গাইবান্ধায় নতুন পুলিশ সুপারের যোগদান

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা ॥  গাইবান্ধায় নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছেন সাজিদ হোসেন। দক্ষ ও মেধাবী এই পুলিশ অফিসার নওগাঁ জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালীন পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে গাইবান্ধায় যোগদান করেছেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্স ও মাষ্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। জনাব সাজিদ হোসেন ২০তম বিসিএস ব্যাচে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০১ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন। তিনি কুমিল¬া, সিলেট ময়মনসিংহ জেলা সহ নওগাঁ জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার চান্দরা কামারজান গ্রামের এম এ মতিনের পুত্র। তিনি ২ কন্যা সন্তানের জনক। উলে¬খ্য তার যোগদানে জেলাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পূর্বের পুলিশ সুপার ছিল একজন ঘুষঘোর ও দলীয় প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা।

 

 

 

যুবতীকে ধর্ষণের পর হত্যা

গাইবান্ধায় জমিলা আকতার ওরফে রিক্তা নামের এক যুবতীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।রোববার বিকালে সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই ছয়ঘড়িয়া গ্রামের এক বিল থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়। রিক্তা ওই গ্রামের জহুরুল হকের মেয়ে।পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, রিক্তা শনিবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়।রোববার স্থানীয় লোকজন বিলে কাজ করতে গিয়ে লাশ দেখতে পেয়ে বাড়িতে খবর দিলে তার স্বজনরা রিক্তার মৃতদেহ সনাক্ত করে।পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।  গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোপাল চন্দ্র জানান, নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে রিক্তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

 

শশুরবাড়ীতে জামাইয়ের আত্মহত্যা

শশুরবাড়ীতে বেড়াতে গিয়ে রতন মিয়া (২২) নামে এক যুবক বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। সে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের ভরট্টজানপুর গ্রামের আবু বক্করের একমাত্র ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানায়, রোববার সন্ধ্যায় রতন স্ত্রীর উপর অভিমান করে রাতে কীটনাশক পান করে। অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে তড়িগড়ি করে ভেন্ডাবাড়ি হাটে এক গ্রাম্য চিকিৎসকের নিকট নেয়া হলে ওই চিকিৎসক অপারগতা প্রকাশ করে। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশ্য রওয়ানা হলে পথিমধ্যে শঠিবাড়ি নামক স্থানে রতন মারা যায়। জানা গেছে, রতন ওই দিন স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ী যায়। স্ত্রী আসতে রাজী না হওয়ায় অভিমান করে রতন কীটনাশক পান করে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিয়ের পর থেকেই মৌসুমীর আচরণ রহস্যজনক ছিল। যে কারণে কীটনাশক পান করার পরেও রতনকে তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়নি। এদিকে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে মৌসুমীর সম্পর্কের রহস্যজনক তথ্য বেরিয়ে আসছে রতনের মৃত্যুর পর।

 

 

তথ্য ও জ্ঞানভিত্তিক বিনির্মাণে কর্মশালা

তথ্য ও জ্ঞানভিত্তিক গাইবান্ধা বিনির্মাণে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মশালা রবিবার জিইউকের লাইব্রেরি রুমে অনুষ্ঠিত হয়। জিইউকের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জিইউকের পরিচালক আঞ্জুম নাহীদ চৌধুরী লাকী, ডি. নেটের সহকারী পরিচালক টিটু, অনন্যা সাহা। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষক, তথ্যকল্যাণীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান অতিথি তথ্যকল্যাণীদের প্রচারণামূলক ক্যাম্পেইন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

 

একজন আলোকিত মানুষ

গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানের কেয়ারটেকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান টলু গাইবান্ধার একজন আলোকিত মানুষ। বর্তমানে টলু গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানের কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করেন। এ চাকরি তার জীবন জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। এ কাজটিকে তিনি সেবার মানসিকতা নিয়ে নিবিড় আন্তরিকতায় কাজ করে চলছেন। কবর খোঁড়া, কবর রক্ষণাবেক্ষণ, কবর দেয়া মানুষের তালিকা সংরক্ষণ করাই তার কাজ। এ দায়িত্ব নেয়ার পর টলু এখন পর্যন্ত সাড়ে আট হাজার কবর খুঁড়েছেন।৭১’র মুক্তিযুদ্ধের আগে আব্দুস সোবহান টলু ছিলেন পুলিশের হাবিলদার। পোস্টিং ছিল ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ লাইনে। মুক্তিযুদ্ধে গুরুতর আহত হওয়ার পরই শুরু হয় তার ভাগ্য বিপর্যয়। যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রাখলেও টলুর পারিবারিক জীবন সাদামাটা ছিল। অভাব ছিল তার নিত্যসঙ্গী, নিজের বসতবাড়ীর জায়গা জমিও তার নেই। মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন গাইবান্ধা শহরের মোমেনান রোড এলাকায়, অন্যের জায়গায় ঘর তুলে। খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে এখনও তাকে লিপ্ত হতে হচ্ছে জীবনযুদ্ধে। পাঁচ মেয়ের মধ্যে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অতিকষ্টে। শেষ দুটো মেয়ে এখনও কলেজে পড়ছে।আব্দুস সোবহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অন্যান্য পুলিশ ও বিডিআরের জওয়ানদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সে সময় টলু তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেল প্রশিক্ষণ দেবার দায়িত্বও পালন করেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রাক্কালে গোলাবারুদ বিস্ফোরণে টলু আহত হন। এসময় তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করতে হয়। অসুস্থতা কাটাতে তার ছয় মাসেরও অধিকাল সময় কেটে যায়। এরপর তার আর পুলিশের চাকরিতে ফেরা সম্ভব হয়নি। তিনি পরে চাকরি নেন গাইবান্ধা পৌরসভার কবর রক্ষণাবেক্ষণের। অবহেলিত এ মুক্তিযোদ্ধার ভাগ্যে আজও জোটেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন ভাতা বা সরকারি সহায়তা। এমনকি বয়স্ক ভাতাও পাননি সাতষট্টি বছর বয়সের এ কর্মনিষ্ঠ মানুষটি। কিন্তু তিনি কখনও কারও কাছে সাহায্যের জন্য হাতও পাতেননি।

