মৃদুল-গৌতমের কাছে খোলা চিঠি বন্ধু নাকি শত্রু ভারত?

সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কানাডা ॥

প্রিয় মৃদুল, প্রিয় গৌতম,
বঙ্গদেশ থেকে তেরো হাজার মাইল দূরে বসবাস করেও কখনোই এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি, তোরা অনেক দূরে! তোরা আমার প্রাণের বন্ধু। সব সময় প্রাণ দিয়ে, হৃদয় দিয়ে তোদেরকে বুকের ভেতর অনুভব করি। তোদের সাথে আমাদের কত যে সৌহার্দ্য, স্মৃতি, মাতামাতি আছে! দুই বাংলার ঢাকা-কলকাতা কিংবা দুই বাংলার সম্পর্ক নিয়ে আমার অনেক আবেগী কবিতা আছে।

সহোদর, যুক্তাক্ষর, সমান্তরাল রেললাইন, বাদাম, দুই নয়ন, জলপানি ইত্যাদি কতভাবে যে তোদেরকে উপমায় টেনেছি। একটি উদাহরণ দিই-
সমবেত পাখি নিজেদের মন মণদরে
বিনিময় করে হাত হলদিয়া বন্দরে
বেলুন ফুলের মতো উৎসব-মুখরিত
পাখিপ্রেম আর অমৃত রচনা চা, শীত ও
সহোদর হি.মু যুক্তাক্ষরে গ্রন্থিত
করে জলপানি পরস্পরকে মন দিত!
সেসব স্মৃতিপাঠ আর এক আগুনের,
এক আকাশের সুনীল, শামসু বা গুণের
মন বিভাগের পানি ও জলের বাঘ দেখা,
ভাগ-বিভাজন কে সে মুছে দিবে দাগরেখা?
শুধু আমিই নই; আমাদের লেখক, শিল্পীদের গল্প-গানে-কবিতায় এ ভালোবাসার শেষ নেই। মৃদুল, তুই তোর পিতৃভূমি বরিশালের এক মুঠো মাটি কী আবেগেই না নিয়ে যাস মাতৃভূমিতে শ্রীরামপুরে!

শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সৈয়দ হক, সুনীল গাঙ্গুলী, রফিক আজাদ, জয় গোস্বামী, শ্যামল কান্তি দাশ, হাসান হাফিজ এদের সম্পাদিত দুই বাংলার ভালোবাসার কবিতা, দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ কবিতা, মাকে নিয়ে কবিতা, বিরহের কবিতায় মিলেমিশে বাংলা ভাষা আর বাঙালি দুই মলাটে বন্দী। ২০০৩-এর ডিসেম্বরে নন্দনের বাংলা আকাডেমীতে দুই বাংলার কবিদের জমজমাট অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন শ্রদ্ধেয় নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তিনজন সম্মানিত মন্ত্রী। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ৫২-এর ভাষা আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অর্জনের জন্য বাংলাদেদশিদের শ্রদ্ধা জানালেন। সেদিন গর্বে বুক ফেটে যাচ্ছিল। আমিও মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজয়ের মাসে মহান মুক্তিযুদ্ধে তোদের অবদানের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি।

তোদের সাথে আমাদের নানান সম্পর্ক। হাজার বছরের সম্পর্ক! আর গাঢ় বন্ধন, ৪০ বছরের! কারণ, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রক্তের সম্পর্কও রয়েছে। একাত্তরের দু’দেশের সৈন্যের রক্ত একই সঙ্গে প্রবাহিত হয়েছে’। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মিত্র বাহিনীর ১৪/১৫ হাজার সৈন্যও আমাদের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। যে জন্য বাংলাদেশ চিরঋণী!

