এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাকে ছিড়ে-খুঁড়ে খাবে ( ২য় পর্ব)

 

এইভাবেই তৈরী হয়েছে সেই বিখ্যাত প্রবচন দুইটি, “বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়” অথবা “সূর্যের থেকে বালি গরম” । আমার লেখার প্রথম পর্বে এই কঞ্চি ও বালু’দের এত দেখা পেয়েছি বিভিন্ন স্থানে ও আকারে যে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম, বিমুড় আর স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম।শুধু ভাবছিলাম, কি করে এই দেশের মানুষ এই পরিবারতন্ত্র থেকে বের হবে ? কি করে বাপের পর পূত্র কন্যাদের রাজত্ব শেষ হবে ? ভেবে দেখলাম, শুধু একটা ভাবেই সম্ভব, যদি এই বাঁশের সাথে লেগে থাকা এইসব চামচাদের চিহ্নিত করা যায় । শুধু তখনি সম্ভব হবে একটি বড় বিপ্লবের । সূচিত হবে বড় আকাঙ্ক্ষা।

আপনাদের মন্তব্যে অনেক হতাশার কথা পড়েছি । যেমন, “এইটাই আমাদের নিয়তি, এইটাই আমাদের অবস্থা, আমরা কি করব, আমাদের হাত বাঁধা” ইত্যাদি…ইত্যাদি… আসলে আপ্নারা কিছুই করতে পারবেন না । কারন আপনাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে এই জাতীয় লেখা দেখলে ঝাপিয়ে এসে পড়া । আর পড়া শেষে মিন মিনে সুবোধ মানুষের মত দীর্ঘ শ্বাস ফেলা । অন্যায় আর অত্যাচার দেখে, দূর্নীতি আর দূর্নীতিবাজ দেখে আপ্নি কি একটি দিন আপনার গলা উঁচু করে বলেছেন, “মাঙির পোলা, তুই কেডা? এই দেশ কি তোর বাপের নাকি হারামজাদা?”

বলেন নাই । বলেন নাই বলেই বাঁশের পাশে কঞ্চি বেড়েছে আর সূর্যের নীচে গরম হয়েছে বালি । এখন শুধু কপাল চাপড়ে মরতে থাকেন। আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে দীর্ঘজীবি হন।
জানি আপ্নারা মনে রাখতে পারবেন না আপনাদের মাথার ভেতরে সামান্য স্মৃতি দিয়ে। তারপরেও গল্প শরু করি…

উপরের যেই লোকটিকে দেখা যাচ্ছে, তার নাম গিয়াসুদ্দিন আল মামুন । সাধারণ ও মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে এই মামুন । মানিক মিয়া এভিনিউর রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের অত্যন্ত মধ্যম মানের ছাত্র ছিলো মামুন। জিয়া যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন একবার তিনি গিয়েছিলেন সেই স্কুলে কোনো এক কর্মসূচিতে । আমাদের মামুন সাহেব ঠিক সেই সময় জিয়ার সামনে গিয়ে বলে বসেন, তাদের স্কুলে একটি ভালো মাঠের প্রয়োজনীয়তার কথা । ইতিহাসের গল্পের মত, জিয়া এই তরুণের সাহসে মুগ্ধ হন ।অনেকটা রতনে রতন চেনে টাইপ। অগণিত আর্মি অফিসার হত্যাকারী জিয়া তার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন এইখানে মাঠ তৈরী করে দিতে। সেই থেকেই মামুন জিয়ার ভক্ত।

১৯৮৩ সালে মামুন ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখানেই পরিচিত হন বাংলাদেশের সবচাইতে জঘণ্য দূর্নীতিবাজ ও চোর সম্রাট তারেক রহমানের সাথে। তারেক রহমানের সাথে সবচাইতে ঘনিষ্ঠতা ছিলো এই মামুনের । যে সময়ের কথা বলছি ওই সময়ে তারেক তখনো এত অর্থ আর সম্পদের মালিক হননি। একখানা মোটর বাইক ছিলো তারেকের । সেটা নিয়েই টোঁ টোঁ করে ঘুরত দু’জন । কলেজের পাঠ চুকোবার পর পর তারেক ভর্তি হয় ঢাকা ইউনিতে ।

মামুনদের পরিবার নির্বাহের জন্য তাদের একমাত্র সম্বল ছিলো তাদের একটি ঔষধের দোকান । এটি ছিলো এলিফেন্ট রোডে বাটার সিগনালের সাথে। নাম ছিলো পূবালী ফার্মেসি। তারেক ইউনিভার্সিটি থেকে ক্লাস শেষে মূলত এইখানেই আড্ডা বাসাত মামুন আর অন্যান্যদের সাথে । সাবেক এম্পি হাফিজ ইব্রাহীম মানে মামুনের ভাইও তখন তাদের দোকানে নিয়মিত বসত। পাঠক সম্ভবত বুঝতেই পারছেন মামুনদের তখনকার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা। একটি দোকান ছিলো তাদের পুরো পরিবারের চালিকা শক্তি।

এভাবেই তারেকের সাথে মামুনের সখ্যতা বেড়ে উঠতে থাকে প্রতিটি দিন। মামুনের নিয়মিত যাতায়াত ছিলো ক্যান্টনমেন্টের তারেকদের বাড়ীতে । যেখানে জিয়ার আরেক শ্রীমাণের সাথেও মামুনের পরিচয় হয়। সেই শ্রীমানের নাম কোকো। আমাদের আরেক দূর্নীতিবাজ ও চোর ভাই কোকো রহমান। জিয়ার কনিষ্ঠ পূত্র। তারেকদের বাসার উলটো দিকেই থাকতো তারেকের মামা সাঈদ ইস্কান্দর

সাঈদ ইস্কান্দরের সাথেও মামুন একসময় ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ক্রমান্বয়ে তারেক আর তার মামার শিপিং,টাওয়েল,গার্মেন্টস ইত্যাদি ব্যাবসার সাথে মামুনের সম্পৃক্ততা বাড়তে থাকে। ১৯৯৫-১৯৯৮ সালের সময়টা মামুন নিজেই তার স্ত্রী আর পরিবারকে নিয়ে চলে আসে ক্যান্টনমেন্টের নাজির রোডে। কি তড়িত উন্নতি !! একেবারে মিরপুর থেকে ক্যান্টন্মেন্ট! পরশ পাথর ধরা দেয়া শুরু হতে লাগলো মামুনের জীবনে । একটা সময় আওয়ামীলীগ সরকার মামুনকে ক্যান্টন্মেন্টে বসবাস করতে বাধা দেয়। ১৯৯৬ সালে লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই। ঠিক তার পর পর মামুন এই না থাকতে দেয়ার ক্ষোভ প্রতিশোধ হিসেবে রপান্তরিত করে ২০০১ সালের নির্বাচনে জামাত আর বিনপি’র পক্ষে তার চতুর আর চালাকি সব বুদ্ধি গুলোর সংমিশ্রণ ঘটিয়ে। সাথে থাকে আরেক রাজপূত্র মাহি বি । যার কথা যথা সময়ে বলা হবে।

এর পর মামুনের ইতিহাস অন্যন্য। ২০০১ সালে বি এনপি ক্ষমতায় আসে। ধীরে ধীরে ক্ষমতা চলে যায় মৃত রাজা জিয়ার পূত্র তারেক রাজার কাছে আর সাব রাজা কোকোর কাছে। রাজা তারেকের সাব ডিভিশনাল চামচা হিসেবে নাম করে নেয় গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এর পরের ইতিহাস শুধু নিচের সম্পদের হিসেবেই দেখুন-
মামুনের ভাষ্যমতে তার ব্যাক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ২৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার মত। যা একটি হাস্যকর পরিমাণ। অথচ মামুনের দেয়া জবানবন্দীতে তার সম্পদের পরিমাণ তার বলা উপরের পরিমাণটি তাকে শুধু মিথ্যেবাদীই প্রমাণ করেনি প্রমাণ করেছে বাংলাদেশের একজন সেরা চামচা ধর্ষক হিসেবে।

তারেক রহমানের ধর্ষন করা বাংলাদেশকে নীরবে ধর্ষন করে এই মামুন। চামচাবাজী,তেল বাজী সব কিছুতেই সিদ্ধহস্ত ছিলো মামুন। তারেকের পা চেটে চেটে , রাজার পূত্রদের পা চেটে চেটে মামুন তারেক রাজার ফার্স্ট ইন কমান্ড হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করে ।

নীচে তার সম্পদের পরিমান দেখুন।

১। মৌচাকে ২০ বিঘা জমি

২।ইন্দিরা রোডে ১৩০০ স্ক্য়ার ফিটের ফ্ল্যাট

৩।ওল্ড ডি ও এইচ এ ফ্ল্যাট

৪।চ্যানেল ওয়ানের নামে ১৭ কাঠা জমি বরাদ্দ যার জন্য পাবলিক মিনিস্ট্রিকে মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে।

৫। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে আছে ১৫ কোটি টাকার এফ ডি আর

৬।ভোলার বোরহান উদ্দিন থানায় তিন বিঘার উপরে একটি বাড়ী আছে।

৭।গাজী পুরে তার সেই বিখ্যাত বাড়ী খোয়াব আট কাঠা জমির উপর নির্মিত

৮।পুরানো ডি ও এইচ এস এ তার স্ত্রীর নামে একটি বাড়ী আছে। বাড়ীর
ঠিকানা ৭৮,রোড ৬। বাড়িটি তৈরী করতে খরচ হয়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকা। জমির মূল্য ২ কোটি। বাড়ীটি অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল মান্নানের কাছ থেকে কেনা হয়েছে।

৯। মামুনের স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে আচে প্রায় চার কোটি টাকার মত এফ ডি আর।

১০।মামুনের এইচ এস বি সি ব্যাঙ্কে আছে ২১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩১ টাকা(গুলশান ব্রাঞ্চ),স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কে আছে ৯৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪১৭ টাকা ( মতিঝিল ও কাওরান বাজার শাখা), ৫০ লক্ষ টাকা (স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের গুলশান শাখা), ঢাকা ব্যাঙ্কের বনানী ব্রাঞ্চে আচে ১০ লক্ষ
মামুনের গাড়ী গুলো এক নজরে দেখে নিন-

১।4000CC BMW worth 52 lacs;
২। Lexus (sedan) worth 30 lac taka;
৩।Volvo worth 35 lac taka;
৪।2500CC microbus worth 18 lac taka, the loan of which nine lac has been repaid so far;
৫।Pajero used for Rahman Navigation;
৬।8 microbuses of which 17 were used for Channel One TV;
৭। Other vehicles include cars, buses, trucks, etc, totalling 50 in all.

১১। মামুনের ৩০% শেয়ার আছে রহমান নেভিগেশন এন্ড কোং এর সাথে, ২৫% রহমান শিপিংস বাংলাদেশ, ২০% খাম্বা লিমিটেড, ৬০% পি সি আই এল, ৩৫% অয়ান কম্পোসিট মিলস লিমিটেড, ৪১% ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ৫৫% ওয়ান ডেনিম ফ্যাক্টরী, ২% চ্যানেল ওয়ান, ৭৫% ওয়ান হোল্ডিং লিমিটেড।

১২। সাঈদ ইস্কান্দর ও তারেক রহমানের সাথে ব্যাবসায় নেমে আমুন আই এফ আই সি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেয় ৬০ লক্ষ টাকা এবং এই ব্যাঙ্কের অর্থায়নেই আব্দুল গণী সিকদারের কাছ থেকে দুইটি জাহাজ কেনার অর্থায়ন করা হয়। ১৯৯৭ সালে তারা ৪ টি জাহাজ ক্রয় করে ২০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়ে এবং আই এফ আই সি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেয় ১ কোটি ৮০ হাজার টাকা, সাইদ ইস্কান্দরের স্ত্রী নাসরিন সাইদ পরবর্তীতে এই ব্যাবসায় নামে। আপ্নারা সদর ঘাটে গেলে দেখবেন কোকো-১,কোকো-২, এই জাতীয় অনেক লঞ্চ। এই সব লঞ্চ গুলোই আমাদের ২য় রাজপূত্র কোকো সাহেবের, যার গল্প করা হবে এই সিরিজের পরবর্তী পর্বে।

১৩। সাঈদ ইস্কান্দরের সাথে গার্মেন্টস ব্যাবসায় মামুনের বিনিয়োগ আছে। তারা ইউনিটেক্স এপারালস নামে এক্টি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী স্থাপন করে ৯০ টি মেশিন নিয়ে। যেখানে বিনিয়োগ করা হয় ২০ লক্ষ টাকার মতন এবং আই এফ আই সি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেয়া হয় ৫০ লক্ষ টাকা। এই প্রজক্টটি ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ সালের সময়ে ১ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয়।

১৪।প্রাক্তন এম পি এম এইচ সেলিম যে কিনা সিলভার সেলিম নামেও পরিচিত। তার সেথা মামুন একটি মিল, সিল্ভার লাইন কম্পোসিট মিলস লিমিটেড স্থাপন করে গাজীপুরে। সেলিমের জমিতে ৩০ -৪০ লক্ষটাকা ইনভেস্ট করে আই এফ আই সি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেয় ৬০ কোটি টাকার মতন এই মিল পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই অংশ মামুনের শেয়ার ছিলো ২৫%।

১৫। আই এফ আই সি ব্যাঙ্কের থেকে ১৮ কোটি টাকার লোন নেয়ার মাধ্যমে মামুন সম্মিলিত ভাবে একটি ফ্যাক্টরী স্থাপন করে
মামুনের আর যেসব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান আছে-
ওয়ান টেক্স ডাইং ফ্যাক্টরী, খাম্বা লিমিটেড, প্রি-কাস্ট কনক্রিট লিমিটেড, ওয়ান কম্পোসিট লিমিটেড, ওয়ান শিপিং,আর ই বি টেন্ডার, ওয়ান কনসিউমার, ওয়ান ডেনিম ফ্যাক্টরী।

মামুনের ডাকাতির মধ্যে একটা বড় অংশ ছিলো কোনো কন্ট্রাক্ট করিয়ে দেবার নামে টাকা গ্রহন। ধরা যাক আপনি একটা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গঠনের অনুমতি পাইয়ে দিবেন, ব্যাঙ্ক স্থাপন করার অনুমতি পাইয়ে দিবেন, ইন্ড্রাস্ট্রী বানাবেন,কারখানা বানাবেন,শিপ কিনবেন, কন্সট্রাকশন করবেন, যাই করবেন না কেন তা মামুন আর রাজা তারেকের কাচ থেকে অনুমতি ও চাঁদা দিয়ে তা করতে হবে। তাদের মূল বাটপারি কার্যালয় হাওয়াভবন থেকেই এটি নির্ধারিত হত। এই কাজের জন্য মামুনকে সাহায্য করত মীর আক্তার লিমিটেড,আমদুল মোনেম লিমিটেড,রেজা কন্সট্রাকশন,বিডিসি,পি বি এল ইত্যাদি।

১।রোডস এন্ড হাইওয়েতে বিভিন্ন কন্ট্রাক্ট তার পরিচিতজনদের পাইয়ে দিয়ে ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত মামুনের এই খাতে আয় ছিলো ২০ কোটি টাকার মতন।

২।রেল ওয়ের দুইটি টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে মামুন পকেটে ভরে নেয় ৭৫ লক্ষ টাকা।

৩। সেলিম ভুইয়া নামে একজন যে ছিলো নিক্কো রিসোর্সের এজেন্ট, তার কাছ থেকে কাজ পাইয়ে দিয়ে পকেটে ভরে ৮০ লক্ষ টাকা।

