আর্কাইভ

বিসিসি নির্বাচন : বরিশালে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় হেফাজত

হাসান মাহমুদ, বিশেষ প্রতিনিধি ॥  বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচনে এবার পর্দা ফাঁস করলেন সময়ের আলোচিত নামেমাত্র অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। নারী নীতির বিরোধিতা, ঢাকার মতিঝিলে অবরোধের নামে ব্যাপক সহিংসতা ও পবিত্র কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত হেফাজতে ইসলামের বরিশাল মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ ও কর্মী-সমর্থকেরা বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামালের-আনারস মার্কার পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করে হাতে হাত উঠিয়ে শপথ করেছেন।

সেমতে আজ শনিবার সকাল থেকে বিএনপির প্রার্থীর প্রচার-প্রচারনায়ও হেফাজতের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হচ্ছে। গণসংযোগে নেমেছেন হেফাজত কর্মীরা।

 
নগরীর আমানতগঞ্জ মাহমুদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও বরিশালের হেফাজতে ইসলামের আমীর মুফতী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুবের সাথে শুক্রবার বিকেলে সাক্ষাত করেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল ও তার নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্ময়কারী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান সরোয়ার-এমপি। এসময় হেফাজতের আমীরসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও কর্মী-সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন। মাদ্রাসার একটি কক্ষে বর্তমান সরকারকে ইসলাম বিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে তাদের ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধতার বৈঠক শেষে হেফাজতের আমীর ও দলের নেতৃবৃন্দরা মেয়র প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল ও বিএনপি দলীয় সাংসদ সরোয়ারের হাতে হাত রেখে নির্বাচনের মাঠে একত্রে কাজ করার অঙ্গিকার করেন। সেমতে আজ শনিবার সকাল থেকে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় হেফাজতের কর্মীরা কৌশলে আনারস মার্কার সমর্থনে গণসংযোগও শুরু করেছেন।

খবর নিয়ে জানা গেছে, এরপূর্বে গত বৃহস্পতিবার ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন আমানতগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ করতে গিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীরের সাথে তার মাদ্রাসায় সাক্ষাত করে ভোট ও সমর্থন চেয়েছেন। হেফাজের আমীর তাকে বলেছিলেন, মহানগরীর ব্যাপক উন্নয়নের বিষয়টিকে তারা বিবেচনায় নেবেন। এ ঘটনার মাত্র একদিন পর বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করে হাতে হাত উঠিয়ে শপথ করেন হেফাজতের আমীর ও তার সমর্থকেরা।

 

ক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবির

মহানগর জামায়াতের আমীর এ্যাডভোকেট মোয়ায্যেম হোসেন হেলালসহ জামায়াত-শিবিরের ৩০ জন শীর্ষ নেতা কারাগারে থাকা সত্বেও তাদের কোন প্রকার খোঁজ খবর না নেয়া এবং ১৮ দলের শরীক দল হিসেবে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন করে নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ঘটনায় ক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তুষের আগুন জ্বলছে। খোঁদ বরিশাল সদর আসনের বিএনপি দলীয় এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার ও মেয়র পদপ্রার্থী আহসান হাবিব কামালের ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ শনিবার থেকে নির্বাচনের মাঠে সম্পূর্ণ সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। দলের একাধিক নেতাদের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের একাধিক নেতারা জানান, এ মহানগরীতে জামায়াত-শিবিরের প্রায় ত্রিশ হাজার রিজার্ভ ভোট রয়েছে। অন্ত কোন্দলের কারনে ওই ভোটগুলো বিএনপির প্রার্থীর বাক্সে যাবেনা বলেও তারা উল্লেখ করেন।

 

 

মামুনকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার

আ’লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে মামুনকে বহিস্কারের কথা জানানো হয়। যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, দলীয় কোনো নেতা-কর্মী আর্থিক কিংবা অন্যকোনো ভাবে মামুনকে সহায়তা করলে তাকেও দল থেকে বহিস্কার করা হবে।

ইসির সংলাপ ১২ জুন

আগামী ১২ জুন বরিশালের তিন মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচনী সংলাপ ও বিতর্কের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সার্বিক তত্বাবধানে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বিবিসি যৌথভাবে এ বিতর্কের আয়োজন করছে। বুধবার বিটিভির রাত আটটার সংবাদের পর এক ঘণ্টা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে প্রার্থীদের এই বিতর্ক। আগামী ১৫ জুনের বিসিসি’র নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এরা হলেন-আ’লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল সমর্থিত, সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দল সমর্থিত জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক খান মামুন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রে আরো জানা গেছে, সংলাপে একমঞ্চে সকল মেয়র প্রার্থীরা ভোটারদের মুখোমুখী হবেন। পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন ভোটাররাও। তারা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার নাগরিক সুবিধা নিয়ে মেয়র প্রার্থীরা কি ভাবছেন, তা জানবেন এবং নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি আদায় করে নিবেন।

আরও পড়ুন

Back to top button