গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের চিকিৎসকরা প্রাকটিজে থাকেন ব্যস্ত রোগীদের চরম ভোগান্তি

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে প্রতি রবিবার লাইগ্রেশন (বন্ধকি করন) ক্যাম্প বসানো হয়। ওইদিন গৌরনদীসহ পাশ্ববর্তী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার নারীরা কল্যান কেন্দ্রে আসেন। মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা হোসনাবাদ গ্রামের সোহেদা বেগম অভিযোগ করেন, সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সরকারি নিয়ম রয়েছে। সরকারের নিয়ম (নির্দেশ) না মেনে কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদ, অজ্ঞানকরন ডাঃ মোঃ মাহাবুবুর রহমান সেলিম কেন্দ্রে আগত রোগীদের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে কোয়াটারে ও বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে বসে প্রাকটিজ করছেন। কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদ গত রবিবার (৪ জুলাই) সকালে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে না এসে কোয়াটারে বসে দুপুর সোয়া ১২ টা পর্যন্ত প্রাইভেট প্রাকটিজ করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

এ সময় তিনিসহ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা প্রসূতি মা, লাইগ্রেশনসহ সাধারন শতাধিক রোগী ভিড় করেন। সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত রোগীরা অপেক্ষা করে ডাক্তার না পেয়ে চলে যায়।
উপজেলার টিকাসার গ্রামের সুমন সরদার জানান, গত ২ জুলাই সকালে তার ভাই রিপন সরদারের স্ত্রী মুন্নি বেগমের (২০) প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। রোগীর নর্মাল ডেলিভারী না হলে কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদ সিজার অপারেশনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। ডাঃ সামাদ বেলা ১১ টার দিকে কেন্দ্রের অজ্ঞানকরন ডাঃ মাহাবুবুর রহমান সেলিমকে মোবাইল ফোনে কেন্দ্রে আসতে বলেন। ওইসময় অজ্ঞানকরন ডাঃ সেলিম গৌরনদী শারমিন ক্লিনিকে প্রাইভেট প্রাকটিজ করে আসছিল। কেন্দ্রে না এসে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে প্রাইভেট প্রাকটিজ অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যায়। বিকেল ৫ টা গড়িয়ে গেলেও অজ্ঞানকরনের কারনে মুন্নির সিজার অপারেশন করা সম্ভব হয়নি। মুন্নির অবস্থা চরম অবনতি হলে তার আত্মীয়-স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে গৌরনদী শারমিন ক্লিনিক ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ডাঃ সেলিমকে ও ক্লিনিকের ম্যানেজার সমীর সরকারকে মারধর করে। খবর পেয়ে গৌরনদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

কর্তব্য ও দায়িত্ব অবহেলা, কোয়াটারে বসে প্রাকটিসের কথা অস্বীকার করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন, কোয়াটারে বসে ওইদিন (গত রবিবার) অফিসিয়াল কাগজপত্র ঠিক করার জন্য অফিসে আসতে দেরি হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উল্লেখিত বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।