৪।মিসেস খাদিজা ইসলাম কে ফেঞ্চু গঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার জন্য সেখান থেকে বদল দাবা করা হয় ১কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। এই কন্ট্রাক্টের প্রোপাইটার ছিলো নির্মাণ কন্সট্রাকশন।

৫।এই সালমা ইসলামকেই টংগী পাওয়ার স্টেশনের চুক্তি পাইয়ে পাইয়ে দেয়া হয়েছিলো ৭ লক্ষ বিশ হাজার ডলারে যা জমা হয়েছিলো মামুনের সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাঙ্ক একাউন্টে। ( রবিনসন রোডের ব্রাঞ্চ,po box-1195, Singapore)

৬। বাংলাদেশের হোসাফ গ্রুপের নাম শোনার কথা আপনাদের। এই গ্রুপ থেকে ৬ কোটি টাকা নেয়া হয়েছিলো ২০০১-২০০২ সালের দিকে একটা পাওয়ার স্টেশনের কন্ট্রাক্ট পাইয়ে দেবার বিনিময়ে। যে টাকা জমা হয়েছিলো আলাদা আলাদা লন্ডন ন্যাট ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং সিটি ব্যাঙ্ক সিঙ্গাপুর।

৭। অবসর প্রাপ্ত ক্যাপ্টেন রেজা, গিয়াসুদ্দিন আল মামুনকে ২ কোটি টাকা দেয় ময়মনসিং ফেইস-২ পাওয়ার স্টেশনের কাজ এবং ঢাকা উত্তর পাওয়ার স্টেশনের কাজ পাইয়ে দেবার জন্য।

৮। তার এক বন্ধুর জন্য এল জি ই ডি মন্ত্রণালয়ের সাথে (জিয়াউল হক জিয়া) মামুন লবিং করে। সেই বন্ধুর কোম্পানীর নাম কে আই সি এল। সেখান থেকে মামুন পকেট দাবা করে ৭৫ লক্ষ টাকা।

৯।নরটেল কোম্পানির মুশফিকের কাছ থেকে মামুন ৫০,০০০ ইউ এস ডলার নেয় একটি চুক্তি নিশ্চিত করণের মাধ্যমে। এটি ২০০১-২০০২ সালের ঘটনা।

১০। ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান আলী আসগর লবীকে ২০০২ সালে টি এন্ড টি’র একটা চুক্তি পাইয়ে দেয় ৬০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে

১১। ওয়াহিদ সালাম নামে এক ব্যাক্তিকে বিভিন্ন কন্সাল্টেন্সি জাতীয় সাহায্য দেয়ার জন্য ওয়াহিস সালাম নামের এক ব্যাক্তির কাছ থেকে নেয়া হয় ৫০ লক্ষ টাকা। এই অশিক্ষিত কুত্তারবাচ্চা মামুন কিসের কন্সাল্টেন্সি করেছে কে জানে? হারামজাদা না ইঞ্জিনিয়ার,না ডাক্তার,না উকিল,না সলিসিটর ।

১২।জি এম সিরাজ এম পি’র সাথে একটা ব্যাবসায় নামে মামুন। যেখানে উত্তরা মটর্স থেকে ৬০০ সি এন জি’র একটা চালান থেকে মামুন আর সিরাজ প্রফিট করে প্রত্যেকে ২ কোটি টাকার মত।

১৩। সিভিল এভিয়েশন অথরিটির একটি চুক্তি বাবদ মামুন আয় করে ২৫ লক্ষ টাকা।

এই অমানুষ টি সম্পর্কে আরো অনেক অনেক তথ্য আছে আমার কাছে ।বিরক্ত আর ক্লান্ত হয়ে গেছি দিতে দিতে। আমি রাজনীতিবিদ নই অথবা তেমন কোনো লেখকও নই । আমার কোনো দায় নেই কারো কাছে । আমি আর লক্ষ কোটি মানুষের মত বাংলাদেশের একজন সন্তান। আজ মামুন সম্পর্কে যতটুকু লিখলাম আপ্নারা তা হয়ত এক কাপ কফি কিংবা চা নিয়ে তারিয়ে তারিয়ে পড়বেন। ফেইস বুক কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে শেয়ারও করবেন। কিন্তু দিনের শেষে কি দেখা যাবে জানেন? আহ, উহ, এত খারাপ!! এত অমানুষ!!! এইসব এখন বলবেন আর দিনের শেষে আপ্নারা এই অমানুষ জানোয়ার কেই ভোট দিবেন। কারন সামনের ইলেকশানে মামুন অবশ্যই নির্বাচনে দাঁড়াবে যেমনটি দাঁড়িয়েছিলো তার ভাই হাফিজ ইব্রাহিম। আপ্নারাই তাকে ভোট দিয়েছিলেন তাকে জয়ী করেছিলেন।

একটি বার আপ্নারা চিন্তা করে দেখুন তো! এই লোক্টি সম্পর্কে উপরে যতটুকু লিখলাম তার প্রতিটি কথা । এলিফ্যান্ট রোডে একটি ঔষধের ফার্মেসী ছিলো মামুনের । তারেক যেমন বাবার একটি ভাঙা সুটকেস থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থের ব্যাবস্থা করে ফেলেছে এই বাংলাদেশকে দিনের পর দিন ধর্ষন করে, ঠিক তেমনি তারেকের পাছা চেটে চেটে, পা চেটে চেটে মামুন বাংলাদেশের মানুষকে ধর্ষন করেছে দিনের পর দিন ।

শুধু উপরের উদাহরণ গুলো দেখুন। আপনি একটা ব্যাবসা করবেন তবে মামুন-তারেক কে ধরেন। আপনি কোথাও হাগবেন? তাহলে মামুন-তারেকের অনুমতি নেন, আপনি কোথাও বিনিয়োগ করবেন? মানুন-তারেকের অনুমতি নেন। আপনি আপনার বাড়ী বানাবেন? মামুন –তারেকের অনুমতি নেন। এই দেশটা যেন তারেকের খুনী বাবার সম্পত্তি আর পা চাটা চামচা মামুনের। এই দেশটা যেন ওদের কথাতে উঠবে আর বসবে ।
দেশে শত শত তরুন আছে, যুবা আছে,লক্ষ লক্ষ বিদেশ ফেরত কিংবা দেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়া মেধাবী ছাত্ররা আছে, আরো আছে মেধাবী কৃষক, গার্মেন্টস কর্মী,দিন মজুর,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,উকিল,ব্যারিস্টার,একাউন্টেন্ট,ব্যাবসায়ী । অথচ দেখেন, দেশ চালালো কারা? দেশ চালালো অতি নিম্ন রুচির দুই অসভ্য ভাই আর তাদের অসভ্য এক চামচা ।

আপ্নারা কি করেছেন সেই পাঁচটি বছর? হাঁক দিয়েছিলেন দশজন মিলে? কেউ কি একবারো বলেছিলেন কুত্তার বাচ্চা, “এই দেশ কি তোর বাপের?” আপ্নিও বলেন নাই, আমিও বলি নাই। তার বদলে খালেদার মহা সমাবশে গিয়েছি, মিটিং এ গেছি আর গলার রগ টগ ফুলিয়ে তারেক ভাইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই বলে হায়েনার মত চেঁচেয়েছি। তাহলে এই মামুন যখন ২০১৩ সালের নির্বাচনে আপনাকে ছিন্ন ভিন্ন করে খাবে, আপনি দুখী হবেন কেন? কেন আপনি অভিযোগ করবেন এরা খারাপ আর দূর্নীতিপরায়ন বলে? আপনার লজ্জা করবে না সে সময়?

উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন এই ভদ্রলোক হচ্ছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। বি এন পি’র এখন প্রথম সারির যে কয়জন চামচা আইঞ্জীবি আছে ইনি তাদের একজন। তারেক রহমানের মামলা লড়ছেন অনেক আগ থেকেই। সাবেক এম পি ও বি এন পির একজন বড় নীতি নির্ধারক এডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন (ঢাকা ৯ এর সাবেক এম পি) এর ডান হাত এই কাজল সাহেব। আপনাদের মনে আছে কি না জানিনা, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার যখন বিচারপতিদের বয়সের ক্রম অনুসরণ না করে পদোন্নতি দিচ্ছিলেন তখন পাছামোটা নাজমুল হুদা ও রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতির দরজায় লাত্থি মারে । সেই থেকেই নাম হয়ে যায় এই কাজল সাহেবের। তিনি অবশ্য সে সময় ছিলেন এডভোকেট । যশোরের ছেলে। আগে থেকেই বি এন পির সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের খুব কাছের লোক এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল । ইংলিশ ল পড়বেন এবং ব্যারিস্টার হবেন সেই আশাতে আসেন লন্ডনে।

শুধু মাত্র এই রুহুল কুদ্দুস কাজল লন্ডনে আসবে বলেই, বাংলাদেশ হাই কমিশনে তার জন্য আইনের একটি আলাদা বিভাগ খোলা হয়, পদ তৈরী করা হয়। প্রতি মাসে ১২০০ পাউন্ড পেতেন বাংলাদেশ সরকার থেকে। ফ্রি গাড়ি, ফ্রি বাড়ী,সব ধরনের ইউটিলিটিস বিল ফ্রি। শুধু মাত্র দলীয় প্রভুদের তুষ্ট করতে পেরেছেন বলেই কাজল সাহেব কে এই পুরষ্কার দেয়া হয়েছিলো। কি করতেন তিনি বাংলাদেশ হাই কমিশনে? কি ছিলো তার কাজ ? যখন মন চাইতেন যেতেন, যখন মন চাইতেন চলে আসতেন। লন্ডনে সিলেটী লোকেরা সে সময় এক বাক্যে এই রুহুল কুদ্দুস কাজলকে চিনতেন। অসংখ্য লোকের কাছেই শোনা যেত এই রুহুল কুদ্দুস কাজলের দূর্নীতি। পাসপোর্ট প্রতি ৪০ পাউন্ড-৫০ পাউন্ড তাকে দিতে হতো ।সরকারী ১২০০ পাউন্ড আর উপড়ি ইনকামের টাকা দিয়ে রুহুল কুদ্দুস বার এট ল সম্পন্ন করেন সিটি ল স্কুল থেকে ২০০৬-২০০৭ সালে। বার এট ল করার খরচ সব মিলিয়ে থাকা খাওয়া টিউশন ফি সহ কমপক্ষে ২০-২৫ লক্ষ টাকা। বাংলাদেশ সরকার লন্ডন হাই কমিশনে তাকে একটি লোক দেখানো চাকরি দিয়ে সরকারী টাকাতেই ব্যারিস্টার করে আনলো তাকে।

আমার প্রশ্ন আসলে অন্য যায়গায়। প্রশ্নটি হলো, এই অর্থ কার? এই যে ১২০০ পাউন্ড প্রতি মাসে খামাখাই একটা পদ তৈরী করে দেয়া হলো, এই অর্থ কার পকেট থেকে গেলো? সরকারের?

ভালো কথা। সরকার এই টাকা পেলো কোথায়? অবশ্যই ভ্যাট থেকে, ট্যাক্স থেকে। এই ভ্যাট আর ট্যাক্স কে দিয়েছে? মানুষ। সাধারণ পাবলিক। এই ট্যাক্স দিয়েছে কৃষক,মজুর,খেটে খাওয়া মানুষ, বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ। আমার পেটের টাকা,আমার রক্তের টাকা দিয়ে একজন দূর্নীতিবাজ লোক যে কিনা প্রধান বিচার পতির দরজায় লাথি মারতে পারে, যে কিনা আইনের প্রতি এত অশ্রদ্ধাশীল,সেই লোক তার পুরষ্কার হিসেবে পায় হাই কমিশনে একটি পদ। অথচ এরকম অসংখ্য দূর্নীতির কথা বাংলাদেশের কয়জন মানুষ জানেন? কয়জন মানুষ সরকারকে জিজ্ঞেশ করেছেন এই ধরনের পদক্ষেপের কথা , কয়জন মানুষ আসলে বুঝতেই বা পেরেছে এই দূর্নীতির কথা?
তিনি বিভিন্ন আড্ডাতেই বলেছেন তার নির্বাচন করবার খায়েশের কথা। দেশে ফিরেই তিনি যশোরে তার নির্বাচনী এলাকায় জন সংযোগ শুরু করেছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বি এনপি-জামাতের প্রার্থী হবেন। খুব ভালো। খুব আনন্দ লাগে এসব শুনে। তৈরী হয়ে যান। আপনার নেতা রুহুল কুদ্দুস কাজল কে ভোট দেবার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন।

উপরের যে বাচ্চা বাচ্চা চেহারার ছেলেটিকে দেখা যাচ্ছে তার নাম ব্যারিস্টার সাকেব মাহবুব রাফি। বি এন পি’র বর্তমান যুগ্ন মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের ছেলে। থাকে লন্ডনে চাচা সবুজের সাথে। লেইটনে বাবার কিনে দেয়া প্রাসাদে। এল এল বি করেছে এল এস ই থেকে এবং বার এট ল করেছে কলেজ অফ ল থেকে। এখন এল এল এম করছে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্স থেকে। অন্যান্য অনেক বি এন পি’র ত্যাঁদর আর অসভ্য নেতার ছেলে-পুলে থেকে কোয়ালিটির দিক থেকে ও আচরণ গত দিক থেকে রাফিকে একজন অমায়িক ছেলে হিসেবেই আমি মনে করি।

কিন্তু আমার প্রশ্ন এইখানে না। আমার প্রশ্ন তার ভবিষ্যত নেতা হওয়া নিয়ে, এম্পি হওয়া নিয়ে। সমগ্র পড়ালেখার অর্থায়ন নিয়ে, তার বাবার দূর্নীতি নিয়ে। আজকে রাফি শুধুমাত্র…শুধুমাত্র মাহবুব খোকনের ছেলে হওয়াতেই শুধু এম পি আর মন্রী হবার জন্য লাইন লাগাবে, দেশের টাকা বাবা মেরে পাঠাবে আর ছেলে এখানে আরাম করে পড়বে, এমন কেন হবে?

মওদুদের এ পি এস থাকা অবস্থায় কি করেনি এই মাহবুব উদ্দিন? তার ৬ ভাইয়ের প্রত্যেকটাকে বিভিন্ন ব্যাবসা,ট্রেড লাইসেন্স, বসুন্ধরা সিটিতে কোটি টাকা দামের দোকান এসব সব কিছু করে দিয়েছে মাহবুব উদ্দিন খোকন। কোটি কোটি টাকায় ট্রেড লাইসেন্স বিক্রি, দূর্নীতি,চাকরির তদবির, এসব কিছু করেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয় মাহবুব উদ্দিন খোকন। মওদুদের একটি প্রতিবন্ধী ছেলে আছে লন্ডনে। তার নাম আমান মমতাজ মওদুদ। ব্রিটিশ পাসপোর্ট ধারী। এই ছেলেকে দেখাশোনা করানোর জন্য মওদুদ এক সময় মাহবুব উদ্দিন খোকন কে লন্ডনে তার বার এট ল ডিগ্রী করতে পাঠায়। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য ছিলো মাহবুব উদ্দিন খোকন যাতে আমানের দেখাশোনা করে। খোকন প্রভু মওদুদের মতই চলেছিলেন। মওদুদ ক্ষমতায় থাকা কালীন মাহবুব উদ্দিন খোকন কে সব দিয়েছেন । দিয়েছেন অর্থের সন্ধান, সম্পদের সন্ধান,দূর্নীতি কি করে করতে হয় তার কলা কৌশল। সুতরাং আমান মওদুদের জন্য খোকন সাহেব এতটুকু করবে না এটি কখনই হতে পারে না।

