষকদের নিজস্ব কোচিং সেন্টার ব্যবসার খবর স্কুল কর্র্তৃপক্ষও জানেন।

সূত্র জানায়, নির্যাতনের শীর্ষ স্থান দখল করেছে উদয়ন স্কুল। সব চেয়ে নির্যাতনকারী শিক্ষকরা হলেন সারমিন সাকিল লাকি, সুইটি, শাহানা ও আলো। এদের শুধু ছাত্র-ছাত্রীরাই ভয় করে না, ভয় করে অভিভাবকরাও। স্কুলে ছাত্রদের পাঠিয়ে রীতিমত আতঙ্কে থাকছেন অভিভাবকরা। অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা বলেন আমাদের কোচিং-এ দেন; তাহলে আপনাদের সন্তানরা পরীক্ষায় ভাল করবে। কোচিং-এ যে সকল ছাত্র-ছাত্রী পড়ে তাদের পরীক্ষা আসার আগে প্রশ্ন ফাঁস করে দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগও করেন অনেক অভিভাবকরা। নির্যাতিত শিশুদের পিতা-মাতারা আরো জানান, ক্রিয়েটিভ কোচিং সেন্টার নামে একটা কোচিং আছে, তার দোতলা উদয়ন স্কুলের শিক্ষিকাদের দখলে। ক্রিয়েটিভ কোচিং সেন্টারে বসে শিক্ষা বাণিজ্য করছে শিক্ষিকরা। এ কোচিং সেন্টারে বাধ্য করে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়তে, নির্যাতনের কথা জানিয়ে ব্রাদারের কাছে একাধিক বার অভিযোগ করা হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আবদুল রব নামে এক অভিভাবক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। সে মোতাবেক সাময়িক সাসপেন্ড হওয়ার পরে সারমিন সাকিলা লাকিকে পুরোপুরি বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু ব্রাদারকে ম্যানেজ করে আবারও ক্লাস নিতে শুরু করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবকরা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি এই শিশু নির্যাতন বন্ধ না করে তাহলে আমরা আমাদের বাচ্চাদের অন্যত্র নিয়ে ভর্তি করবো। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবো। ইতোপূর্বে নির্যাতিত কয়েকটি শিশুর পিতা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসন তদন্ত করে ঘটনা প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন।