প্রকাশকের কিছু কথা : বোধদয় হবে কবে?

ফাহিম মুরশেদ ॥  আসলে এই বিল্ডিংগুলো আমরাই বানাই, আমরা ২ নাম্বারি করি, আমরাই চুরি করি, আমরাই আইন ভঙ্গ করি, আমরাই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে সার্টিফিকেট দেই, ড্রাইভিং লাইসেন্স দেই, সরকারী ঔষধ থাকা সত্বেও দোকান থেকে কিনতে বাধ্য করি, আমরাই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেই, সো গাইজ, সামনে এরচেয়েও ভয়াবহ এক্সিডেন্ট ঘটবে এবং ঘটে যাচ্ছে, আমাদের উচিত নিজেদের সংশোধন করা।

আমাদের রুট লেভেলই ঠিক নাই। আর উপরে যারা আছেন তাদের দুর্নীতি, চুরি চামারিকে রুট লেভেলের যারা আছে তারাই প্রশ্রয় দিয়েছে বিধায় আজ এরকম ও পিছনেও অনেক এক্সিডেন্ট ঘটেছে ও ঘটবে…. এরকম বহু এক্সিডেন্ট ঘটবে আর ফেসবুক টাইমলাইন সহ খবরের পাতায় ভরিয়ে ফেলবে সাহায্য সহযোগিতার জন্য, রক্তের জন্য…..

কেন? আমরা আগে থেকে যদি সচেতন না হই তাহলে এরকম কি হতো?

আর আমাদের সবচে বড় সমস্যা আমরা হলাম দর্শক জাতি, ঘরের সব কাজ রেখে ঘরের গৃহবধু থেকে শুরু করে বাসার সবাই যেমন হা করে ষ্টার জলসা দেখে, আবার যেমন হা করে যেমন সার্কাস দেখে তেমনি আমরা কারো দুর্নীতি, চুরি ও অন্যায় হা করে দেখি কিন্তু প্রতিবাদ করি না। আমাদের সামনে বসে মানুষ কুপিয়ে, পিটিয়ে, মাথা থেতলে হত্যা করে উল্লাস করে চলে যায়, আমরা কিছু বলি না, আমাদের তখনই গায়ে যখন নিজের আপন কারো কিছু যদি হয় তখন আজান দিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়, কিন্তু আপনার আমার সামনে বসে যাকে পিটানো হচ্ছে, কোপানো হচ্ছে, কারো মাল নিয়ে চলে যাচ্ছে, কারো মেয়েকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, কারো সম্পদ চুরি করছে, দেশের মূল্যবান সম্পদ চুরি করছে তখন কিছু বলি না, তখন আমরা দর্শক। আমরা মনে করি আমাদের ঠ্যাকা পড়ছে নাকি! কিন্তু এরকম বিপদে যখন আপনিও পরবেন তখন? আসলে আমরা মানুষকে উপরে উপরে ভালবাসি, লোক দেখানো ভালবাসার খুব প্রচলন কিন্তু মন থেকে ভালবাসার বড়ই অভাব। অচেনা অজানা মানুষগুলোর বিপদে যত দ্রুত পারা যায় সাহায্যে এগিয়ে আসা, কারন কোনো একদিন আপনিও একই ধরনের বিপদে পড়লে দেখবেন অনেকেই এগিয়ে এসেছে। তখন আর নিজেকে একা মনে হবে না।

যতদিন প্রতিবাদী না হবে ঠিক ততদিন এরকম ঘটতেই থাকবে…. ইউনিটি চাই… কেউ ইট, বালি, রড, সিমেন্টে দুর্নীতি করলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়া, কেউ খারাপ কিছু করলেই তার প্রতিবাদ করা, কেউ অন্যায়-অত্যাচার করলে তার প্রতিবাদ করা।

সাভারের গার্মেন্টস, চট্টগ্রামের উড়াল সেতু, গার্মেন্টেসে আগুনে পুরে মৃত্যু, ট্রাক এক্সিডেন্টে ৪০জনের বেশি নিস্পাপ বাচ্চাদের মৃত্যু, সাগরে জেলেদের হত্যা করা এসবের জন্য আমরাই দায়ী!

আপনি আমি যেই হই না কেন এসবের জন্য আজ আমরাই দায়ী! এইসব দুর্ঘটনাকে কোনভাবেই অনাকাঙ্খিত বলে এড়ানো যাবে না, কোনভাবেই এই দায় থেকে মুক্তি নেই!