ব্যারিস্টার হয়ে খোকন দেশে ফিরে তারেক আর খালেদার পা চেটে চেটে যুগ্ন মহাসচিব হয়েছেন আর এখন ছেলেও ব্যারিস্টার হয়েছে বাবার দূর্নীতি আর কালো টাকায়। একদিন আমার আর আপনার টাকার এই ডিগ্রী ধারী দেশে যাবে । “বাবার বাড়ী তো আমার বাড়ী-ই” , এই সূত্র মোতাবেক নোয়াখালী সোনাইমুড়ি অঞ্চল থেকে এম্পি হবে, খালেদার পা চাটবে,তারেকের পা চাটবে। এটাই সত্য । এটাই স্বাভাবিক । হাজার লক্ষ নেতা কর্মী পড়ে থাকবে রাফি ভাই, রাফি ভাই বলার জন্য। সারাদিন দলের জন্য খেটে খাওয়া গর্দভ তরুণ রাফি ভাইয়ের জন্য তার জীবন শেষ করে দিবেন। আর সাধারণ মানুষের অর্থে লালিত-পালিত হওয়া এই তরুণ ঠিক বাবার পথ আঁকড়ে ধরবে। তার বাবাই হয়ত শিখাবে যে, “দেশের টাকা মেরে খাওয়া হালাল কাজ” কিংবা তার বাবাই তাকে হয়ত বলবে, “আমার মত নেতাকে যে দেশের মানুষ ভোট দেয়, সেই দেশে তুমিও মন্ত্রী হত পারো রাফি, পূত্র আমার। এই গর্দভ জনগণ বড়ই বোকাচোদা”
সাকেব মাহবুব রাফি তাই এখন এল এস ই তে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নেতা হয়ে ওয়ার্ম আপ করে নিচ্ছেন, দেশে গিয়ে আফটার অল ময়দানে নামতেই হবে। পাঠক আপনাদের আরো একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। চিনে রাখুন আপনার নেতাকে।

উপরের এই ছবিতে যে দুইজনকে দেখছেন তাদের নাম জানার আগে তার বাবার নাম জানা দরকার। এই দুইজনের বাবার নাম কর্ণেল ফারুক রহমান। চিনতে পারছেন কি? জাতির জনক কে নির্মম ভাবে যারা কাপুরুষের মত রাতের আঁধারে হত্যা করেছে। যাদের হাতে বাংলাদেশ রঞ্জিত হয়েছিলো ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট। তাদের দলের অন্যতম হচ্ছে এই কর্ণেল ফারুক রহমান। বংগবন্ধুকে হত্যা করে ১৯৮৭ সালে গঠন করে বাংলাদেশ ফ্রিডম পার্টি নামে এক খুনে দল। যাদের প্রধান কাজ ছিলো জামাতের মত দল গঠন করে নিজেদের পাছা বাঁচানো। এই কর্ণেল ফারুক প্রকাশ্য জনসভায় বলেছিলো, “আমিই হত্যা করেছি শেখ মুজিবকে, বাংলাদেশে এমন কোনো মায়ের সন্তান নেই যে, আমাকে বিচার করে”

ভাগ্যের নির্মম সত্যতায় বাংলাদেশের মাটিতেই এই খুনীর পিশাচের বিচার হয়েছে তার দল-বল সহ। কিন্তু খুনী ফারুক তার বীজ রেখে গেছে পৃথিবীতে। এরা এখন নতুন করে শুরু করেছে ফ্রিডম পার্টিকে নতুন করে সাজাবার প্ল্যান। ক্ষমতায় যাবার অংশীদার হিসেবে ভেতরে ভেতরে চলছে বিভিন্ন দলের সাথে আঁতাত।

উপরের ছবিতে প্রথম জনের নাম সৈয়দ তারেক রহমান এবং পরের জনের নাম যুবায়ের ফারুক। তারেক এই মূহূর্তে ফ্রিডম পার্টির চেয়ারম্যান। আরেক খুনী কর্ণেল রশীদের মেয়ে মেহনাজের সাথে এই দলের নেতৃত্ব নিয়ে তুমুল দ্বন্দ । ঠিক যেমনটি দ্বন্দ্ব ছিলো ফারুক আর রশীদের মধ্যে। দুঃখের বিষয় হলো যেই ফ্যামেলী ডাইনেস্টী ডাইনেস্টী বলে ম্যাতকার করেছিলো খুনী ফারুক , তার ছেলেই বাপের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের মত এখন দলের প্রধান। যদিও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ফ্রিডম পার্টি কোনো নিবন্ধিত দল নয়। ফারুকের বড় পূত্র পড়েছে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। পাশ করে বের হয়েছে ১৯৯৬ সালে। এখানে আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে । তা হলো ১৯৭৫ সালে যখন ফারুক-রশীদ বঙ্গবন্ধুকে খুন করে লিবিয়াতে চলে যায় তখন তাদের কাছে তো হিসেব মতে অর্থ থাকার কথা না। একজন আর্মি অফিসারের সর্বোচ্চ বেতন কত? অথচ দেখা গেলো এই দুইজন ( এরা দুইজন আবার ভায়রা ভাই) লিবিয়াতে বিশাল ব্যাবসা “দি কন্সোটিয়ার্স” নামে কন্সট্রাকশনের ব্যাবসা খুলে বসেছে। কই পেলো তারা এই টাকা? তবে কি তারা বঙ্গবন্ধুকে খুন করে দেশের অর্থ লুট করেছিলো?

তার ছেলে ইউনি ভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াতে এভিয়েশন ম্যানেজম্যান্ট এন্ড ট্রেইনিং এর উপরে পড়েছে । সৈয়দ তারেক রহমান পেশায় একজন পাইলট। কিন্তু এই পড়ালেখার টাকা তারা পেলো কোথায়? প্রতি বছরে ওয়েস্টার্ন ইউনি’র টিউশন ফি প্রায় ৪০ হাজার ডলারের মতন। কোথায় থেকে আসলো এই টাকা?
ফারুকের দুই মেয়ে নাজনিন রহমান,শারমিন রহমান টিয়া,আর আরেক ছেলে প্রত্যেকে পৃথিবীর বাইরের সব দেশ থেকে ডিগ্রী নিয়েছে। কোথায় থেকে এলো এই অর্থের সংস্থান? ফ্রিডম পার্টিরই বা অর্থের সূত্র কোথায়? কে কে এই খুনী দলের ডোনার? কর্নেল ফারুকের যখন ফাঁসির আদেশ হয়, তখন সারা পৃথিবীর নেতাদের কাছে চিঠি গিয়েছিলো এই ফাঁসি বন্ধের অনুরোধ করে। লন্ডনে যুবায়ের ফারুক এসেছিলো সংবাদ সম্মেলন করতে, সেখানে পাকিস্তানী রাজাকার ব্যারিস্টার আযাহার আলী এই খুনীর ছেলেকে সব সময়ই ব্যাক-আপ দিয়েছিলো।

আবার ছোট ছেলে যুবায়ের ফারুক পড়ালেখা করেছে আইন বিষয়ের উপর । পি এইচ ডিও করেছে আইনের উপর। কে দিলো এই খরচ? এইখানেই ঘটনা শেষ নয়, নপুংশক এরশাদের সময় একবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিলো যেখানে এই কর্ণেল ফারুকও প্রার্থী হয়েছিলো। সেই টাকার উতসই বা কোথায়?

সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে সে সময় কোটি কোটি টাকা খরচ করেছিলো এরশাদ।
আসলে সব কিছুর উত্তর আসলেই সোজা। যারা দেশের স্থপতিকে কাপুরুষের মত রাতের আঁধারে হত্যা করে ফেলতে পারে তাদের উদ্দেশ্য কোনোদিনি ভালো হতে পারে না। দেশের অর্থ লুট করে ফারুক তার চার পুত্র-কন্যকে পড়িয়েছে । আর নিজে দেশে বসে করেছে রক্তের খেলা।

দেশের অর্থে লালিত পালিত এই হিংস্র খুনীর ছেলেও বাবার মত হিংস্র। ক্ষমতায় এসে রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিতে, তার বাবার রেখে যাওয়া কাজ সম্পাদন করতে বদ্ধ পরিকর এই খুনীর দল ফ্রিডম পার্টি। এরা এখন ধীরে ধীরে গোপনে সংঘটিত হচ্ছে । ফ্রিডম পার্টিকে আবার সেই পুরোনো ফর্মে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে। বাবার অবৈধ টাকা ফূর্তি করে হয়ত বি এনপির সাথে আঁতাত করে জামাতের মত এরাও সামনের নির্বাচনে আসন পাবে। খুনীর ছেলে তারেক কিংবা যুবায়ের হয়ত নির্বাচন করবে। এম্পি হবে।
আপনাদের নেতা হবে এই সৈয়দ তারেক তারেক রহমান কিংবা যুবায়ের ফারুক। চিনে নিন আপনাদের এই মহান নেতাদের।

উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন তার নাম মেহনাজ রশীদ । উপরের গল্পের মতই তার গল্প । ফ্রিডম পার্টিকে সংগঠিত করার জন্য দেশে কাজ শুরু করেছিলো এই মেহনাজ রশীদ। ১৯৭৫ সালের বংগবন্ধুকে হত্যাকারী দলের অন্যতম খুনী কর্নেল রশীদের বড় মেয়ে মেহনাজ রশীদ। তাপস হত্যা প্রচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামী। ১/১১ এর পেছনের বড় কুশীলব ব্রিগেডিয়ার বারীর সাথে তার বিয়ে হয় এবং সে সময় থেকেই মইন ইউ সরকারের গ্রিন সিগনাল পেয়ে ফ্রিডম পার্টিকে শক্তিশালী করার কাজে নামে ফারুকের ছেলে তারেক আর রশীদের মেয়ে এই মেহনাজ। যদিও তারেকের সাথে ছিলো ক্ষমতার প্রবল দ্বন্দ। বারীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায় এক সময় এবং পরবর্তীতে বিয়ে করে আওয়ামীলীগের এক নেতা রফিকুল ইসলাম রাফিকে।

কথা মূলত এখানে নয়। কন্সার্নও এখানে নয়। এই মেহনাজ দেশের বাইরে পড়ালেখা করে। তার বাবা ১৯৯১ সালে একবার এম পি হয় । সে সময় তার দূর্নীতি আর কালোটাকার গরম দিয়েই মেহনাজের বেড়ে ওঠা। সেই মেহনাজ এখন ততপর ফ্রিডম পার্টিকে গুছিয়ে এনে ক্ষমতার মৌতাতে নিজেকে আরো আবদ্ধ করা । খুনী রশিদ কোথায় পেলো এই অর্থ মেহনাজকে পড়াবার? এই অর্থের সূত্র কোথায়? ফ্রিডম পার্টিকে সঙ্গঘটিত করবার খরচই বা মেহনাজ পেলো কোথায়?

যার বাবা ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে মেরে ফেলেছিলো, যার বাবা ১৯৯১ সালে এম্পি হয়ে সংসদে গিয়েছে, দূর্নীতি করেছে, তারই মেয়ে আজ ক্ষমতায় যাবার জন্য হিংস্র হয়ে উঠেছে। কুমিল্লা থেকে তার বাবার আসনে ২০১৩ তে মেহনাজ নির্বাচনে দাঁরাবে তা এক প্রকার নিশ্চিত। কুমিল্লার মানুষ, আপ্নারা তৈরী থাকেন আপনাদের এই নেত্রীকে বরণ করবার জন্য । জানি আপ্নারা পারবেন। আপনাদের সেই রুচি আর ইচ্ছে আছে। আফটার অল, গত কয়েক যুগ তো তাই হয়ে আসছে।

উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন তার নাম ববি রেদোয়ান সিদ্দীকি। শেখ এমমাত্র রেহানার ছেলে। মায়ের দূর্নীতি আর দেশ থেকে মেরে দেয়া কোটি কোটি টাকায় বড় হওয়া এই রাজপূত্র পড়ালেখা করেছে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্সে অর্থনীতিতে। আওয়ামীলীগে কোনো পদ নেই, কোনো দপ্তর নেই কিন্তু অবলীলায় বলে দেয়া যায় তিনি ক্ষমতাধর। গত কয়েকমাস আগে দূর্নীতিবাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারর সফরে যে ১২৪ জনের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে যান, সেই বাহিনীর মধ্যে আমাদের ববি ভাই আছেন। দলে কোনো পদ নেই, তিনি মন্ত্রী নন, এম্পি নন,উপদেষ্টা নন,দলের কেনা বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ের কেউ নন অথচ তিনি সরকারী সফরে প্রধান্মন্ত্রীর সংগী হলেন।শুধু তিনিই নন। তার স্ত্রী পেপ্পি কিভিনিয়েমীও এই সফরে সদস্য হয়েছিলেন।

এই সফরে তারা থেকেছিলেন দিল্লী শেরাটন হোটেলে। যা ময়ুরী হোটেল নামে পরিচিত। আমি উপরে একটা ছবি দিয়ে দেখালাম শেরাটন হোটেলের একটি নুন্যতম সাধারণ কামরার খরচ কত। আর সেখানে নিশ্চই রেহানা পূত্র সাধারণ হোটেলে থাকেনি । এটাই স্বাভাবিক। আমার প্রশ্ন হলো যেই ছেলে ব্রিটিশ নাগরিক, এই দেশের রাজনীতির সাথে যার সামান্যতম যোগাযোগ নেই, রুট লেভেল থেকে যার কোনো অভিজ্ঞতা নেই, যেই ছেলে সরকারের কোনো পদমর্যাদায়ও কেউ নয়, সেখানে এই ছেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী সফরে সংগী হয় কি করে? তার আর তার স্ত্রীর ভারতে থাকা-খাওয়ার খরচ কে দিয়েছে?

এই অর্থ আসে কোত্থেকে প্রিয় পাঠক? এই টাকা কি আপনার বাবার রক্তের পয়সা নয়? এই টাকা কি শ্রমিকের আর মজুরের হক মেরে খাওয়া নয়? শুধু মাত্র হাসিনা ববির খালা কিংবা রেহানার ছেলে হবার কারনেই কি যাবতীয় সকল সুখ আর সম্পদ এই গুটি কয়েক রাজপূত্রের? যদি ববি তার মাকে বলে, মা আমি এম্পি হব, মা আমি মন্ত্রী হব, কোনোদিনো কি এই ববিকে “না” শব্দ টি বলা হবে? কোনোদিনো কি দেশের প্রধান হওয়া এই রাজার পূত্রদের জন্য বাঁধা হবে?

এরা ক্ষমতায় আসলে কি হবে পাঠক? যাদের জীবন ছিলো ফুলের রাস্তায়। যাদের জীবন কেটেছে মেহনতী মানুষের হক মেরে খাওয়া টাকায় তারা কি করে দেশ চালাবে? তারা কি করবে বা কি বলবে সংসদে গিয়ে?

