হেফাজত, ইসলামের শত্র“

বিশেষ সম্পাদকীয় ॥  হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ। ইসলামকে হেফাজত করার জন্যই শুধু এ দলের নিবন্ধন নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আজ তাদের আপত্তিকর কর্মকান্ড দেখে পুরো জাতি এ দলকে আখ্যা দিয়েছে হেফাজতে জামায়াত নামে। যারা পবিত্র কোরআন শরীফের দোকানে অগ্নিসংযোগ করে শত শত কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ফেলতে পারে তারা কেমন ইসলামী দল তা আজ বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের আবার উস্কানী দিচ্ছেন বিশেষ একটি দল, ছিঃ ছিঃ ছিঃ। আসলে হেফাজতসহ ওইসব বিশেষ দল মুখে ইসলামের কথা বললেও তারাই হচ্ছেন একমাত্র ইসলামের শত্র“। যারা পবিত্র কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ করতে পারে, তাদের নিঃসন্দেহে নাস্তিক বলাটা আমার বড় কোন অপরাধ হবে বলে মনে করিনা।

ইসলাম মানে শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে পরোপকার করা একটি বিশেষ কাজ। দেশে আজ যখন সাভার ট্র্যাজেডির মতো ভয়াবহ দূর্ঘটনায় প্রায় ছয়’শরও অধিক পরিবারে শোকের মাতম, আরো অসংখ্য পরিবার যখন তাদের স্বজনদের খোঁজে আজ পাগল হয়ে ঘুরে ফিরছে; বর্তমান সরকার যখন ওইসব পরিবারকে পূর্ণবাসনসহ দেশের ভাবমুর্তি উজ্জল করা গার্মেন্টস শিল্পের কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সর্বক্ষণ নিরাপত্তা দিতে ব্যাকুল, ঠিক তখনই এই শোকের মধ্যে এবং সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপকে নসাৎ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল। এছাড়াও দেশের মানুষ যখন জামায়াত-শিবিরকে প্রকাশ্যে ঘৃনা করে সকল কর্মকান্ড থেকে তাদের বয়কট করে অনতিবিলম্বে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের র্শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে আসছেন, এমনই সময় ওই বিশেষ রাজনৈতিক দলের ইশারায় সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে হেফাজতে ইসলামীর সাথে কৌশলে জামায়াত-শিবিরকে মাঠে নামানো হয়েছে।

যার জলন্ত প্রমান মিলেছে গত ৫ মে ঢাকার কয়েকটি রণক্ষেত্রের ঘটনায়। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সবখানেই উপেক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশ বাহীনির সদস্যদের ওপর হামলাকারীরা হেফাজতের লোক নাকি ওই বিশেষ দল ও জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার। তা দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে গেছে। ওইসব হামলাকারী ক্যাডারদের হাত থেকে রেহাই পায়নি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীসহ র‌্যাব ও বিজিবি’র সদস্যরাও। কি অপরাধ ছিলো গণমাধ্যম কর্মীদের। আর কি অপরাধইবা ছিলো ঢাকার ফুটপাতের খুচরা ব্যবসায়ীদের। কেনইবা তাদের পরিবারের সদস্যদের একমাত্র রুটি-রুজির পথ দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কেনইবা বন্ধ দোকানপাট, ব্যাংক ও সিপিবি’র অফিসে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, কি অপরাধ ছিলো ওইসব দোকান ও অফিস মালিকদের। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ পার্শ্বে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ইসলামের বই ও মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালা থেকে প্রেরিত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ওপর নাজিল হওয়া পবিত্র কোরআন শরীফ হাদিয়া মূল্যে সরবরাহ করা হতো। ওই দোকানীদের কি অপরাধ ছিলো, যে তাদের দোকানে অগ্নিসংযোগ করেছে হেফাজতে ইসলামী নামের সংগঠনের ক্যাডাররা। আর এ কারনে বিভিন্ন ইসলামী বইয়ের পাশাপাশি পুড়ে গেছে কয়েক’শ পবিত্র কোরআন শরীফ। যারা এ দোকানে অগ্নিসংযোগ করতে পারে, তারা আসলে কেমন ধরনের ইসলাম কায়েম করতে চায়, সেই প্রশ্নের উত্তর ছেড়ে দিলাম পাঠকের কাছে।

ওইসব ক্যাডারদের উস্কানী দিতেই আবার বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তত্বাবধায়ক ইস্যুর দাবি বাস্তবায়ন হলেই দেশের মধ্যে আর কোন সমস্যা থাকবেনা। এসবের অর্থই বা কি? তাহলে ১৩ দফা দাবি নিয়ে হেফাজতের ঢাকায় আসার কর্মসূচী পুরোপুরি যে নাটকীয় ঘটনা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারাই বা বিশ্ব দরবারে দেশের উন্নয়নে ঈশ্বানিত হয়ে ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে রণক্ষেত্রের সৃষ্টি করছে তা আজ দেশের শান্তি প্রিয় মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফা দাবীর মধ্যে নারী নিতীর কথা বলেছেন, আপনাদের এ দাবির প্রতি আমিও সমর্থন করি? কিন্তু কই আপনারা যে দলের উস্কানী পেয়ে খোঁদ সরকারকেই রাতের মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন, সেই উস্কানী দলের সভাপতিওতো একজন…? তিনি কি আপনাদের দাবি অনুযায়ী রাজনীতি করে, নাকি…? সেটা কি খতিয়ে দেখেছেন। আসলে আপনারা অনেক বড় আলেম ওলামা, আপনাদের অনেক ঘোরানি ফেরানি থাকতেই পারে। কিন্তু যেদিকেই ঘোরাননা কেন, ঘুরে ফিরে কেন জানি পাকিস্তানের দিকেই আপনাদের হৃদয়ের টান চলে যায়। এ কথা শুধু আমার একারই নয়; দেশের শান্তি প্রিয় সকল মানুষের মুখেই এই একটি কথাই শোনা যাচ্ছে। যতোই হৃদয়ের টান থাকুক না কেন; যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এ বাংলার মাটিতে হবেই হবে ইনশ্আল্লাহ।