বিসিসি নির্বাচন : বরিশালে আসছেন নির্বাচন কমিশনার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ আগামী সপ্তাহের যেকোনদিন বরিশাল সফরে আসছেন। তিনি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনা ও বিধিমোতাবেক কার্যক্রম পরিচালনাসহ সার্বিক দিক সম্পর্কে নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থী, স্থানীয় প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন।

রিটানিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল থেকে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ খুলনায় যাবেন। সেখানেও অনুরুপ কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করবেন। নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ একসময় বরিশালে বিচারক হিসাবে কমর্রত ছিলেন। তাই এখানে তিনি একটু সময় বেশি ব্যয় করবেন। সরকারি সফরে আসা এ কর্মকর্তা তার স্মৃতি বিজরিত বরিশাল ঘুরে দেখবেন বলেও তার এক ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন।

তৃণমুল নেতাদের মান-অভিমান ভাঙ্গাতে হিরনের পক্ষে শীর্ষ নেতাদের বৈঠক

যেকোন সময় দলের পদ থেকে মাইনাস হতে পারেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। দলের সকল নেতা-কর্মীদের মান-অভিমান ভাঙ্গিয়ে ও মামুনকে মাইনাস করেই মহাজোট সমর্থিত সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের মেয়র প্রার্থী আলহাজ শওকত হোসেন হিরনের-টেলিভিশন মার্কার পক্ষে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঠে নামানোর জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল জেলা ও মহানগর আ’লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি ও বিশিষ্ট আ’লীগ নেতা সাইদুর রহমান রিন্টুর বাস ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীসহ নির্বাচন থেকে দূরে সরে থাকা দলের নিস্ক্রিয় করে রাখা নেতা-কর্মীদের নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অভিভাবকখ্যাত জেলা আ’লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আলহাজ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আ’লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন, জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস-এমপি, অগ্রনী ব্যাংকের পরিচালক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিনসহ জেলা ও মহানগর আ’লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এখানে আ’লীগে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও শওকত হোসেন হিরনের মধ্যে প্রকাশ্যে কোন বিরোধ না থাকলেও কর্মী-সমর্থকদের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে অঘোষিত দ্বন্ধ চলে আসছে। এ দ্বন্ধের জেরধরে ছাত্রলীগের মাঝে বিভাজন ছিল খুবই স্পষ্ট। পদ-পদবী ভোগকরা ছাত্রলীগ নেতারা বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী খান মামুনের পক্ষে প্রকাশ্যে কোন কাজ না করলেও দলের সমর্থিত প্রার্থী হিরনের পক্ষে তারা রিতিমতো অনুপস্থিত থাকে। প্রথম দফায় বিদ্রোহী প্রার্থী মামুনকে ম্যানেজ করতে দলের সকল পর্যায় থেকে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। তা ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি বিএনপির তিন প্রার্থীর ঐক্য আ’লীগের জন্য প্রেসটিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সকল মতভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দলের মনোনীত প্রার্থী হিরনের বিজয় নিশ্চিত করতেই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম খোকন, জেলা যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট ফজলুল করিম শাহীন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাত, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌছিক আহমেদ রাহাদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তারিক বিন ইসলাম, মিজানুর রহমান মিজান, সমর দাস প্রমুখ।

মেয়র প্রার্থী আলহাজ শওকত হোসেন হিরন জানান, আ’লীগের মতো একটি বিশাল দলের সকল নেতা-কর্মীকে কারো পক্ষেই সব সময় খুশি রাখা সম্ভব নয়। তবুও অতীতের ভুল ত্র“টি ক্ষমা করে আমি সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার অনুরোধ করছি। তিনি আরো জানান, আ’লীগের মেয়র হিসেবে আমি নগরীর উন্নয়ন করে নগরবাসীর মন জয় করেছি। এ গর্বের অংশ আমার একার নয়; সকল সফলতাই আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আর সকল ব্যর্থতাই শুধু আমার। ভবিষ্যতে সকলকে নিয়েই নগরীর উন্নয়ন কাজ আরো বেগবান করা হবে।

অপরদিকে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুন-দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি জানান, দলের পদ থেকে বহিস্কারের জন্য প্রস্তুত হয়েই বিজয়ী হওয়ার টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছি।

এদিকে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, এবায়দুল হক চাঁন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে বরিশাল সিটিতে তাদের বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। চার সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে বেগম খালেদা জিয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন দাবি করে সূত্রগুলো আরো জানিয়েছেন, দলের চেয়ারপার্সনের ন্যায় বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান সরোয়ারও বরিশালের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করেছেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা দিনরাত আসহান হাবিব কামালের-আনারস মার্কার সমর্থনে গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারনা অব্যাহত রেখেছেন। ইতোমধ্যে কামালের পক্ষে গণসংযোগ করে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুষ্ঠ নির্বাচন হলে কামাল বিজয়ী হবেন।