তোরা, (তথা ভারতবাসী) দীর্ঘ নয়টি মাস আমাদের এক কোটি উদ্বাস্তু-শরণার্থীকে আদরে আগলে রেখেছিলি। আমরা কোনোদিন সেই ঋণ শোধ করতে পারবো না।

প্রিয় বন্ধু মৃ. গৌ
তোদের সেই ঐতিহাসিক ঋণ কী এখন আমাদের রক্ত দিয়ে শোধ করতে হবে? তোরাও কী বর্বর বাহিনীর(পাকিবাহিনী) ভূমিকায় ? পাখির মতো গুলি করে মারবি আমার ছোটবোন ফেলানীকে?

এক কিশোরী ফেলানী নয়, গত বছর তোদের ক্ষমতাধর সীমান্তবাহিনী ৭৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। আর এক দশকে ২০০৭-এ এক সাথে ১১জন বিডিআরকেও গুলি করে মেরেছে। হিসেবে প্রায় হত্যা হাজার খানেক। অর্থ্যাৎ ৯২২ জন!
মৃদুল তুই তো সাংবাদিক। নিশ্চয়ই খবর পেয়েছিস্ গত ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের সীমান্তে আমাদের ফুলবাড়ির নিরীহ কিশোরী ফেলানীকে তোদের বিএসএফ গুলি করে চার/পাঁচ ঘন্টা কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছে। তারপর হাত পা বেঁধে বাঁশে ঝুলিয়ে লাশ নিয়ে গেছে!

আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর ফেলানীর হাতে মেহেদী মেখে, লাল শাড়ির ঘোমটা টেনে শ্বশুরবাড়ি যাবার কথা ছিলো। সেই ১৫ বছরের কিশোরীর রঙিন স্বপ্ন ছারখার করে দিলো মাত্র একটি গুলি! গুলির পরের দৃশ্য দুটিও কী সহনীয়, বন্ধু!

হে ভারতীয় বন্ধু আমার পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার। কিন্তু আমরা মনে করি, আমাদের সম্পর্কের দৈর্ঘ্য-দূরত্ব অসীম। সেই অসীমের মাঝে কেন সীমারেখা: অশনি সঙ্কেত শুনতে পাই? কেন বেজে ওঠে বন্দুক!

বাংলাদেশ সরকার তীব্র কোনো প্রতিবাদ জানায়নি! তবে মিডিয়াগুলো সেই দুঃখজনক সংবাদ তুলে ধরেছে, আর আমাদের মতো কলমজীবীরা কষ্ট পেয়ে কলম ধরেছে।

১৫ আগস্ট ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর প্রতিবাদে আমাদের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ভারতে চলে গিয়েছিলেন। ভারত দীর্ঘ ১৬ বছর তাঁকে আশ্রয়-আদর দিয়েছিলো। ভারতের প্রতি তাঁর দুর্বলতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধার শেষ নেই। তিনিও লিখেছেন- `ভারত মানবের দেশ, দানবের নয়। পৌরাণিক যুগে সুর-অসুরের, দেব-দানবের লড়াইয়ের অনেক উপাখ্যানে এমন চরম নিষ্ঠুরতার স্বাক্ষর পাওয়া যায়। কিন্তু হিন্দু শাস্ত্রে সদা সর্বদা অসুরের নয়, সুরের জয়জয়কার দেখা যায়। সে মহাভারতের কুরুক্ষেত্রেই হোক, আর সীতা হরণে লঙ্কাপতি রাবণই হোক। কোথাও কোনো দানবের জয় হয়নি। সর্বত্রই মানবের আর মানবতার জয়জয়কার। কিন্তু হায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ইদানীং একি দেখি! ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী দিনের পর দিন পাখি শিকারের মতো সীমান্তে নিরীহ মানুষকে গুলি করে মারছে। কোনো প্রতিকার নেই। কেন এই নিষ্ঠুরতা?` ( দ্র. দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৫ জানুয়ারী ২০১১ ঢাকা।)

ফেলানী কী ফেলানীই হয়ে যাবে? নাহ। তাই এরই মধ্যে ৭ জানুয়ারি ‘ফালানি দিবস’ পালনের দাবি জানিয়েছেন কানাডা প্রবাসী শাহীন সিদ্দিকী।

