মানসিক চাপ কমানোর ১০ টিপস্‌

সুয়াইব আল বাকার ॥ ব্যস্ততার জীবনটাতে কত তুচ্ছ বিষয় যে বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে সেটা আর তাদের বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন হয় না। এ বিরক্তিও সৃষ্টি করে মানসিক চাপ। তবে চাপ যেভাবেই আসুক না কেন সেটা নিয়ন্ত্রণে আনাটা বেশ জরুরি। মানসিক চাপ কমাতে আজ আপনার জন্য রইল ১০টি কৌশল।

১.    মানসিক চাপের যত উৎস আছে সেগুলো খুঁজে বের করুন আর সমাধান করে নিন। যদি ভিড়টা আপনার কাছে বড় বিরক্তি লাগে তবে বাজার করতে খোলা বাজারে না গিয়ে সুপার মার্কেটে যান বা লোকাল গাড়ির ঠেলাঠেলি ছেড়ে সিটিং গাড়িতে যাতায়াত করুন। এসবে অন্তত ভিড়টা কিছু কম হবে। আসতে-যেতে যেসব বস্তু আপনার বিরক্তির কারণ সেগুলোকে এড়িয়ে চলুন।

২.    যদি অবস্থাটা এমন যে কাজে দেরি হওয়াটা যেন শনি গ্রহের মতো লেগে গেছে আপনার সঙ্গে। তবে একখণ্ড কাগজ আর একটা কলম হাতে নিয়ে বসুন। হিসাব করে দেখুন সারা দিন কত সময় আপনি কোন কাজে দিচ্ছেন। কাজে বের হতে কি দেরি করছেন? সব কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিয়ে দেখুন। যদি এমন হয় যে, কিছু কাজের জন্য ঠিক পরিমাণ সময় পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে আপনি সত্যিই অনেক বেশি কাজ করছেন। এ রকম হলে কিছু কাজ কমিয়ে নেয়াটাই ভালো হবে।

৩.    বাজি ধরে খেলার মানসিকতা ঝেড়ে ফেলুন। এতে অনেক সময় বাড়তি মানসিক চাপ এসে পড়ে। তাই কেউ বাজিতে খেলতে এলে সরাসরি তাকে নাকচ করুন। বিশেষ করে যে খেলায় আপনি জানেন যে নিজে হেরে যাবেন সেখানে ভুলেও বাজি ধরতে যাবেন না।

৪.    মানসিক যন্ত্রণাটা কিছুতেই না কমলে ঘুমাতে চেষ্টা করুন। নীরব কিছু সময় হয়তো আপনার সমস্যাটাকে সহজভাবে চিন্তা করার সুযোগ করে দেবে। আর যেসব মানুষ আপনার মানসিক চাপটা বাড়াতে পারে তাদের এড়িয়ে চলুন। কোনো বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে যদি আপনার খুব ভালো আন্তরিকতা না থাকে অথচ কিছু সময় আপনাকে বাধ্য হয়ে তার সঙ্গে কাটাতে হয়, তবে এমন সময় চেষ্টা করুন অন্য কাউকে আপনাদের পাশে রাখতে। এতে তার সঙ্গে কোনো রকম সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৫.    অন্যরা আপনাকে অনুপ্রাণিত করে প্রতিযোগিতায়। আপনি আরো প্রবলভাবে প্রতিপক্ষকে হারাতে চান। শুরু হয় আপনার মনের ওপর চাপ। হারলেও এ চাপ স্থায়ী হয়। অন্যরা যত সহজ কথা বলে আপনার ওপর মানসিক চাপ চাপিয়ে দেয় কাজটা তত সহজ নাও হতে পারে। তাই অযথা মানসিক চাপ নেবেন না। কারো প্রতি ঈর্ষা করার অর্থ নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনা।

৬.    নিত্যদিন যেসব উপকরণ ব্যবহার করতে হয় তা ব্যবহারে একটু সচেতন হতে হবে। কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা অন্য কিছু আপনার প্রতিদিনের কাজগুলোকে আরো সহজ করে তোলে। তবে এর ব্যতিক্রমও হতে পারে। তাই কোনো উপকরণ কেনার আগে নিশ্চিত হন সেটি আসলেই আপনার জীবনকে সহজ করছে কি না। মনে রাখবেন, জিনিসপত্রের যত্ন নেয়া অথবা নষ্ট হলে তা সারানোর জন্য ছোটাছুটি কিন্তু অনেক সময় বড় বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সৃষ্টি হয় মানসিক চাপের।

৭.    যত যাই হোক চেষ্টা করবেন একসঙ্গে একের বেশি কাজ যেন করতে না হয়। যেমন যখন পড়াশোনা করছেন সে সময় গান না শোনাটাই ভালো।

৮. মাঝেমধ্যে নিজেকে বোঝান যে এখন কোনো কাজ না করাটাই ঠিক। তাতে অন্তত কিছু সময় মানসিক প্রশান্তি পাবেন। এতে অনেকাংশে মানসিক চাপ লাঘব হবে।

৯.    নিদ্রাহীনতা, মাথাব্যথা, সর্দি, পেট ব্যথায় আপনি বিধ্বস্ত। তবে এত কিছুর পরও মনে রাখবেন, যদি মানসিক চাপটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারেন তবে শারীরিক এ অসুস্থতাগুলো বেড়ে দ্বিগুণও হয়ে যেতে পারে।

১০. অস্থিরতা যদি বাড়তে থাকে, মানসিক চাপ যদি আঁকড়ে ধরে তবে শুধু শুধু নিজের সঙ্গে না লড়ে কোনো ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।