রোমান্সে ভেসে যাওয়ার একগাদা টিপস্‌

তামিম আবদুল্লাহ ॥

আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে…
ড্রয়িং রুম, বুক সেলফ, ওয়ারড্রব কিংবা গ্যারেজ সাফসুতরো করতে পারেন। এসব কাজ করা কোনো ব্যাপার নয় যদি দুজন একসঙ্গে করা যায়। এক্সারসাইজ করতে পারেন। চলে যান কোনো সুইমিং ক্লাবে সাঁতার কাটতে কিংবা স্রেফ বৃষ্টিতে হাঁটাহাঁটি করেও উপভোগ করতে পারেন সময়। ম্যারাথন মুভি দেখতে বসে যান। আশপাশের ভিডিও শপ থেকে একগাদা মুভি আনুন, সেই সঙ্গে খাবার-দাবার। সারাটা দিন মুভি ক্রিটিক হিসেবেই কাটিয়ে দিন।

কোনো একটা আর্ট গ্যালারি ঘুরে আসুন। আপনার এলাকায় বা এর আশপাশে হচ্ছে এমন কোনো একজিবিশন ঘুরে দেখুন দুজন।

সময়কে পিছিয়ে নিন, ঘুরে আসুন মিউজিয়ামে। অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক জায়গা আছে যেগুলো কেবল দর্শনীয় হিসেবেই খ্যাত নয় বরং সেখানে ঘুরে কিছু শেখাও সম্ভব।

দুজনের স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটাতে পারেন। অনলাইনে মেমোরি টেস্টের বিভিন্ন প্রোগ্রাম থেকে। দিনজুড়ে দুজন দুজনার মনে রাখার ক্ষমতা যাচাই করতে পারেন।

নিজেদের আবিষ্কার করুন। বইয়ের দোকান কিংবা ইন্টারনেটে আজকাল অনেক ধরনের পারসোনাল প্রোফাইল টুলস পাওয়া যায় যেগুলো আপনাদের ব্যক্তিত্বের ধরন, আপনাদের আইকিউ অথবা আপনাদের রিলেশনশিপ স্টাইল খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।

কিছু তৈরি করতে পারেন। হতে পারে একটা টি-টেবিল, কোনো সেলফ, পটারি ডিশ, ফ্লাওয়ার ভাস, চেহারার ভাস্কর্য, ক্যান্ডল ইত্যাদি। ক্রাফট শপে গেলে এ ধরনের শত শত আইডিয়া পাবেন।

ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা দেখে আসতে পারেন, যদিও খেলাধুলা খুব একটা ধাতে সয় না আপনার তবু পরিবেশের একটা প্রভাব তো আছেই। যাওয়ার আগে পত্রিকার পাতায় ফিকশ্চার লিস্ট দেখে নিন।

সন্ধ্যাটা নিজেদের ব্যাপক পছন্দের আইটেম দিয়ে সাজান। টিভি প্রোগ্রামের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিন আর বিনোদনে ভরপুর একটা রাত তৈরি করুন।
মেঘের কোলে রোদ হেসেছে

বাদল গেছে টুঁটি…
দুজন মিলে হাঁটতে বেরুতে পারেন যে কোনো জায়গায়। হাইকিংয়ে বের হতে পারেন। হাইকিং হলো পায়ে হেঁটে দীর্ঘ পথ ভ্রমণ। আশপাশে কোনো পাহাড়ি পথ থাকলে দুজনে হাঁটা ধরুন, দেখুন ক্লান্ত হয়ে কে আগে বসে পড়ে।

অভ্যাস থাকলে সাইকেল রাইডিংয়েও বেরিয়ে পড়তে পারেন দুজনে। হাঁটার মতো সাইকেলও এনার্জেটিক ও চমৎকার। হাঁটা বা সাইকেল দুই ক্ষেত্রেই মানসিক চাঙ্গা ভাবের সঙ্গে সঙ্গে আপনার স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে।

বোট ভাড়া করতে পারেন। নৌকা বাইতে বাইতে নদী বা লেকের এলোমেলো হাওয়ায় চুল উড়িয়ে একটা রোমান্টিক নৌকা ভ্রমণ সেরে ফেলতে পারেন। পার্কে ঘুরে আসুন। দোলনায় দোল খেয়ে সময় কাটাতে পারেন বা খেলতে পারেন টেনিস।