হ্যাঁ, এই বৈমানবিক আচরণ এবং আন্তর্জাতিক রীতিনীতিবিরোধী হত্যাকাণ্ডের খবর তোদের কলকাতার দৈনিকগুলো তুলে ধরেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার নোট পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। তারপর ভারত ‘গভীর’ অনুশোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর (আরটিএনএন, ১৯ জানুয়ারি, ২০১১)। ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি ঢাকায় সফরত ভারতীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোপাল কৃষ্ণ পিল্লাই, আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধের আশ্বাস দেন। এ সময়ের জন্য ধন্যবাদ। দু’দেশের নো-ম্যান্সল্যান্ডের পতাকা বৈঠকে তো বহুবার এ ধরনের ‘আশ্বাস’ পেয়েছি! কিন্তু বিএসএফের গুলিতো থেমে থাকেনি!
তোদের বিএসএফের প্রধান রমণ শ্রীবাস্তব ব্রিটেনের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে বলেছেন, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বৈধ! এজন্য অনুতপ্ত হবার প্রয়োজন নেই !!

হে কবি বন্ধুদ্বয়,
আজ কবিতার কথা নয়, সাহিত্যের বিষয় নয়; আজ শুধু আমার ছোটবোন ফেলানীর জন্যেই এই বেদনা ভরা বক্তব্য, আক্ষেপ।

গত ১৫ জানুয়ারি ফেইসবুকে মৃদুল দাশগুপ্তের লেখা সেই কবিতা পড়ে থ মেরে গিয়েছিলাম। তা পাঠকদের সাথে শেয়ার করছিঃ

শোক গাঁথা: নেতাই গ্রাম, লালগড় / মৃদুল দাশগুপ্ত

বাতাসে বারুদ, তাও প্রজাপতি ওড়ে,
ফুলগাছ ভাবে, বধুটি আসে না ভোরে।
গীতালি আদক, পেটে দুটো গুলি
গতকাল গেছে মরে।
শূন্য সাজটি উঠানে রয়েছে পড়ে।

মৃদুলের সেই কবিতার গীতালির সাথে ফেলানীর মৃত্যুর মিল-অমিল দ্রবীভূত হয়ে যায়। যা হৃদয়কে স্পর্শ করবে, নাড়া দেবে মর্মমূলে।

গৌতম-মৃদুল বন্ধু আমার,
তোরা হয়তঃ জানিস্ গত ২০১০-এ ৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের এবং মেক্সিকোর সীমান্তে অনুরূপভাবে মার্কিনবাহিনী ‘বর্ডার পেট্রোল এজেন্ট গুলিতে ১৫ বছরের মেক্সিকান কিশোর সোয়ারেস’কে হত্যা করেছিল! অবশ্য এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংগঠন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ধন্যবাদ সেই সংগঠনটিকে। কিন্তু প্রশ্ন, ভারত-মার্কিন রুই কাতলার কাছে পৃথিবীর পুঁটিমাছ তুল্য ফেলানী-সোয়ারেসরা কী এভাবেই পাখির মতো গুলি খেয়ে প্রাণ দেবে?

ক্ষমা করো বাংলাদেশঃ নো মোর ডেথ অন বর্ডার

বাংলানিউজে ‘বন্ধু নয়, শত্রুরাষ্ট্র ভারত’ পড়ে দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর পাঠক তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ভারতে লেখাটি কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের নাড়া দিয়েছে। তার কিছু নমুনা তুলে ধরা হল।

ফেলানী ফালতু নয়। ফেলানী এখন বিসিএফের হত্যার প্রতীক । আমার কবিবন্ধু মৃদুল দাশগুপ্ত বা গৌতম চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিটা প্রতীকী অর্থেই লেখা, প্রকৃত অর্থে নয়।

