বাথরুমে আটকে শাস্তি দিয়েছে শিক্ষক – অভিমানে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ ক্লাশে পড়া না পারায় স্কুলের বাথরুমে আটকিয়ে শাস্তি দেয়ার অভিমান সইতে না পেরে গতকাল বুধবার বিকেলে এক স্কুল ছাত্র গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মেদাকুল গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের এস্কান্দার সরদারের ছোট পুত্র ও মেদাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র নাঈম সরদার (৯)। নাঈমের সহপাঠী নয়ন ও সাগর আহম্মেদ জানান, মঙ্গলবার তাদের স্কুলের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম লালন বাংলা ক্লাশের সময় নাঈমসহ তারা দু’জনে পড়া না পারায় তাদের স্কুলের বাথরুমে আটক করে রাখে। তাদের ডাকচিৎকারে অন্যান্য শিক্ষকেরা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। এসময় ওই শিক্ষক (রফিকুল ইসলাম লালন) তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামিকাল (আজ বুধবার) পড়া না পাড়লে তোদের আরো কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। এ ঘটনার পর তাদের অন্যান্য সহপাঠীরা উপহাস করে।

নাঈম সরদারের দাদা রহমান সরদার বলেন, বুধবার সকালে নাঈম স্কুলে যাবেনা বলে পরিবারকে জানায়। এতে তার বাবা-মা তাকে বকুনি দেয়। বকুনি খেয়ে দুপুর একটার দিকে নাঈম পড়ার ঘরের আড়ার সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

নাঈমের মা মিনারা বেগম ঝুলন্ত অবস্থায় তার ছেলে নাঈমকে দেখে ডাকচিৎকার শুরু করে। এসময় প্রতিবেশীরা মুর্মুর্ষ অবস্থায় নাঈমকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী কালকিনি উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমকে মৃত্যু বলে ঘোষনা করেন।

খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আকন সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিক্ষক রফিকুল ইসলাম লালন ৩/৪ জন ছাত্রকে পড়া না পাড়ার জন্য বাথরুমে রেখে শাস্তি দিয়েছে বলে শুনেছি। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম লালন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরঙ্গ কুমার মিত্র এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। গৌরনদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাথরুমে আটকে শাস্তি দিয়েছে শিক্ষক - অভিমানে স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা