মোঃ ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা ॥ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী থেকে চুরি যাওয়া গরু পাশ্ববতী ঘোড়াঘাট থানা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে এক ঝটিকা অভিযান চালিয়ে পীরগঞ্জ থানার পুলিশ ৪টি চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হচ্ছে- দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থানার দমোদর পুর গ্রামের মৃত ছফুর উদ্দিনের ছেলে ইউপি সদস্য মোকসেদ আলী (৫৫) ও তার ছেলে রুহুল আমিন(২৮)।পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পীরগঞ্জ থানার দরোগা উজ্জল ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘোড়াঘাট থানার দামোদরপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মোকসেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪ টি চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, গত ০১ জুলাই পীরগঞ্জ উপজেলার বড়আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাশপুর গ্রামের জনৈক হাফিজার রহমানের বাড়ি থেকে একই রাতে ৮টি গরু চুরি যায়। গত ০৩ জুলাই এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়। গ্রেপ্তারকৃত ইউপি সদস্য মোকসেদ আলী ও তার ছেলে রুহুল আমিন বর্তমানে জেল হাজোতে।
নববধু শালার বউ ননদ জামাতার হাত ধরে উধাও
সাদুল্যাপুরে পরকীয়া প্রেমের টানে নন্দীয়ার সাথে নববধু শালার বউ স্বামীর দুলা ভায়ের হাত ধরে উধাও। ঘটনাটি ঘটে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার পল্লীতে পরকীয়া প্রেমের টানে নন্দীয়া লিটন মিয়ার হাত ধরে উধাও হলেন নববধু শালার বউ সাবানা বেগম (২০)। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। জানাগেছে, লিটন মিয়া শশুড় বাড়ি যাওয়া আসার সুবাদে তার শালা আলমগীর মন্ডলের নববিবাহিত স্ত্রী সাবানা বেগম (২০) এর উপর দৃষ্টি পড়লে সে সুযোগ মত সাবানা বেগমের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন । লিটন মিয়া ও সাবানা বেগমের মাঝে পরকীয়া প্রেমের কারনে প্রায় প্রায় সাবানা বেগম তার স্বামী আলমগীরের সাথে ঝগড়া বিবাদ করে আসছিল। এ দিকে নববধু সাবানা বেগম পিতার বাড়ি বড় জামালপুর গ্রামে যায়। সাবানা বেগম প্রেমের টানে প্রেমিক নন্দীয় লিটন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করে গতকাল রাতে অজানার উদেশ্য পাড়ি জমায় ।
প্রেমিকদ্বয় আতœীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে ঢাকায় যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর (মুচির গুদাম) নামক স্থানে উভয়ের মধ্যে চলা ফেরায় এলাকাবাসী মাঝে সন্দেহ হলে তাদেরকে আটক করে উত্তম মধ্যম দিয়ে স্থানীয় মেম্বারসহ এলাকাবাসীরা মিঠিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুসা আলী মন্ডলের নিকট তাদের কে সোপর্দ্দ করেন। খবর পেয়ে সাবানার পিতা ঠান্ডা মিয়া ওই রাতেই জামালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মন্ডল ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম সরকার মানিক এর মাধ্যমে উভয়কে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।
জলদস্যু আতঙ্কে কৃষকরা
বহ্মপুত্র ও যমুনা নদে জলদস্যুদের কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের খঞ্চাপাড়া, খোলাবাড়ী ও দেলুয়াবাড়ী গ্রামের কৃষকদের গরুর উপর চোখ পড়েছে জলদস্যূদের। জলদস্যুদের তর্জন-গর্জন দেখে আতঙ্কিত ওই ৩টি চরের প্রায় ২ হাজার কৃষক ও নৌরুটের যাত্রীরা। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগে এসব তথ্য জানা গেছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা ও জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এবং সারিয়াকান্দি উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ফুলছড়ি উপজেলার খঞ্চাপাড়া, খোলাবাড়ী ও দেলুয়াবাড়ী গ্রাম। ফুলছড়ি ইউনিয়নের ওই ৩টি গ্রামের কৃষকদের গরুর উপর দৃষ্টি পড়েছে জলদস্যুদের। গত ১১ জুন মঙ্গলবার বিকেলে চোরাই গরু উদ্ধারের অজুহাতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও গাইবান্ধার সাঘাটা থানা পুলিশ, সারিয়াকান্দি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে স্বশস্ত্র জলদস্যুরা গণ ডাকাতি চালিয়ে শতাধিক গরু-ছাগল লুটে নিয়ে যায়। লুটপাটের খবর