ফেলানী হত্যার ঘটনায় গত বছর কেঁদেছেন কিসিঞ্জারের দেশের এক পিতা, ফ্যাংক ডোমিনিক সাইপ্রায়ান। কিন্তু মর্মস্পর্শী বর্বর ঘটনায় মহাত্মা গান্ধীর দেশের বিসিএফপ্রধান রমণের মন গলেনি। মি সাইপ্রায়ান ‘আ লেটার টু ইন্ডিয়া’ শীর্ষক চিঠিতে আবেগঘন কবিতাও যুক্ত করেছেন, যা গান্ধীকে ঊদ্দেশ্য করে লেখা।

উল্লেখ্য, বিএসএফ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং এ ঘটনায় ভারত ক্ষমা না চাইলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন বহির্বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতরা ।

এক বছর আগের বছরের শুরুতে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, বছরের শেষেও সীমান্তে প্রাণ দিতে হয়েছে বাংলাদেশিদের!
যাদের উদেশ্যে চিঠি লিখেছিলাম, তাঁদের মধ্যে কবি গৌতম চৌধুরী মর্মাহত হয়ে কবিতা লিখেছেন আর কলকাতার দৈনিক আজকালের সাংবাদিক মৃদুল দাশগুপ্ত তা নয়াদিল্লিকে অবগত করলে তার জবাব পান। তখন মৃদুল আমাকে লিখলেন- “dulal, Felanir khabarta ami uchchamahale pathiyechhilam.tarpar ei babostha neoya hoyechhe. peli kina janas. Mridul”

১] আর সেই ‘দিল্লি কা লাড্ডু’র চিঠিটা পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলোঃ

No more death on border
BSF to use non-lethal weapons, pledges to bring down firing incidents
Pallab Bhattacharya, New Delhi
 
India yesterday announced to equip its Border Security Force (BSF) with non-lethal weapons in order to stop killing of unarmed Bangladeshis along its border.

The BSF jawans will carry the non-lethal arms in addition to the regular ones, BSF Director General Raman Srivastava said. However, he denied elaborating about non-lethal arms.

He was addressing a joint press conference with the Director General of Border Guard Bangladesh (BGB) Maj Gen Rafiqul Islam after conclusion of 5-day annual talks between the border guard forces here.

Initially the non-lethal weapons will be used in certain designated points along India-Bangladesh border on an experimental basis.

“If this succeeds in bringing down the number of fatalities, we will expand it further to cover the entire border,” he added.

A joint statement issued after the meeting said, “On the issue of death of Bangladeshi nationals, both the sides agreed to take steps to reduce such incidents due to firing along the border.”

“We want BSF to follow the rules of engagement by arresting and handing over to us any trespasser or anybody else involved in cross-border crime,” said Maj Gen Rafiqul Islam, head of the 20-member BGB delegation.
He pointed out that movement of people across the border has been a `complex` issue since the partition of the Indian sub-continent but firing is not a solution to it.

The BSF DG assured his counterpart of showing utmost restraint while dealing with cross-border crimes.
Appreciating BSF`s stand, Maj Gen Rafiqul said there has been not a single incident of killing in BSF firing since January 7 this year, after the killing of 15-year-old Felani on Kurigram border.

The two countries have no option but to go for tough action against drug trafficking and illegal movement of people across the border, observed the BGB chief.

Bangladesh will get 24-hour access to Tin Bigha corridor which connects Dahagram and Angarpota enclaves in India with the mainland, he added.

Srivastava said the BGB delegation has assured India of taking effective steps to ensure there is no illegal movement along the border.

Referring to a controversy over building structures on Indian side within 150 yards of the border, the BSF chief said Bangladesh has agreed to allow India to undertake development work like construction of roads, culverts and bridges in the area with prior information.

“We will provide advance information to BGB on our developmental work and if they have any objection, we will sort those out. We will go ahead only if there is no objection,” mentioned the BSF DG.

During the meeting the BGB team handed over to India a list of criminals and anti-Bangladeshi persons, including those of Bangabhumi movement and persons smuggling phensedyl syrup.

