বরিশালে পাঁচদিনের ব্যবধানে তিনজনের যাবজ্জীবন সাজা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  বরিশালে গত পাঁচদিনের ব্যবধানে দুটি হত্যা ও একটি মাদক মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সাজা ও দুর্নীতির মামলায় এক সাবেক অধ্যক্ষকে ১৭ বছর কারাদন্ড দিয়েছে আদালতের বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, একটি গাবগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দাদি নুরজাহান বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় গত ৩০ মে নাতী জাকিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের রায় দেয়া হয়। আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম ছয়গ্রামের বাসিন্দা আক্কাস হাওলাদারের পুত্র ও আসামি জাকিরুল ইসলামের উপস্থিতিতে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হাবিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার বাদি ও নিহতের পুত্র অহিদুজ্জামান হাওলাদার জানান, ২০১১ সনের ২১ অক্টোবর তার বাবা আলী আলম হাওলাদার ও মা নুরজাহান বেগমকে কুপিয়ে জখম করে জাকিরুল। ওইদিন রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা মারা যায়।

অপরদিকে গত ২৯ মে বরিশালে মাদক মামলায় ইকরামুল ইসলাম নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলিপ কুমার ভৌমিক। দন্ডপ্রাপ্ত ইকরামুল ইসলাম যশোরের খড়িভাঙ্গা এলাকার মৃত ইসমাঈল হোসেন মোল্লার পুত্র। ২০১০ সনের ১১ জানুয়ারি নগরীর হাতেম আলী কলেজ এলাকা থেকে আড়াই লিটার তরল ফেনসিডিল ও ২০টি বোতলের কর্কসহ ইকরামুলকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা। এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় মাদক আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন র‌্যাব-৮ এর ডিএডি জমিন উদ্দিন।

এদিকে বরিশাল নগরীর পশ্চিম কাউনিয়া বাগানবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও  কাঁচামাল ব্যবসায়ী খালেক বিশ্বাস হত্যা মামলায় জামাল হোসেন মোল্লা নামের এক আসামিকে গত ২৬ মে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছর সশ্রম কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। বরিশাল অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক দিলিপ কুমার ভৌমিক এ দন্ডাদেশের রায় ঘোষণা করেন। মামলার বাদি ও নিহতের স্ত্রী সেতারা বেগম জানান, ২০০৩ সনের ৮ ডিসেম্বর বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে তার স্বামী খালেকের লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশি তদন্তে জামাল হোসেন মোল্লা অভিযুক্ত হয়।

অন্যদিকে কলেজ ফান্ড থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তাকুন নবীকে ১৭ বছর কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তাকে আরো ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫’শ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। গত ৩০ মে বরিশাল বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শরিফ উদ্দিন আজাদ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সনের ১৩ মে থেকে ২০০৭ সনের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন কালে দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৫’শ টাকা আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় ২০০৯ সনের ১৩ অক্টোবর মোস্তাকুন নবীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আহসান আলী।