গৌরনদীতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে ইউপি সদস্যর ব্রিজ নির্মাণ

বিশ্বজিত সরকার বিপ্লব ॥  বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কবির হাওলাদার অসংখ্যবার সরকারি তহবিল চেয়েও না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকার ব্রিজ নির্মানের কাজ শুরু করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বার্থী, বাগিশেরপাড়, ডুমুরিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম সমরসিংহ, সালতা, মেদাকুল ও পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সুতারবাড়ি, গোয়াইল, ভালুকশী গ্রামের প্রায় ৩০ সহস্রাধিক লোকের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম পশ্চিম বার্থী ভায়া ডুমুরিয়া-সমরসিংহ সড়ক। উপজেলার পশ্চিম বার্থী ৭৫ ফুট ব্রিজ থেকে সমরসিংহ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার ডুমুরিয়া গ্রামের গোবিন্দর ভাঙ্গা নামকস্থানে ১৯৯৬ সনে এলজিইডির অর্থায়নে একটি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৮ সনের বন্যায় পানির তোড়ে ওই আয়রন ব্রিজটি বিধ্বস্ত হয়ে পরে। ২০০৪ সনে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রমিক দিয়ে বিধ্বস্ত ব্রিজের লোহার এ্যাঙ্গেল ও ভীম খুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জনদুর্ভোগ লাঘবের জন্য সেই থেকে স্থানীয় কবির হাওলাদারের উদ্যোগে প্রতিবছর ৫ সহস্রাধিক টাকা ব্যয়ে ওইস্থানে বাঁশের সাঁকো নিমার্ণ করে দেয়া হতো। আর এ বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষ। দীর্ঘদিনেও জনগুরুত্বপূর্ণ ওইস্থানে আর ব্রিজ নির্মানের উদ্যোগ নেয়নি এলজিইডি বিভাগ। পরবর্তীতে ওইস্থানে ব্রিজ নির্মানের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য কবির হাওলাদার সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও সহ সংশি¬ষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে অসংখ্যবার ধর্না দিয়েও ব্যর্থ হন। অবশেষে সরকারি তহবিল না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ইউপি সদস্য কবির হাওলাদার তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির মধ্য থেকে ৪০ শতক জমি সৌদি প্রবাসী আল-আমিন হাওলাদার ও মোকছেদ হাওলাদারের কাছে ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। ওই অর্থদিয়ে গত ১৫ মার্চ থেকে জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্রিজ নির্মানের কাজ শুরু করা হয়।

ক্ষোভের সাথে ইউপি সদস্য কবির হাওলাদার বলেন, জনগুরুতপূর্ণ এ ব্রিজটি নির্মান করা হলে যাদের কাছে সরকারি অর্থ চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি তাদেরকেই ব্রিজটি উদ্বোধনের জন্য আনা হবে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শাহ্ আলম খান বলেন, আমাদের নামেমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যানের খেতাব দিয়ে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে রাখা হয়েছে। বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস বলেন, এ মহৎ কাজের জন্য কবিরকে সাদুবাদ জানাই। সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজের পাশাপাশি বিত্তবানদের এভাবে এলাকার উন্নয়ন কাজে এগিয়ে আসা উচিত।