জামায়াত-বিএনপির হরতাল-সহিংসতায় বরিশালে পন্য আমদানী রফতানী বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক-মহাসড়কে জামায়াত-শিবিরের সৃষ্ট নৈরাজ্যের প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। পাইকারী ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পাঠাতে আতঙ্কে ভুগছেন। আবার বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যও ঢুকতে পারছেনা বরিশালের বাজারে। পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভোক্তারা। তাদের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। ভোগ্যপণ্যের বাজার সহনীয় থাকলেও কাঁচাবাজারে দাম চড়াও হয়ে উঠেছে।

টানা হরতালে বরিশালের পাইকারী বাজার গুলোতে স্থবিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও আর্থিক লেনদেন অর্ধেকে নেমে এসেছে।এ অবস্থায় ব্যবসায়ী নেতা ও ভোক্তারা হরতালের বিকল্প কর্মসূচী দিতে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।বরিশালের পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, হরতালের সমর্থনে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়কপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছেন। আগে হরতালে নিত্যপণ্যবোঝাই পরিবহনের উপর খুব একটা হামলা হত না। কোথাও হয়ত কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর হত। এখন পণ্যবোঝাই গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই পণ্য পরিবহনে সবাই আতঙ্কে আছেন।বরিশাল মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, ‘হরতালের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। সড়কপথে পণ্যবোঝাই পরিবহনে ভাংচুর ও জ্বালিয়ে দেওয়ায় সারাদেশে পণ্য বিশেষ করে ইলিশ মাছ পাঠাতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে ভুগছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে হরতালের বিকল্প কর্মসূচী ঘোষণা করা উচিত।

দেশের বৃহৎ বরিশাল মৎস্য বন্দরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সহিংস রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে ইলিশ মাছসহ পন্য বেচাকেনা কমে গেছে। তবে বরিশালের বাজারে পর্যাপ্ত ভোগ্যপণ্য মজুত রয়েছে। তবে হরতালে ঝুঁকি নিয়ে গুদাম থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ আছে। বিষেশ করে বরিশাল থেকে দেশের বাইরে ও দেশের অভ্যান্তরে ইলিশ রপ্তানী বন্ধ থাকায় তারা বিপাকে পরেছেন । প্রতিদিন এ মোকাম থেকে কোটি টাকার ইলিশ মাছ রপ্তানী হয় । হরতালের কারনে তা বন্ধ রয়েছে ।

বরিশাল বড় বাজারের চালের মোকামের ব্যবস্থাপক আমির হোসেন বলেন,‘স্বাভাবিক সময়ে আমাদের এখানে গড়ে প্রায় ২ থেকে ৩ কোটি টাকার চাল কেনাবেচা হয়। কিন্তু হরতালে এই লেনদেনের পরিমাণ মাত্র ৫০ থেকে ৭০ লাখ টাকা টাকা। টানা তিনদিনের হরতালের রেশ পুরো সপ্তাহজুড়ে থাকবে।

বরিশালের কাঁচা বাজারের চিত্র : টানা তিনদিনের হরতালের প্রভাব পড়েছে কাঁচা বাজারে। এতে প্রায় প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বেড়েছে দুই থেকে দশ টাকা করে। আবার কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। বরিশাল বহুমুখী সিটি কাঁচা বাজারের এক আড়ত দোকানের মালিক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘হরতালের কারণে অধিকাংশ পণ্যের দাম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যাপ্ত পণ্য না আসায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তার দেওয়া তথ্যমতে, পাইকারী বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ১৬ টাকা করে। গত সপ্তাহেও দর ছিল ১২ থেকে ১৩ টাকা। মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ১৬-২০ টাকা দরে। গত সপ্তাহে দর ছিল ৮-১২ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা করে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিচ যথাক্রমে ১৪ ও ১৮টাকা করে।