গভীর রাতে গ্রাম্য শালিস বৈঠকের রায় – আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘু গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ২৫ হাজার টাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। শালিস বৈঠকে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য শাহজাহান সরদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, আবু বক্কর মুন্সি, রহমান সরদার, ধর্ষকের চাচা আলম তালুকদার, মনির হোসেনসহ ধর্ষিতা ও ধর্ষক মিজানুর রহমান। সালিশ বৈঠকে উপস্থিত সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল জানান, ধর্ষিতার জবানবন্দি দেয়ার পর ধর্ষক মিজানুর রহমান অকপটে তার দোষ স্বীকার করে। এক পর্যায়ে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্ষকের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ১’শ জুতাপেটার রায় সালিশ বৈঠকের সভাপতি শাহজাহান সরদার ঘোষনা করেন। জুতা পেটার রায় কার্যকর করেন ধর্ষকের চাচা আলম তালুকদার। জরিমানার টাকা আগামি ১ আগস্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ধর্ষিতা জানান, ধর্ষণের ঘটনায় সে আইনি সহায়তার জন্য একাধিকবার থানা পুলিশের দ্বারস্থ হতে চাইলেও ধর্ষকের লোকজনের বাঁধার মুখে সে থানায় যেতে পারিনি। ধষিতা বলেন, রবিবার বিকেলে আগৈলঝাড়া থানার এস.আই মাহবুব হোসেন আমার কাছ থেকে লিখিত জবানবন্দি নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি (মাহবুব) বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা বলেন। ধর্ষিতা আরো জানায়, রবিবার রাতে ওই মহলটি তাকে ও তার বাবাকে ডেকে নিয়ে প্রহসন মূলক সালিশ বৈঠকে বসে রাত একটার দিকে উল্লেখিত রায় ঘোষনা করে।
সালিশ বৈঠকের সভাপতি শাহজাহান সরদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মিজানুর রহমান অকপটে তার দোষ স্বীকার করায় বৈঠকের সবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অসহায় দিনমজুরকে কিছু নগদ অর্থ দেয়ার সিদ্ধান্ত ও মিজানুরকে ১’শ ঘা জুতাপেটা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বরিশাল পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্যর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনা কোন রকমই সালিশযোগ্য নয়। ধর্ষিতা বা তার নিকটাত্মীয় যে কেউ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ মামলা নেবে।