বাংলাদেশের ভেজাল পন্যে সয়লাব নিউইয়র্কের গ্রোসারী দোকান!

মতিউর রহমান লিটু, প্রবাসীবার্তাঃ বাংলাদেশ থেকে আমদানীকৃত ভেজাল পন্যে সয়লাব হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ গ্রোসারী দোকান। ব্রান্ড নেইমের চানাচুর থেকে আসছে ডিজেলের গন্ধ, হলুদের গুড়ায় পাওয়া যাচ্ছে ইটের গুড়া, খাঁটী সরিষার তেলের নামে আসছে ডালডা মিশ্রিত ঘ্রানহীন ভেজাল সরিষার তেল।

বর্তমান সরকারের উদাসীনতায় বাংলাদেশের খাদ্য রপ্তানী খাতে দূর্নীতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। গত বিএনপি সরকারের আমলে নেয়া খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রনের উদ্যোগ কিছুটা প্রশংসিত হলেও ১/১১ তত্যাবধায়ক সরকারের কঠোর পদক্ষেপে কিছুটা হলেও “ভেজাল” নিয়ন্ত্রন হয়েছিল বলে অধিকাংশ প্রবাসীরা মনে করেন। তবে বর্তমান সরকারের আমলে কোন নিয়মনীতি মানছেননা রফতানীকারক কোম্পানীগুলী। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অসাধু রফতানীকারক কোম্পানীগুলী দিনের পর দিন আমেরিকার বাজারে ভেজাল পন্য পাঠিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ থেকে আমদানীকৃত খাবার আমেরিকার এফডিএ কতৃক অনুমোদন বা ছাড়পত্র পেতে প্রতারনার সিল ব্যবহার করছেন প্রবাসী কিছু আমদানীকারক কোম্পানী। সম্প্রতি বেশ কিছু ক্রেতার অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রবাসীবার্তা কতৃপক্ষ এর সত্যতা খুজে পেয়েছেন।

“রাধুনী” ব্রান্ডের তৈরী খাটি সরিষার তেল গ্রাহকদের বাসায় সামান্য ঠান্ডা পেলেই বরফের মত শক্ত হয়ে যাচ্ছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন দোকান থেকে কেনা রাধুনী সরিষার তেল পর্যবেক্ষনে দেখা যায় বোতলের গায়ে আলাদা একটি স্টিকার লাগানো রয়েছে যেখানে স্পষ্ট বলা আছে “ফর এক্সটারনাল ইউজ অনলি” অর্থাৎ মজাদার আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা খেতে আমরা যে সরিষার তেল ব্যবহার করছি তা আসলে স্বাস্থের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর বলেই মনে হচ্ছে। যদি সততার সাথে ব্যবসা করবেন তাহলে খাবার পন্যে “এক্সটারনাল ইউজ অনলি” সিল কেন থাকবে?

আমেরিকার মত দেশে এমন মারাত্বক প্রতারনা সাধারন ক্রেতাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। কয়েক বছর আগে বিডি ফুডস কতৃক খাবার বাক্সে হিরোইন পাচার করে যুক্তরাজ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশী মালিকানাধীন কোম্পানীটি, সেই মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে। বিদেশের মাটিতে প্রবাসীরা দেশীয় খাবারের স্বাদ পেতে দেশীয় গ্রোসারী দোকানের স্বরনাপন্ন হয়ে থাকেন কিন্তু সহজ সরল ক্রেতাগন অধিকাংশ সময়ে প্রতাড়নার স্বীকার হয়ে দেশীয় তৈরী খাবারের প্রতি চাহিদা হাড়িয়ে ফেলছেন অনেকেই।

বিশ্বের প্রায় সব দেশে এখন বাংলাদেশীরা কর্মরত থাকায় আমেরিকা, ইউরোপ সহ বিশ্বের প্রায় সব দেশে বাড়ছে আমাদের খাদ্য রফতানী বাজার কিন্তু চলতি পথে সম্ভাবনাময় এই রফতানী ক্ষেত্রটি যাতে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে সঙ্কুচিত হয়ে না যায় সেক্ষেত্রে সরকারের আশু দৃষ্টি কামনা করছেন প্রবাসী সচেতন মহল!