The Indian side also supplied Bangladesh with their list of miscreants involved in human trafficking and those helping passing of counterfeit Indian currency through Bangladesh from other countries.

Replying to a question if the BGB`s list contained the name of Risaldar Moslehuddin, an absconding killer of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Rafiqul said his name was in a list handed over at home secretary-level talks in Dhaka sometime ago.

Both the sides agreed on major aspects of joint border management which awaits approval by the government of Bangladesh.

The two border forces have decided to enhance interaction between them through more field-level meetings and weekly sector commander-level contacts, said Srivastava.

In an apparent reference to arrest of several ULFA leaders last year, he said India has noted with appreciation the help from Bangladesh in bringing Indian insurgents to justice.

In another decision to boost the confidence of the two border guard forces, the BGB and BSF have decided to arrange a joint retreat ceremony on Benapole-Petrapole border.

Modalities of the joint retreat were being worked out and it is expected to begin in a couple of months, noted the BSF chief.
A similar event is held every day on the India-Pakistan border at Attari, close to the Sikh`s holy town of Amritsar in the northern Indian state of Punjab.
As part of the ceremony, national flags are lowered and national anthems are played by smartly uniformed border guards at sunset every day.
According to Srivastava, Bangladesh has accepted a BSF proposal to send BGB officers for training at BSF facilities and the first team would be sent soon.

While Srivastava described the just-concluded BSF-BGB talks as the “most cordial till date,” Maj Gen Rafiqul said the Delhi meeting was “much better” than the previous DG-level talks in Dhaka last year.

২] গৌতম প্রথমে জানান, “আমার বন্ধুকে আমি কী উত্তর দেব- তা কি জানি? আমিই বন্দুক, আমি কাঁটাতার, আমিই ফেলানি…” পরে তিনি ‘ফারাও’* নামে একটি কবিতা লিখেন। কবিতাটি হলোঃ

ফারাও  
শীত ফুরানো সন্ধ্যা তবু শহর জুড়ে গুমরে ওঠে শুচিশ্রীরাগিণী
ফারাও এসে বসে আছেন সভাশোভন বাংলা কবিতার
রক্তের দাগ লুকিয়ে রাখা আত্মপরিচয়ে
 
আমি তখন তাহরির চত্বরে
ট্যাঙ্কের অঙ্কশায়িনী হয়ে চাকার ওপর ঘুমিয়ে পড়েছিলাম
মেহেন্দিতে হাত ছোপানো অনিন্দিত ছোট্ট মেয়েটিও
চেঁচিয়ে বলে পাকা ধানে মই দেব না কারও
কেবল আমি মানছি না ওই কাঁটাতারের অবাঞ্ছিত মুখোশ
 
উর্দি কখন বিদিশা, আর উর্দি কখন অগ্নি বিনা খেলে
আত্মকৌতুকের বশে ফ্লাইওভারের উপর থেকে ছিটকে আসে গুলি
 
ওইটা ছিল আগের দৃশ্য
তাহরির চত্বরে আকাশজোড়া নিশান এখন উড়ন্ত ফেলানি
এবার আমার ঘুম ভেঙে যায় স্রোতস্বিনী নীলের শ্রীরাগিণীর নিরুদ্ধ গর্জনে –
ফারাও নেই ফারাও নেই ফারাও এখন মমি*
(*ফারাও মিশরীয় এক মিথের চরিত্র)

৩]. ভারত থেকে হিন্দোল ভট্টাচার্য তার প্রতিক্রিয়ায় জানান:

“Er naam rashtro. Er Naam Rashtroshoktir aasphalon. Er nam Rashtrio Santraas. Jamon Kanta-taar er kachhe manushke gulibidhho korte haat kaampena rashtroshoktir, tamoni ei bharotborsheri modhye anek deprived manusher andolon ke stabdho korte manush maarte bonduk gorje othe E desher rashtroshoktir.