পেয়ে ফুলছড়ি থানার নৌ-টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ২ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে সারিয়াকান্দি ও সাঘাটা থানার পুলিশ ও জলদস্যুরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তারপর থেকেই গ্রামের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে দিনরাত কাটাচ্ছে। যে কোনো মূহুতে জলদস্যুরা আক্রমন করতে পারে এই ভয়ে কৃষকদের চোখে ঘুম নেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফুলছড়ি থানা পুলিশ প্রতিদিন নৌ-টহল দিচ্ছে। এদিকে ১১ দিন পর ফুলছড়ি ইউএনও মেহেদি-উল-সহিদ, ওসি মশিউর রহমান, ফুলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এমএ সবুর সরকার, সাঘাটা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ফুলছড়ির পার্শ্ববর্তী সাঘাটা উপজেলার হলদিয়াচর থেকে ২টি গরু উদ্ধার করে গরুর মালিক মনোহর ব্যাপারিকে দিয়ে দেয়া হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদীজুড়ে গাইবান্ধা সদর থানার মোল্লার চরের রেজাউল পাগলা বাহিনী, দেওয়ানগঞ্জ
উপজেলার জিগাতলা চরের ইদ্রিস বাহিনী, মাসুদ বাহিনী ও কালাম বাহিনী, ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুরের খোকা বাহিনী, করিম বাহিনী এবং সারিয়াকান্দির ২টি বাহিনীসহ ৮ থেকে ১০টি জলদস্যু বাহিনীর এলাকাভিত্তিক রাজস্ব চলে সারাবছরই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জলদস্যু জানান, মোল্লার চরের রেজাউল পাগলা শুধু দস্যুতাই করে না, তিনি নিজেই বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারিগর। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে তারা জলদস্যুরা অস্ত্রশস্ত্র ও জনবলে সজ্জিত হয়ে উঠছে একাধিক বাহিনী। একেকটি বাহিনীতে ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। এদের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিকসহ বিভিন্ন অস্ত্র। নৌপথে গবাদিপশু, মালামাল ও যাত্রীবাহী নৌকা আটক করে যাত্রীদের মারপিট করে টাকা, পয়সা ও মালামাল ছিনিয়ে নিচ্ছে জলদস্যুরা। গত রোজার ঈদে এ নদের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫/৬ টি ডাকাতির ঘটনাও ঘটলেও থানায় একটি মামলাও দায়ের হয়নি। কেউ থানায় মামলা দিতে গেলে ডাকাতি মামলা নেয়া হয়না বলে অনেক ভুক্তভুগির অভিযোগ।উপজেলার ফুলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এমএ সবুর সরকার জানান, খঞ্চাপাড়া, খোলাবাড়ী ও দেলুয়াবাড়ী গ্রামটি আন্ত:জেলা সীমানা ঘেষে হওয়ায় জলদস্যুরা ওই গ্রামে প্রবেশ করে সাঘাটা ও সারিয়াকান্দি থানা পুলিশের সহায়তায় হামলা চালিয়ে গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও নৌপথে সব ধরণের মানুষের নিরাপত্তার অভাব দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এখন দিন-দুপুরেই ডাকাতির ঘটনা ঘটবে বলে তিনি আশংকা করেছেন। তিনি নদীপথে পুলিশি টহল ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।এ প্রসঙ্গে ফুলছড়ি থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, নদীপথে প্রতিদিন পুলিশি টহল দেয়া হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তার জন্য। জলদস্যুদের অবস্থান দুর্গম এলাকায়, আমাদের আধুনিক ও দ্রুতগামী জলযান না থাকায় জলদস্যুদের ধরা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
ওয়াগন পারাপার শুরু
ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পাওয়া গতকাল বুধবার থেকে বালাসী-বাহাদুরাবাদ ঘাট রুটে আবার মালবাহী ওয়াগন পারাপার শুরু হয়েছে। গত বছরের ২০ নভেম্বর নাব্যতা সংকটের কারনে ওয়াগন পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ব্যবসায়ীরা স্বল্প ব্যয়ে মালপত্র পরিবহন থেকে বঞ্চিত হয়। নতুন করে ওয়াগন পারাপার শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।এ ব্যাপারে বালাসীঘাটের দায়িত্বরত এম আই মশিউর রহমান জানান, গতকাল বুধবার ডব্লিউ এফ বি-১০ ওয়াগনবাহী বার্জে ৩০টি রেল ওয়াগন ভর্তির কাজ শুরু হয়। পরে মাল ওয়াগন বহনকারি টাগ ঈশা খাঁ প্রথম চালানটি বাহাদুরাবাদ ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। গমবোঝাই বার্জটি বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে নারায়নগঞ্জের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।