হারিয়ে যাচ্ছে পল্লী গাঁয়ের ঝোঁপঝাঁড়ের চিরচেনা রসালো ফল

প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, আগেকার সময়ে বর্ষা মৌসুমে কিংবা অন্য যেকোন মৌসুমে গ্রামের জনপদের বিরল এলাকায় এসব ফলের প্রচুর দেখা মিললেও নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে এসব রসালো ফলের গাছ এখন আর তেমন চোখে পরে না। তারপরেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম থেকে নৌকাযোগে ব্যবসায়ীরা কিছু মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে ঢাকা, বরিশাল খুলনা ও যশোরসহ বিভিন্ন শহরে পাঠাচ্ছেন।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের কৃষক নেছার উদ্দিন কৃষি কাজের পর বছরের ২/৩ মাস এই ফলের ব্যবসায় নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি এই ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। উপজেলার সরিকল, হোসনাবাদ, খাঞ্জাপুর, মিয়ারচর, আগৈলঝাড়ার বাগধা, আমবৌলা, বানারীপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তিনি নৌকাযোগে ফল সংগ্রহ করেন। সংগ্রহের পর ফলগুলো পরিস্কার পরিপাটি করে তিনি ঢাকা ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। নেছার উদ্দিন জানান, বাজারে ঝোঁপঝাড়ের এসব ফলের চাহিদা থাকা সত্বেও ফলের আবাদ কমে যাওয়ায় এখন আর ব্যবসা ভালো চলে না।
গৌরনদী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুধু উল্লেখিত ফলগুলোই নয় আমড়া, জলপাই, বাতাবী লেবু, লটকন, গোলাপজাম, আতা, শরিফা, তাল, কাঠবাদামসহ অধিকাংশ ফল আজ হারিয়ে গেছে। ২০০৭ সালে সর্বশেষ এ ধরনের একটি ফলের তালিকা তৈরি করা হয়েছিলো। তারপর এ ধরনের গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ও তথ্য না পাওয়ায় তারা এ ধরনের তালিকা তৈরি বন্ধ করে দিয়েছেন। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, দেশীয় ফলের গাছগুলো অধিকাংশই মালিকানাধীন। বর্তমানে আধুনিকতার যুগে অপ্রয়োজনীয় ও অলাভজনক মনে করে গাছের মালিকরা ঝোঁপঝাড়ের এসব গাছ কেটে বিক্রি করে দেয়ায় ক্রমেই পল্লী গাঁয়ের চিরচেনা এসব ফলগাছ আজ হারিয়ে যাচ্ছে।