Dr. Binayak Sen ke jabojjibon karadonde dondito kora hoy jini protyonto ancholer sadharon manusher chikitsaar janyo jiboner anek kichhui bishorjon dan.

Ekhane Kashmire asahay manushke pray protidini ganahatyar mukhomukhi hote hoy.Protibaader rong na thaklei ekhane taake/taader chinhito kora hoy rashtrodrohi hisebe.

Bangladesher je rashtro shokti sadharon manushke hotya kore, taader sange bharoter je rashtro shokti seemante guli chalay, desher modhye operation green hunt er name manush maare, Ganatantra rakhyaar naame ganatantrake hotya kore taader asole kono desh nei, matribhumi nei, bhasha nei. Aar Kantataar akhon ei deshero bibhinno jaygay. Manush merechhi aami/ taar rokte amaar hridoy bhore ache.

Rashtrio khyomota kathamo jaane shashoner bhasha, jaane hotyar bhasha. Er sange desh-seemanter samporko nei.

sudhu bolte paari Felani aamaderi bhai, Amader kono desh nei, amader kantataaro nei. Aamader dike udyoto bonduk theke chhute aschhe rashtrer andhakar santraas. Ei santraser bhasha theke muktir upay janina, swapner katha jani matro.

৪] কলকাতা থেকে সপ্তর্ষি বিশ্বাস লিখেছেন-

ভারতের এই মানচিত্র তো আমাদের নয় … এই ভারত, এই মানচিত্র আমাদেরকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই বন্দুকের জোরেই যে বন্দুক মারছে আমার ভাইকে, আমার বোনকে, মা`কে, বাবা`কে …নিয়ত …কখনো `বাংলাদেশী` বলে কখনো `নকশাল` বলে, কখনো `মুক্তিযোদ্ধা` বলে …

এইভাবে হয়তো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি আরেক ধর্মযুদ্ধের দিকে যে যুদ্ধ কখনো হয়েছিল সাদা চামড়ার বিপক্ষে, কখনো খান সেনা`র বিপক্ষে …

এবার হয়তো তা`ই হবে, হতেহবে `দেশ` `জাতি` ইত্যাদির নামে বানানো ভেদ রেখাগুলির বিরুদ্ধে …
৫] শুভ চট্রপাধ্যায় লেখাটি পড়ে গৌতম চৌধুরীকে চিঠি লিখে জানান-

গৌতম-দা,
এই আবেগঋদ্ধ মেইলটি পড়ে আমি বাকরুদ্ধ। কী উত্তর দেবো আমি জানি না। এই নৃশংসতার প্রতিবাদ জরুরি, এই নির্বিচার হত্যা মানবিকতার বোধগুলিকেই বড়ো-সড়ো প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দ্যায়।