রিকশা করে ঘুরতে অনেকেরই পছন্দ। লম্বা খোলা রাস্তায় ঘণ্টা চুক্তিতে রিকশা ভাড়া করে বেরিয়ে পড়ুন অজানার উদ্দেশে।
গ্রামের বাড়িতে বেড়িয়ে আসুন। আপনার নিজের মায়ার বাঁধনে বাঁধা নিড়ে ফিরে কিছুটা প্রেরণা নিয়ে আসুন নিজের মধ্যে।

নিজেদের পশুসুলভ প্রবৃত্তিকে মেনে নিয়েই ঘুরে আসুন চিড়িয়াখানা বা কোনো বড় ফার্ম হাউসে। পার্কের এদিক-ওদিক ঘোরার সময় রিলাক্স থাকুন। আর মাকড়সা কিংবা সাপকে যদি আপনি অপছন্দ করেন তবে বানরের খাঁচার কাছে গিয়েও কাটাতে পারেন সময়।

পিকনিকের কথা ভুলবেন না। ওপরের আইডিয়াগুলোকে আরো আনন্দদায়ক করে তুলতে সঙ্গে মজার মজার খাবার নিতে ভুলবেন না কিন্তু।
সপ্তাহ শেষ, কী করা যায়

নিজের শহর থেকে বের হয়ে ঘুরে আসতে পারেন আশপাশের কোনো শহর বা গ্রামাঞ্চলে।

বেড়িয়ে আসতে পারেন আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধবের বাসায়। ভিন্ন অঞ্চলের মানুষজনদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। তারা যদি রাতে আপনাদের থাকার ব্যবস্থা না করতে পারে সে ক্ষেত্রে নিজেদের থাকা আর সকালের ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা নিজেরাই করুন।

কোনো হেলথ ক্লাবে নিজেদের পুরো সময়টা ব্যয় করতে পারেন।
আপনাদের বাসার যে কোনো একটি রুম বেছে নিয়ে সেটিকে ঢেলে সাজাতে পারেন।
পুরো বাসাটাকে একেবারে ঝেড়েমুছে ফেলুন কিংবা বাগানটিকে নতুন কোনো শেপ দিতে পারেন।

বাচ্চারা এখন বিছানায়…
খেলাধুলা করতে পারেন, হতে পারে সেটা ক্যারম, কম্পিউটার গেমস, কার্ডের গেমস বা কোনো দুষ্টুমি খেলা…
মাথা খাটানোর কাজে সময় কাটাতে পারেন, জিগস পাজল, ক্রস ওয়ার্ড বা কুইজ বুক। আপনাদের আইকিউর ধারটা কার কেমন সেটা পরখ করে দেখুন। নিজেদের মধ্যে কিছুটা বাড়তি প্রশ্রয় দিতে পারেন, আপনার পার্টনারকে হালকা ম্যাসাজ, ম্যানিকিউর বা প্যাডিকিউর দিন। আমাদের সবারই কিছু সময় বাড়তি প্রশ্রয়ের দরকার হয়।

আপনাদের রুচির সঙ্গে ম্যাচ করে কোনো ফিল্ম ভাড়া করে আনতে পারেন, হতে পারে সেটা কমেডি, কান্নাকাটি, রোমান্টিক বা হরর মুভি।
ইচ্ছামতো খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।

দুজনে মিলে রোমান্টিক একটা ডিনার উপভোগ করতে পারেন, মোমবাতিগুলো জ্বালান, হালকা মিউজিক ছেড়ে দিন, দামি ক্রোকারিজ বের করে ফেলুন। হাজার হোক সময়টাকে ভোগ করার একটা অজুহাত চাচ্ছেন আপনারা। বাগানে বা ছাদে বসেই পিকনিক সারতে পারেন।

সোফা বা ইজি চেয়ারগুলোকে টেনে বাইরে আনুন। দুই কাপ হট চকোলেট নিয়ে আরাম করে সময় কাটান দুজনে।
দুজনে মিলে একই বই বা গল্প পড়ুন, এরপর বইটি সম্পর্কে দুজনের নোট তুলনা করতে পারেন।

পুরনো ফটো অ্যালবামগুলো নিয়ে বসুন। রাতটা উপভোগ করতে পারেন নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। বা এর সঙ্গে নিজেদের আরো সম্পৃক্ত হতে চাইলে আপনাদের পোরট্রেইটগুলোকেই বেছে নিন না কেন?

