ন্যায্যমজুরী থেকে বঞ্চিত নারী শ্রমিকেরা

প্রেমানন্দ ঘরামী ॥  আগামীকাল বুধবার মহান মে দিবস। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিন। প্রতিবছর শ্রমিকদের নায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা বললেও আসলে পরবর্তীতে তার কিছুই করা হচ্ছেনা। আজো ন্যায্য মজুরী প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার নারী শ্রমিকেরা।

এ উপজেলার নারী শ্রমিকেরা ঘরের কাজের গন্ডি থেকে বেরিয়ে হাতে হাতুড়ি, মাথায় ঝুঁড়ি, কাঁধে কলসি নিয়ে অভাব অনটন ক্ষুধা আর দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সকাল-সন্ধ্যা কাজ করে চলেছেন। ইট-পাথর ভাঙ্গা, মাটি কাটা, সিমেন্ট বালু মিশ্রন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, জমিতে দিনমজুরী, চা-মিষ্টির দোকানে পানি টানা, কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার নারী শ্রমিকেরা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উপজেলা সদরের বিধবা মায়া রানী জানান, বাজারে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকানে দোকানে পানি টানার কাজ করে প্রতিদিন সে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা আয় করেন। প্রতি কলস পানিতে তাকে এক টাকা করে মজুরি দেয়া হয়। জীবন বাঁচানোর তাগিদে এবং বাচ্চাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য তিনি নায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েও পানি টানার কাজ ছাড়েননি। ইট-পাথর ভাঙ্গা মহিলা শ্রমিকেরা জানান, ঠিকাদাররা ইট-পাথর ভাঙ্গার জন্য তাদের প্রতিফুট হিসেবে টাকা দেয়। এতে তারা প্রতিদিন গড়ে ৯০ থেকে ১’শ টাকা পেয়ে থাকেন।

এ স্বল্প আয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পরেছে। স্থানীয় একাধিক এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী শ্রমিকেরা জানান, তারা সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করলেও তাদের প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ টাকার বেশি দেয়া হয়না। নারী শ্রমিকেরা তাদের ন্যায্য মজুরী প্রাপ্তির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।