 

 

 

ভন্ড প্রতারক পিতলের মূর্তিসহ আটক

নরসিংদীতে আধ্যাতিকভাবে কোটিপতি বনেদেয়ার মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে আন্তজেলা প্রতারক চক্রের এক সদস্য  পিতলের মুর্তিসহ জনতার হাতে আটক হয়েছে। রোববার বেলাব উপজেলার চরবেলাব গ্রামের সহজ-সরল মগল মিয়ার (৫২)  বাড়িতে এই চাঞ্চলকর ঘটনাটি ঘটে। মগল মিয়ার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছেন, গাইবান্ধা জেলার গবিন্ধগঞ্জ উপজেলার হাতিয়াদাহ গ্রামের আঃ বাকিরের ভন্ড প্রতারক পুত্র শামীম (৩২) বিগত সময়ে মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে এই চক্রটি আমার মেয়ের নিকট থেকে আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আটককৃত ভন্ড প্রতারক শামীম দীর্ঘদিন পর পূনরায় ৪-৫ দিন পূর্বে তার সেল ফোন নাম্বার ০১৭৭৪-৩৩৪৬০৪ থেকে আমার এই নাম্বারে ০১৭২৬-০৫৬৫৭৪ যোগাযোগ করে। সেল ফোনে ভন্ড প্রতারক শামীম আমাকে আল্লাহ্-রাসুলের কিছু বানী শুনিয়ে স্থানীয় এতিম খানা, মসজিদ, মাদ্রাসা ও অসহায়দের দান করার পরামর্শ দেয়।এরই ধারাবাহিকতায় ভন্ড প্রতারক শামীম রোববার সকালে নরসিংদীর বেলাবতে আসেন। বাড়ির অদূরে অবস্থান নিয়ে পূনরায় সেল ফোন থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করে বলে দীর্ঘদিন পরে হলেও আল্লাহ্ তোমার সহায় হয়েছেন, তুমি দ্রুত বেলাব পাইলট মর্ডান মডেল হাই স্কুলের দক্ষিন পাশে একটি নিম গাছের নিচে যেয়ে দেখ তোমার জন্য একটি স্বর্ণের মর্তি অপেক্ষা করছে। এরই প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে যাই, সেখানে যেয়ে প্রায় (৩শ) গ্রাম ওজনের কাগজে মোড়ানো একটি পিতলের মুর্তি দেখতে পাই। এসময় কাগজে মোড়ানো পিতলের মূর্তিটি পেয়ে ভন্ড প্রতারককে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মগল মিয়া ফোন করলে ভন্ড প্রতারক শামীম এসময় মগলকে বলে তুমি টুপি মাথায় দিয়ে দাড়াও, কিছুক্ষনের মধ্যেই দেখবে টুপি মাথায় পরিহিত একজন ভদ্রলোক তোমার নিকট যাবে।এর কিছুক্ষনের মাঝেই ভন্ড প্রতারক শামীম মগলের নিকট যেয়ে বলেন সাধু বাবাই আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছে। আমাকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে হবে, আপনি এক্ষুনি আমাকে আড়াই ভরি স্বর্ণ, নগদ এক লক্ষ টাকা দিয়ে দেন । অন্যথায় মুর্তিটি অকার্যকরসহ আপনার পরিবারের মহা বিপদ নেমে আসবে। চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ভন্ড প্রতারককে হাতের মুঠোয় পেয়েও বেলাববাসী হাত ছাড়া করার মতো এত নির্বোধ নয়। বৃদ্ধ মগল মিয়া পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রামবাসীদের সহায়তায় ভন্ড প্রতারক  শামীমকে আটক করে উত্তম-মাধ্যম গনপিটুনি দিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট নিয়ে যায়। এসময় চেয়ারম্যান ভন্ড প্রতারকের সমুদয় ঘটনা জেনে-বুঝে তাকে বেলাব থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। এব্যাপারে বেলাব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।