ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে : আ’লীগ – প্রহসনের বিচার : বিএনপি

বরিশাল সংবাদদাতা ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। তবে ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা রায় নিয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তারা বলছেন শুধু জামায়াত-বিএনপি নয় আওয়ামী লীগেও যুদ্ধাপরাধী রয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনলেই দেশবাসির ট্রাইব্যুনালের প্রতি আস্থা জন্মাতো। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষনিক এক প্রতিক্রিয়ায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শওকত হোসেন হিরন বলেন, দেলুর ফাঁসির রায়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের তরুন প্রজন্মের বিজয় হয়েছে।

বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডঃ তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি বলেন, দেশের মানুষ ন্যায়-বিচার পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের এতটা দিন পরে হলেও আজ মানুষ তাদের প্রানের দাবী বাস্ত বায়ন দেখতে পারছে। এখন এরায় কার্যকর চায় জনগন। তিনি তরুন প্রজন্মকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ এমপি বলেন রায় ন্যায় সংগত হয়নি। তিনি সব দলের মধ্যে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি আগে আওয়ামী লীগের ঘরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার দাবী করেন। আওয়ামী লীগ ঘরের যুদ্ধাপরাধীদের আড়াল করে অন্যদের নিয়ে প্রহসনের বিচার শুরু করেছে । সব দলের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনলে ট্রাইব্যুনালের প্রতি জনগনের আস্থা জন্মাতো।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডঃ আফজালুল করিম বলেন, রায়ে জনতার বিজয় হয়েছে । ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত যে হত্যা, ধর্ষন ও লুটতরাজ করেছে এরায়ের মাধ্যমে তা আজ প্রমানিত হল। এর ফলে দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । বরিশালের বীরপ্রতিক মহিউদ্দিন মানিক বলেন, জনগনের আশার প্রতিফল এরায় । আমরা সরকারের কাছে সাঈদির ফাসি কার্যকর করার দাবী করছি।

যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দল্লাহ বলেন, জনগণ যে রায় প্রত্যাশা করেছিল এবং গত ২৩ দিন ধরে সারা দেশব্যাপী জনগণের আকাঙ্খা প্রকাশিত হয়েছিল, সেই ন্যায় বিচার জনগণ এ রায়ের মধ্যে পেয়েছে। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের সকলের ফাসির রায় ও তা দ্রুত কার্যকর এবং জামাতকে নিষিদ্ধ করার দাবী করেন। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেনের ফাঁিসর রায় ঘোষনায় নগরীতে তাৎক্ষনিক অনন্দ মিছিল বের করে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ। এছাড়া একাত্তরের মঞ্চের উদ্যোগে বিকেলে নগরীতে বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষের মাঝে মিস্টি বিতরন ও মিছিল বের করা হয়। তবে রায় ঘোষনার পর বরিশালে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি । সর্বত্র আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কবাস্থানে রয়েছে । 

এদিকে সাঈদীর বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে বরিশাল পশ্চিম জেলা শাখা শিবিরের উদ্যোগে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইলে সড়ক অবরোধ করা হয়। এসময় পুলিশ বাধা দিলে উভয় পক্ষে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। বরিশাল পশ্চিম জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আবদুর রশীদ জানান, পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ারসেলে তাদের ১২জন নেতাকর্মি আহত হয়েছেন। এরমধ্যে হাসান হাওলাদার নামে একজন শিবির নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। অপরদিকে উজিরপুর থানার ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, শিবির কর্মিদের ছত্রভঙ্গ করতে তারা বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।