২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার পুলিশী তদন্ত শুরু অভিযোগ দায়ের করে বিপাকে আওয়ামী সমর্থিত নির্যাতিতরা

নির্যাতিতরা থানায় সাধারন ডায়েরী করেন। কমিশনে দেয়া নির্যাতিতদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিশন গৌরনদীর আলোচিত ৭৪ ও আগৈলঝাড়ায় ৪০টি অভিযোগ তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ অভিযোগ তদন্তের কাজ শুরু করেছেন। আর এতে করে পূর্ণরায় বিপাকে পরতে হয়েছে অভিযোগকারীদের।

খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা প্রনব রঞ্জন দত্ত, নলচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মাখন চন্দ্র হালদার, আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম হেলাল মিয়াসহ একাধিক নির্যাতিতরা জানান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চারদলীয় জোটের ক্যাডাররা (২০০৪ সালে ২ এপ্রিল) গৌরনদী বাসষ্ঠ্যান্ডে তার (শেখ হাসিনার) গাড়ি বহরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ওই ঘটনায় ২০০৯ সালের ২০ জুলাই একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিরা আগাম জামিনে বেরিয়ে এখন বীরদর্পে ঘোরাফেরা করছে। তারা ক্ষোভের সাথে আরো বলেন, খোদ প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলা ও ভাংচুর মামলার আসামিরা আগাম জামিন লাভ করে। আমাদের মত একজন সমর্থকের অভিযোগের কি দাম আছে ?

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া থানার একাধিক উপ-পরিদর্শক (এস.আই) জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা কয়েকটি স্থানে সরেজমিনে তদন্তে যান। অভিযোগকারীরা অনেকেই তাদের কাছে ভয়ে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না।
তদন্ত কমিশনে অভিযোগকারী আলমগীর হোসেন, কামাল মোল্লাসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, তদন্ত শেষে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ফিরে আসার পর পরই অভিযুক্তরা মামলা না করাসহ তাদের নাম না বলার জন্য নির্যাতিতদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভিতী প্রদর্শন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল তদন্ত কমিশন গৌরনদী উপজেলার ২’শ ও ১২ এপ্রিল আগৈলঝাড়া উপজেলার ১৬০ জন নির্যাতিতদের কাছ থেকে লিখিত জবান বন্দি গ্রহন করেন। এরমধ্যে গৌরনদীর আলোচিত ৭৪ ও আগৈলঝাড়ার ৪০ জন নির্যাতিত ব্যক্তির অভিযোগ তদন্তে গত ২১ জুলাই তদন্ত কমিশন গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যও বলা হয়। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নুরুল ইসলাম ও আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ অশোক কুমার নন্দি তদন্ত কমিশনের নির্দেশ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, থানার অফিসাররা সরেজমিনে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোটের নেতা-কর্মী ও ক্যাডারদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার আওয়ামীলীগ সমর্থিত ৫ শতাধিক পরিবার। ওইসময় প্রানের ভয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত নেতা-কর্মীরা বাড়ি ঘর ছেড়ে গোপালঞ্জের রামশীল ও কালকিনির দর্শনাসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল। যারা বাড়িতে ছিল তারা জোট ক্যাডারদের দাবিকৃত মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে বাড়িতে থাকতে হয়েছে।