পাঠক, একবার ভাবুন তো! ভাবুন আর ছবির দিকে তাকান। চিনে নেন আপনার নেতা ববি সিদ্দিকী কে।

উপরের ছবি দুইটিতে যেই সুটেড বুটেড দুই ভদ্রলোককে দেখা যাচ্ছে , তাদের ১ম জনের নাম শেখ ফজলে ফাহিম সুভাষ এবং ২য় জনের নাম ব্যারিস্টার শেখ নাঈম। হয়ত একটু আন্দাজ করতে পারছেন কে তারা। তারা আর কেউ নন, বিশিষ্ট চোর আর দূর্নীতি বাজ নেতা শেখ সেলিমের দুই পূত্র। শেখ সেলিমকে দূর্নীতিবাজ বলাতে আপনাদের কারো কারো খারাপ লাগছে নাতো! যদি লেগে থাকে তবে এই ভিডিওটি শুনে নেবার আহবান জানাই।

ফজলে ফাহিম সুভাসের রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হলেও শেখ সুভাসের ভবিষ্যতে রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দিচ্ছে না গোপালগঞ্জবাসী । গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের অপ্রতিরোধ্য ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চন্দ্রদীঘলিয়া হাইস্কুল মাঠে স্থানীয় এলাকাবাসী সম্প্রতি সুভাসকে পরিচয়ও করিয়ে দিয়েছে আগামীর নেতা হিসেবে । শেখ সুভাস যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে বিবিএসহ পলিটিক্যাল ইকোনমিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। বিয়ে করেছেন বিশিষ্ট রাজাকার নুলা মুসা ওরফে প্রিন্স মুসার মেয়ে ন্যান্সি কে। স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির কি চমতকার বৈশিষ্ট্য!!!

ছোট ছেলে শেখ নাইম তার বার এট ল ডিগ্রী করেছেন লন্ডন থেকে। বিয়ে করেছেন ২০০৯ সালের ১৬ ই জুলাই বি এনপির সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর মেয়ে সারাহ হাসিন মাহমুদকে। লন্ডনে থাকা অবস্থায় কোনো কাজ করতেন না আমাদের নাঈম ভাই। সেন্ট্রাল লন্ডনের একটি ফ্ল্যাটে মাস্তি আর আরাম করে কাটিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন আমাদের এই রাজপূত্র। পরিশ্রম নেই, কষ্ট নেই, দুঃখ নেই।

শুধু বাবার চুরি করা অর্থ আর মানুষের হক মেরে দেয়া টাকা দিয়ে দুই ভাই এখন অনেক শিক্ষিত। আমার ভাই তোমার ভাই ফাহিম ভাই ফাহিম ভাই কিংবা আমার ভাই তোমার ভাই নাঈম ভাই নাঈম ভাই। কি শান্তি!!! কি মজা !! আহা…

আমরা কুত্তার বাচ্চা জনগণ শুধু বসে বসে এগুলো দেখতে থাকি । পাঠক বেশী কিছু বললাম না আর। বলার ভাষা আস্তে আস্তে হারাচ্ছি। রাগে শরীর কাঁপতে শুরু করেছে। আপ্নারা বরং গোপাল্গঞ্জীয় এই দুই হবু নেতার জন্য রাস্তা সাজাতে থাকেন। রাজারা আসছে…

উপরের যে হাস্যমুখী মোটা ধরনের ছেলেটাকে দেখা যাচ্ছে, তাকে আপ্নারা অনেকেই চেনেন। ভাইজানের নাম আব্দুল হামিদ পবন। উনার বাবার নাম খন্দকার দেলোয়ার। এখনো যদি চিনতে না পারেন তবে একটু মনে করিয়ে দেই, আপনাদের মনে আছে বি এন পিতে একজন মাতাল ও মদখোর লোক এতদিন মহাসচিব ছিলেন? কথা বলার সময় যার পায়জামা খুলে পড়ে গিয়েছিলো। এই পায়জামা খোলা দেলোয়ারের ছোট পূত্রই হচ্ছে আমাদের আখতার হামিদ পবন। কালের কন্ঠ পত্রিকা এই পবন সাহেব কে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলো। আপনাদের জন্য লেখার কিছু অংশ তুলে দিলাম-

রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থানে না থাকলেও গত এক দশকে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন আখতার হামিদ পবন। কখনো অস্ত্রবাজি, কখনো গাড়ি চুরি, কখনো বা দুর্নীতি, জবরদখলে তার নাম এসেছে। অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ শুনে প্রকাশ্যে বিচারককে হুমকিও দিয়েছেন তিনি। পুলিশের হাতে কয়েক দফা ধরা পড়লেও বিশেষ মহলের হস্তক্ষেপে কারাগারে তাকে থাকতে হয়নি বেশি দিন।
জামিনে বেরিয়ে আবারও ঘটিয়েছেন অপকর্ম। বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে পবনকে আবারও খুঁজছে পুলিশ। এবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের অফিসের সামনে ‘বোমা হামলা নাটক’ সাজানোর মূল হোতা হিসেবে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অফিস গেটে বোমা বিস্ফোরণ ঘটনার পর বুকে ব্যথা নিয়ে পবন ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। বিস্ফোরণ ঘটনায় জড়িতরা তাঁর নাম প্রকাশ করে দিলে দুদিন পরই তিনি আত্দগোপন করেন। তাঁর পুরান ঢাকার বাসা, মানিকগঞ্জের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালাচ্ছে পুলিশের একাধিক দল।
পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত এক দশকে আখতার হামিদ পবনের বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ এলেও মামলা হওয়ার সংখ্যা হাতে গোনা। চারদলীয় জোট সরকারে থাকাকালে কিছু করা যায়নি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে। আর অন্য সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের কিছুটা শিথিলতা দেখাতে হয়েছে খোন্দকার দেলোয়ারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে। বিচিত্র অপরাধে যুক্ত পবনের বিশেষ সিন্ডিকেট সক্রিয় আছে ঢাকা ও মানিকগঞ্জে। মূলত খোন্দকার দেলোয়ার যখন চিফ হুইপ ছিলেন, সে সময়ই পবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বেশি।

সর্বশেষ ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর র‌্যাব-৪ আখতার হামিদ পবনকে মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। আগের রাতে শাহ আলী বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে একটি রিভলবার ও একটি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করা ছিনতাইকারী আনোয়ার ও অপু স্বীকারোক্তি দিয়েছিল, পবনই তাদের অস্ত্র দিয়ে এ কাজে পাঠিয়েছে। পরের বছর এ মামলায় ঢাকার মহানগর বিশেষ আদালতের বিচারক মো. সফিউল আজম অবৈধ অস্ত্র ও গুলি রাখার অপরাধে পবনসহ পাঁচ আসামিকে ১৭ বছর কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার পর পবন বিচারককে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এ রায়ের ফল তোর সন্তানের ওপর দিয়ে যাবে।’ উচ্চ আদালতে আপিল করে পরে পবন জামিনে মুক্তি পান।

২০০৫ সালের ১৩ অক্টোবর মতিঝিলের আমিন কোর্টের সামনে থেকে ব্যবসায়ী কাজী মিজানুর রহমান পিন্টুর গাড়ি ছিনতাই করেছিল পবন সিন্ডিকেট। পবনকে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। পরের বছর ৭ জুন বেইলি রোডের একটি ফাস্ট ফুডের দোকান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পবনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ১৭ জানুয়ারি পবন হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পালিয়ে যান।

বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ারের বেপরোয়া এ ছেলে রাজধানীর হাতিরপুলে মোতালিব প্লাজায় দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির কারণে কয়েক দফা সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন। দ্রুত বিচার আইনে এ-সংক্রান্ত চারটি মামলাও হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পবন বাহিনীর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির ব্যাপারে পুরান ঢাকার আরমানিটোলা ও মিটফোর্ড এলাকার বাসিন্দাদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি একটি ব্যবসা কেন্দ্রে গোলাগুলির সময় পবনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। পবনের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, বাবা খোন্দকার দেলোয়ার ও মা সাহেরা হোসেনের প্রশ্রয়ে কিশোর বেলা থেকেই বখে যায় পবন। তাঁর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের কন্যা অপহরণ, তরুণীকে ১০ দিন আটকে রেখে নির্যাতন, একাধিক গোপন বিয়েসহ নানা অভিযোগ রয়েছে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে। ২০০২ সালের শিবালয় থানার মহাদেবপুর বাজারে ৩০ শতাংশ জমি দখল করেন পবন। তখন এলাকাবাসী বিক্ষোভ করলেও বাবা-মা পবনের পক্ষ নেন। তাঁর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের ঘিওর-শিবালয়সহ আশপাশ এলাকায় চাঁদাবাজি ও জমি দখলের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

