১১ জানুয়ারি আদালতে হাজির না হলে গোলাম আযমকে গ্রেপ্তার

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ জামাতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ১১ জানুয়ারি আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে উল্লেখিত তারিখে হাজির না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলে জানান আদালত।

সোমবার সকালে ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে আসামিপক্ষের (গোলাম আযম) কৌঁসুলিদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে আরো বলেন, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অপরাধের (প্রাইমা ফেসি) প্রামাণাদি (ম্যাটেরিয়ালস অব ওফেনস) পাওয়া গেছে। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগ আমলে নেয়ার আগে তার মামলা বাতিল চেয়ে করা আবেদনের শুনানি করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। তবে সেটি প্রি-ম্যাচিউর আখ্যা দিয়ে আবেদন খারিজ করে দেন। কয়েকদিন আগে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী ৬২টি অভিযোগ আনা হয়। ৬২টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হানাদার বাহিনীকে সহায়তা ও তাদের সঙ্গে চক্রান্ত করার জন্য ৬টি, তাদের সঙ্গে পরিকল্পনার ৩টি, উস্কানি দেয়ার ২৮টি, তাদের সঙ্গে স¤পৃক্ততার ২৪টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা ও নির্যাতনের একটি অভিযোগ। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত জানান, মুক্তিযুদ্ধের অনেক আগ থেকেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সঙ্গে গোলাম আযমের যোগাযোগ ছিলো। আর ওই অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরু হয়। অপারেশন সার্চলাইটের ৩ দিন পরই খাজা খয়েরুদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১৪০ সদস্যের শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। তিনি আরো জানান, তাদের দৈনন্দিন কাজ তদারকি করতে ৬ সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়। আর ওই কমিটির ২ নম্বরে ছিলো গোলাম আযমের নাম। রানা দাশগুপ্ত বলেন, জামাতের এ সাবেক নেতার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও মুজাহিদ বাহিনী গঠন করা হয়। এসব সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করা এবং এ বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে সুপারিশ করার দায়িত্ব গোলাম আযমই পালন করতেন বলেও জানান তিনি। রানা দাশগুপ্ত আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এক ঈদের দিন গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেল থেকে ৩৮ জনকে এনে কৈরতলা এলাকায় হত্যা করা হয়। গোলাম আযম এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থা গত ৩১ অক্টোবর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন এবং আনুষঙ্গিক নথিপত্র রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের কাছে জমা দেন। ১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউটরের কাছে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ৩৬০ পৃষ্ঠার এ তদন্ত প্রতিবেদনে মোট ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনটির সঙ্গে ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
খবর: আজকের বাংলা