বরিশালের উন্নয়ন নাকি রাজনৈতিক পরিবর্তন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  বরিশালের ব্যাপক উন্নয়ন নাকি রাজনৈতিক পরিবর্তন? এমনই জটিল হিসেব-নিকেশে ব্যস্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি)’র ভোটাররা। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ শনিবার সকাল আটটায় শুরু হবে কাঙ্খিত সেই ভোট। নগরীর ভোটারদের মূল্যবান ভোটের মাধ্যমেই আগামী ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন নগর পিতা। তাই শেষ সময়ে ভোটাররা দেখছেন উন্নয়ন ও উন্নয়নের বিরোধী শক্তির মল্লযুদ্ধ। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে গিয়ে এবারের এ স্থানীয় সরকারের নিদর্লীয় নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের মতো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। তাই কেবল উন্নয়ন বা উন্নয়নের প্রতিশ্র“তি নয়; রাজনৈতিক মেরুকরণেই হবে ভবিষ্যত নগর পিতার ভাগ্য নির্ধারণ।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এ পর্যন্ত তিনজন মেয়র পেয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনই এবারের শক্তিশালী দু’জোটের সমর্থন নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। একজন সদ্য বিদায়ী মেয়র ১৪ দল সমর্থিক সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরন ও অপরজন সিটি কর্পোরেশনের প্রথম প্রশাসক বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী নাগরিক কমিটির প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল। বরিশালের অতীতের জরার্জীণ নগরী থেকে মুক্ত করতে সদ্য বিদায়ী মেয়র হিরণের ৪ বছর ৭ মাস ৩ দিনের ক্ষমতার আমলে পুরো নগরীকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল অপরূপ সাজে। বাংলাদেশের মধ্যে এমন কোন শহর আরেকটি আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নির্বাচন উপলক্ষে এখানে আগত পর্যবেক্ষকদের মধ্যে। রাস্তাঘাট পাড়া-মহল্লা, পার্ক নির্মান থেকে শুরু করে, প্রতিটি বস্তি এলাকাসহ পুরো নগরীতে প্রায় চার’শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়ে অকৃপনভাবেই। ফলশশ্র“তিতে বরিশাল আজ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, যানজটমুক্ত খোলামেলা বৃক্ষের নগরীতে পরিনত হয়েছে। রাতের বরিশালের চিত্র আরো অন্যরকম। সারা শহর জুড়ে রয়েছে নানা রঙ বেরঙের বাতি। নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডের বিবির পুকুরকে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে।

রাতের বেলা এখানে প্রথমে কেহ আসলে মনে হবে এটা ভারতের বোম্বের শহর। পুরো নগরীতে নেই কোনো ভাঙ্গা রাস্তা। নগরীর এ উন্নয়নের দাবিদার সদ্য বিদায়ী মেয়র আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরণ। তার সমর্থকদের দাবি, গত চার বছর সাত মাসে এ সিটিতে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আর কোন মেয়রের সময় হয়নি। আজকের নির্বাচনে হিরণ আবারো নির্বাচিত হলে আরো চারগুণ বেশি উন্নয়ন করবেন বলে কথা দিয়েছেন। এতো উন্নয়নের পরেও নগরবাসী কি পূর্ণরায় বরিশালের উন্নয়ন চান, নাকি রাজনৈতিক পরিবর্তন চান? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আজ শনিবার রাত পর্যন্ত।