দুজন মিলে নতুন কোনো রেসিপি তৈরির চেষ্টা করতে পারেন। জিভের গোড়ায় থাই, ইন্ডিয়ান, চায়নিজ যেটাই চান তার একটা স্বাদ দেয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
দুজনে মিলে ল্যাঙ্গুয়েজ প্র্যাকটিস করতে পারেন। বাংলা, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ যে কোনো ভাষাই হতে পারে সেটা।

ইন্টারনেট শপিং করতে পারেন। আর এটা দিয়ে দুজনেই কিন্তু পারেন দুজনকে সারপ্রাইজ দিতে। অনলাইনে জিনিসটা কিনুন তারপর অপেক্ষা করুন সেটা পৌঁছানোর জন্য।
দুজন মিলে একটা কবিতা বা গল্প লিখতে পারেন, নিজেদের মধ্যে সুরের মূর্ছনা অনুভব করলে লিখে ফেলতে পারেন একটা গানও।

বিকেলটা বাইরে কাটাতে চাইলে

  • থিয়েটারে চলে যান।
  • কিছুক্ষণ এক্সারসাইজ করুন। যেতে পারেন জিমে কিংবা সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে অথবা ব্যাডমিন্টন বা স্কোয়াশ খেলতে পারেন।
  • আজকাল আশপাশে অনেক বোলিং ক্লাব হয়েছে। যোগ দিতে পারেন আপনার কাছাকাছি কোনো বোলিং ক্লাবে।
  • শহরের কোথাও কনসার্ট হচ্ছে কি? কিংবা গজলের আসর? ভিন্নধারা কিছু উপভোগ করতে বেরিয়ে পড়ুন দুজনে।
  • আলসেমিতে ভরা একটা ডিনার সারতে পারেন। এটা হতে পারে কম দামি ও আনন্দদায়ক কিংবা গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে। বাধাহীন কথোপকথনের এ সুযোগ উপভোগ করুন।
  • চলে যান সিনেমা হলে। পেছনের সারির সিট দখল করে সামপ্রতিক কোনো ব্লক বাস্টার মুভি উপভোগ করুন। দেখুন আপনার এলাকায় কী মুভি চলছে।

হাতে সময় মাত্র এক ঘণ্টা
কথার বদলে বালিশ দিয়েই একটা ফাইট হয়ে যাক। আরো ভালোবাসার জন্য কাতর হয়ে পড়েছে মন? নিজেদের মধ্যে খানিকটা ভালোবাসার স্পর্শ হলে মন্দ কি?
সাবানের ফেনায় ভরপুর একটা গোসল সেরে ফেলুন।

সকালের নাশতা হোক আর যাই হোক, বিছানাতেই সেটা সেরে ফেলুন। হাতে যখন সময় কম, তাহলে প্ল্যান করে ফেলুন, পুরো বিকেলটা যখন পাবেন নিজেদের হাতের মুঠোয় কী করবেন।
আপনাদের পারিবারিক বংশধারা নিয়ে গবেষণা শুরু করতে পারেন, এরপর ঘণ্টাখানেক সময় হাতে পেলেই তাতে নতুন করে কিছু আইটেম যোগ করুন। একটা কেক বা এমন কিছু তৈরি করুন যা দুজন মিলে একসঙ্গে খেতে ভালো লাগবে।

কোনো ফিটনেস ভিডিও চালিয়ে দিয়ে দুজনে অ্যারোবিকস, পাইলেটস বা যোগব্যায়াম প্র্যাকটিস করতে পারেন।
অনলাইন কুইজ সেরে ফেলতে পারেন এক ঘণ্টায়।

রোমান্টিক ভঙ্গি
বলুন, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আই লাভ ইউ। একবার আলিঙ্গনে বাঁধুন নিজেদের। ভালোবাসার একটা নোট ছেড়ে যেতে পারেন ব্রিফকেসের ওপর বা টিভি স্ক্রিনে। কিংবা রেডিওতে লাভসং রিকোয়েস্ট করতে পারেন। একটি চুমো দিতে পারেন বা ভয়ংকর রকমের প্রণয়-চাপল্যও প্রকাশ করতে পারেন। ফুল দিন। যোগাযোগ রাখুন। যখন দুজনে আলাদা আছেন মেসেজ, ই-মেইল কিংবা ফোনে তার খবর নিন। লিপস্টিক দিয়ে আয়না বা অন্ধকারে ভেসে থাকে এমন চক দিয়ে দেয়ালে লিখতে পারেন- আই লাভ ইউ।