পবনের বিরুদ্ধে রয়েছে দুদকের মামলাও। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে রমনা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি এখন বিচারাধীন।

এই পবন সাহেব কিন্তু বি এনপির বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে ধরে দলের একটি পদ প্রায় বাগিয়ে এনেছিলো । দূর্ভাগ্য যে, বোমা হামলার নাটক সাজাতে গিয়ে ধরা পরে গেলো আমাদের পবন ভাই। আমি অবশ্য নিশ্চিত, এবং পাঠক আপ্নারাও বুঝতে পারবেন, এই পবন রাজনীতিতে আসবার জন্য যেখানে বোমা হামলার নাটক সাজাতে পারে, যেখানে পিন্টুর মত খুনী আর সন্ত্রাসী এম পি হতে পারে, সেখানে পবন ভাই কি দোষ করেছে । দেশ তো এইসব শুয়োরের বাচ্চাদের জন্যই । তাই না?

সুতরাং মানিকগঞ্জ বাসী, তৈরী হয়ে যান, নেতা আসিতেছে…

উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন সেই ভাইয়ের নাম আবেদ হাসান মাহমুদ । বি এন পি’র সাবেক বিদ্যুত মন্ত্রী এবং সিরাজগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এম পি ইকবাল হাসান মাহমুদের ছেলে। এই ইকবাল হাসান মাহমুদের সম্পর্কে খানিকটা জেনে নিন। টুকু ছিলো শেখ কামালের পেয়ারি দোস্তো। বিদ্যুত মন্ত্রী ঠাকা অবস্থায় তার দূর্নীতির সম্পর্কে জানা যায়-

সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর অবৈধ অর্থের সন্ধানে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে টুকু ২৮ কোটি ৫২ লাখ ১৫ হাজার ২শ’ কালো টাকা সাদা করেছেন। টাস্কফোর্সের কাছে অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপ্রদর্শিত ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার কোন হিসাব দিতে পারেননি তিনি। এ অর্থের একাংশ তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ, পুত্র আবেদ হাসান মাহমুদ, কন্যা সাহারা হাসান মাহমুদের যৌথ মালিকানায় অ্যাপেক্স জার্সি ও অ্যাপেক্স ফেদার লাইট লিমিটেড নামে গচ্ছিত রাখেন। এ অবৈধ অর্থ গচ্ছিত রাখার ঘটনা টাস্কফোর্সের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। টাস্কফোর্সের সদস্যরা টুকুর অবৈধ অর্থের উৎস সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, টুকুর অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপ্রদর্শিত ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৪৩৫ টাকার মধ্যে স্ত্রী রুমানা মাহমুদ (৫৫), ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যাপেক্স উইভিং এন্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেডের মালিকানায় মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পুত্র আবেদ হাসান মাহমুদ (৩০), ডিরেক্টর অ্যাপেক্স জার্সি ও অ্যাপেক্স ফেদার লাইট লিমিটেড এবং কন্যা সাহারা হাসান মাহমুদের (২৪) যৌথ মালিকানায় ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৫৪০ টাকা, মেয়ের নামে পৃথক ২০ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৮ টাকা গচ্ছিত রেখে অবৈধ অর্থ গোপনের চেষ্টা করেন। সূত্র জানায়, টুকু তার সম্পদের হিসাব ও উৎস সম্পর্কে তথ্য গোপন রাখলেও টাস্কফোর্সের তদন্তে তা বেরিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত টুকুর স্ত্রী, পুত্র-কন্যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ৪ ফেব্র“য়ারি যৌথ বাহিনী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে গ্রেফতার করে। কারাবন্দি টুকুর পক্ষে তার ছেলে সম্পদের বিবরণী দুদকে দাখিল করেন। দাখিলকৃত প্রায় ৩৬ কোটি টাকার সম্পদের মধ্যে ২৮ কোটি ৫২ লাখ ১৫ হাজার ২শ’ কালো টাকা ছিল। সূত্র জানায়, আয়কর আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে টুকুর নামে প্রায় ৮ কোটি টাকা, তার স্ত্রীর নামে ৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং ছেলের নামে ১৫ কোটি ১৫ লাখ কালো টাকা সাদা করা হয়।

এখন সাম্প্রতিক খবর হচ্ছে, আমাদের আবেদ ভাইজান রাজনীতিতে আসতে চান। বাবা তাকে সিরাজ গঞ্জে নিয়ে ভোদাই জনগনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন । বি এন পি থেকেও গ্রীন সিগনাল দেখা যাচ্ছে। বাবার অমেজ সঙ্কটের মোকাবেলা এখন দূর্নীতির টাকায় বেড়ে ওঠা আবেদকেই করতে হবে । এম্পি আর নেতা হওয়াটা এখন যেন আব্দারের মতনই। আমটি আমি খাবো পেড়ে, সেই ছোট বেলার রাইমের মত। চুরি করে ধরা পড়লো কোটি কোটি জনতার সামনে, জেল হলো, সাজা হলো কিন্তু জা হলো না, তার নাম লজ্জা ।

এইসব নেতাদের কোনোদিন লজ্জা হয়নি হবেও না। কেন জানেন, কারণ আপ্নারাই এদের ভোট দিবেন লাফিয়ে লাফিয়ে। তাই আগে ভাগেই বলি, আমার ভাই তোমার ভাই, আবেদ ভাই আবেদ ভাই।

পাঠক দুঃখিত আজকের পর্ব এত বড় হয়ে গেছে । কথা দিলাম পরের বার অল্প অল্প করেই বলব । এখনো তো বড় বড় রথী মহারথীদের গল্প শোনেনই নি। সেগুলো না বলে কি করে শেষ করি এই সিরিজ ?

জানি আপ্নারা খুব মজা পাচ্ছেন এই লেখা পড়ে, আবার কেউবা রাগ করছেন অফসাইডের উপর, কেউবা সাথেই আছেন । আপ্নারা সবাই এই লেখার কথা ভুলে যাবেন খুব শিঘ্রী । কারন আপনি বাংলাদেশী । আমরা বাংলাদেশীরা খুব দ্রুত ভুলে যাই আমাদের ধরে ধরে এইসব ধর্ষনের কথা, এইসন মৌন অত্যাচারের কথা । আমরা এই জনগণই ঠিক দুইদিন পর এদের ভোট দিতে যাব। আমি আপনার সাথে বাজি ধরতে পারি এই ব্যাপারে।

আপ্নারা যারা এই লেখা এইমাত্র পড়ে শেষ করলেন, তাদের একটা প্রশ্ন করি ?

আপ্নারা একটু আয়নার সামনে গিয়ে দেখেন তো! একটু ভেবে দেখুন তো, আপ্নিও মানুষ ওইসব রাজার সন্তানরাও মানুষ,আপনার হাত আছে,পা আছে,চোখ আছে,নখ আছে,ঠোঁট আছে ঠিক ওদেরই মতন। অথচ, আমরা ওদের থেকে এত আলাদা কেন?

সব সুখ কেন ওদের? এই দেশটা কেন শুধু ওদের ? বলেন তো!!!


 

পোস্টাইছেন: অফসাইড » ১২ জুন, ২০১০, শনিবার, ০৯:৩৯ প্রথমভাগ

(offside000@gmail.com)