কিন্তু প্রশ্নটা এখানে শুধু আবেগের নয়। কিছু যুক্তির অবকাশও রয়েছে হয়তো বা। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, ভারত-বাংলাদেশ, দুই পক্ষেরই দায় রয়েছে বে-আইনি অনুপ্রবেশের সমস্যাটি খতিয়ে দ্যাখার। আপনারা কলকাতায় বসে বুঝতে পারেন কি না জানি না, কিন্তু এই দিল্লিতে বসে আমরা চোখের সামনে দেখি এই অনুপ্রবিষ্ট মানুষজনকে, তাদের পরিবার-পরিজন, তাদের গ্রাসাচ্ছাদনের জন্যে লড়াই। আপনি জানেন কি না জানি না, দিল্লি-নয়ডা-গুরগাঁও অঞ্চলে বেশিরভাগ রিকশাচালক ও ঠিকে নির্মাণকর্মীদের একটা বড়ো অংশ বাঙালি, আর এই বাঙালিদের মধ্যে আবার একটা বড়ো অংশ বাংলাদেশি। এদের সঙ্গে কথা বললে, খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করলে আপনি বুঝতে পারবেন কে পশ্চিমবঙ্গের আর কে বাংলাদেশ থেকে আগত। আমি এ রকম অনেককে চিনি, যারা সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে নদীয়া, কুচবিহার ইত্যাদি সীমান্তের আশপাশের গ্রামে কোন রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছে ও একটি রেশন কার্ড বা ভুয়ো ভোটার কার্ড বানিয়ে নাগরিকত্ব সাব্যস্ত করেছে। ও তারপর, জমিজমাহীন, সহায়সম্বলহীন এই মানুষগুলি ভাগ্যপরিবর্তনের আশায় পাড়ি জমিয়েছে দিল্লি-নয়ডা-গুরগাঁওয়ে। পুরুষরা রিকশা চালিয়ে আর তাদের বৌ-মেয়েরা বাড়ি বাড়ি কাজ করে পয়সা রোজগার করছে।
এবার আপনাকে জিজ্ঞেস করি, সীমান্ত পেরিয়ে ক্যানো প্রতিদিন এভাবেই চলে আসছে দেশ-ছাড়া, ভিটে-ছাড়া এই মানুষজন? অপরিচিত শহরে, অন্য ভাষায় কথা-বলা মানুষজনদের মধ্যে নিরন্তর অপমান, অবমাননা সহ্য করে (সেই দৈনন্দিন অবমাননা ফেলানির মৃত্যুর চেয়ে কিছু কম লজ্জার নয়) তাদের পরজীবীর মতো গ্রাসাচ্ছাদনের ক্লেশ স্বীকার করতে হচ্ছে? এর দায় কার? আমি এই ভাগ্যাহত পরিবারগুলিকে দোষারোপ করি না, কিন্তু তারা যে-রাষ্ট্রের মানুষ, সেই রাষ্ট্রের কি কোনো দায় নেই এদের প্রতি?

পারে?
ফেলানির মৃত্যু আমার লজ্জা, কিন্তু এই মানুষগুলির বেঁচে মরে থাকার উপাখ্যানও কি ততোটাই লজ্জার নয়? আমি জিজ্ঞেস করি, এই দায় কার?

পুনশ্চঃ রাষ্ট্র-নামক নির্মাণটি হয়তো জোর করে চাপিয়ে দেওয়া একটি অতি-কাঠামো। সীমানাবিহীন দুনিয়ার স্বপ্ন আমরা সব্বাই দেখি। কিন্তু যতোদিন সেই সীমানাহীন পৃথিবী বাস্তবায়িত না হচ্ছে, যদ্দিন আমরা আলাদা আলাদা দেশের, রাষ্ট্রের সরহদ্দে বাস করছি, একটি বিশেষ দেশের নাগরিক হয়ে জীবনযাপন করছি, তদ্দিন রাষ্ট্র কি নিজের দায় এড়াতে পারে, ফেলানির, এই নিরুপায় মানুষগুলির?

৬] অঞ্জন মুখার্জি মন্তব্য করেছেন-

“আর একজন ফেলানীও যেন পৃথিবীর কোনও সীমান্তের বলি না হয়– আমরা যেন হৃদয়ের কার্পণ্য প্রকাশে লজ্জিত হই। অন্ততঃ ভাবতে পারি অনায়াসে ফেলানী আমার বোন/ ফেলানী আমার মেয়ে।”

-amar kotha arekjon bondhu bole diyechen, tai ami tar punorabriti korlam!

৮] কলকাতার বুদ্ধিজীবী অরুণ চক্রবর্তী লিখেছেন-

তাই বলে সাহিত্য দিয়ে সাংবাদিকতা? সাংবাদিকতা দিয়েও সাহিত্য করেছেন নিশ্চই।…অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
৯] কবি রামকিশোর ভাট্টাচার্য বলেছে—

‘তোমার লেখা পড়ে আমি থমকে গেছি! মনে পড়ছে নন্দী পাড়া গ্রামের কথা। ভাবছি- একী ভয়াবহ বর্বরতা। আমি প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি…. ক্ষমা করো বাংলাদেশ।’


Canada
saifullahdulal@gmail.com