চার’শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী চাঁদশী মেলা শুরু আগামীকাল

মণীষ চন্দ্র বিশ্বাস ॥  চার’শ বছরের পুরনো বরিশালের উত্তর জনপদের সর্ববৃহৎ তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী মেলা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে। এ উপলক্ষ্যে গত এক সপ্তাহ পূর্ব থেকেই মেলার সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। মেলাস্থলসহ প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন পন্য সামগ্রীর সহস্রাধিক ষ্টল বসেছে।

তবে নানাপ্রতিকুলতার কারনে এ বছরও হচ্ছেনা চাঁদশী মেলার প্রধান আকর্ষন পুতুল নাচ। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলার প্রধান আকর্ষন পুতুল নাচ না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পঞ্জিকামতে প্রতিবছরের ৯ বৈশাখ শীতলা দেবীর পূজা উপলক্ষে চাঁদশীর শীতলা মন্দিরের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে ঘিরে ওই এলাকায় এখন উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মেলায় আগত দশনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাদা পোষাকে পুলিশ সদস্যরা মেলার আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চাঁদশীর শীতলা মন্দিরের চারিপার্শ্বসহ পাশ্ববর্তী প্রায় তিনকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন পন্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে বিক্রেতারা। তবে মেলার বিশেষস্থান দখল করে আছে কাঠের তৈরি নজরকাড়া বাহারি ব্যবহারিক জিনিসপত্র। উঠেছে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা সামগ্রীসহ অসংখ্য মালামাল। মেলার আরেক প্রধান আকর্ষন নাগরদোলাতো রয়েছেই। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক ভর্তি করে আনা হয়েছে কাঠের তৈরি নজরকাড়া বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্র। চাঁদশী শিতলা মন্দির কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কান্ত দে জানান, স্থানীয় ভগিরাত ঠাকুর প্রায় চার’শ বছর পূর্বে শীতলা মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সেই থেকে তাদের বাড়ির নাম হয় শীতলা বাড়ি। কারো কারো কাছে টিকা বাড়ি ও ভগিরত ঠাকুরের বাড়ি নামেও এ বাড়িটি পরিচিত। তিনি আরো জানান, যেকোন লোক রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে শীতলা দেবীর মন্দিরে মানত করে আরোগ্য লাভ করে থাকেন। বাৎসরিক পূজা ও মেলা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মন্দিরের হাজার-হাজার ভক্তের সমাগম ঘটবে। এছাড়া বাৎসরিক পূজা উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী নানা কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে পূজা অর্চনা, ধর্মীয় আলোচনা, ধর্মীয় সংগীত ও প্রসাদ বিতরন।