ওসি ও এসআই’র ক্রসফায়ারের হুমকি – স্বেচ্ছায় কারাগারে গেলেন এক আসামি

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ জামিনে থেকেও বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন ও তার অনুগত দু’সাব-ইন্সপেক্টরের (এস.আই) ক্রসফায়ারের হুমকির মুখে জীবন বাঁচাতে আদালতে বিচারকের কাছে আকুতি জানিয়ে স্বেচ্ছায় কারাগারে গেছেন ডাকাতি মামলার এক আসামি। বুধবার জেলগেটে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেছেন নগরীর বিমানবন্দর থানার একটি ডাকাতি মামলার আসামি লিটন কারিকর।

অভিযোগে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ (মঙ্গলবার) সকালে মামলার ধার্য্য তারিখে তিনি আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। লিটন কারিকরের পক্ষে তার আইনজীবি আদালতে হাজিরা জমা দেন। মামলার জন্য লিটন কারিকর আদালতের বারান্দায় অপেক্ষা করতে থাকে। এসময় কোতয়ালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন আদালতের বারান্দা থেকেই তাকে আটক করে। পরবর্তীতে আইনজীবিদের চাঁপের মুখে ওসি আসামিকে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। লিটন সাংবাদিকদের কাছে আরো জানান, আইনজীবিদের কারনে গ্রেফতারে ব্যর্থ হয়ে ওসি শাখাওয়াত হোসেন ও তার অনুগত থানার এস.আই মহিউদ্দিন শেখ এবং এস.আই আসাদ তাকে প্রকাশ্যে ক্রসফায়ারের হুমকি প্রদর্শন করে। এ হুমকির পর জামিন পেয়েও প্রাণ বাঁচাতে তিনি কারাগারের যাওয়ার জন্য বিচারকের কাছে মৌখিক ভাবে আর্জি জানায়। পরবর্তীতে বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দীলিপ কুমার ভৌমিক আসামির আবেদন গ্রহন করে তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির জানান, নগরীর বিমানবন্দর থানার ধর্মাদী গ্রামের শাহজাহান তালুকদারের বাসায় ডাকাতির ঘটনায় বিচারাধীন মামলার জামিনে থাকা আসামি লিটন ধার্য্য তারিখে আদালতে হাজির হলে বিচারক তার জামিন বহাল রাখেন। পরে সে আদালত কক্ষের সামনে দাড়িঁয়ে ছিলো। এসময় কোতোয়ালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেনসহ কয়েকজন পুলিশ তাকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে আইনজীবীদের বাঁধার মুখে পুলিশ লিটনকে নিয়ে যেতে পারেনি।

ওসি শাখাওয়াত হোসেন ক্রসফায়ারের হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, লিটন ৪/৫টি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত। তাকে গ্রেফতার করার পর জানতে পারি সে আদালতে হাজিরা দিয়েছে, তখন তাকে রেখে আসা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি গিয়াসউদ্দিন কাবুল এবং প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি মজিবর রহমান জানান, ১০টি মামলার আসামি হলেও বিচারকের অনুমতি ছাড়া আদালত থেকে কোন আসামি গ্রেফতারের বিধান নেই।

উল্লেখ্য, ২০১১ সনের ১০ মে নগরীর ধর্মাদী এলাকায় শাহজাহান তালুকদারের বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১১মে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা বিমান বন্দর থানার এস.আই মানজেরুল হাসান আসামি লিটনসহ সাত জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট জমা দেন। ওই মামলায় লিটন ১২ মার্চ আদালতে হাজির হয়েছিলেন।