পতিত জমিতে এবারই সর্বপ্রথম সূর্যমূখী ফুলের চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন জেলার গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের একাধিক কৃষক। ফলে কৃষকের মুখে সূর্যমুখী ফুলের মতো হাসি ফুটে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাহিলাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেজহার ও বিল্বগ্রাম এলাকার একাধিক পতিত জমিতে সূর্যমূখি চাষের চিত্র। সূর্যমুখির হলুদ ফুল এখন শোভা পাচ্ছে কৃষকের মাঠ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে লকডাউনের মধ্যে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষকের মাঠে ভীর করছেন ফুলপ্রেমিরা। তারা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ফুলের সাথে সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
পশ্চিম বেজহার গ্রামের কৃষক আবদুল লতিফ সিকদার জানান, মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহায়তায় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার নিয়ে ৩২ শতক পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। প্রথম বছরেই ফলন ভাল হওয়ায় তিনি লাভবান হওয়ার আশা করছেন।
বিল্বগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ছাত্তার হাওলাদার জানান, কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়ে ৩৩ শতক জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। সূর্যমূখী চাষে কম খরচে লাভ বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ফুলপ্রেমি বিপাশা গুহ বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন থেকে সন্তানদের নিয়ে বিনোদনের জন্য কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তাই সন্তানরা ঘরবন্দি জীবন যাপন করে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে পরেছে। তারমধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চলমান কঠোর লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখতে পাই গ্রামের মধ্যে সূর্যমুখীর নজরকাড়া ক্ষেত। তাই সন্তানদের নিয়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে সূর্যমুখী ফুলের সাথে বেশ কিছু সেলফি তোলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের কৃষিবান্ধব চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু বলেন, ইউনিয়নের সকল পতিত জমিগুলোকে চাষের আওতায় আনার জন্য কৃষি বিভাগকে সাথে নিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ। তারই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়নের আবদুল লতিফ ও ছাত্তার হাওলাদারসহ কয়েকজন আদর্শ কৃষক পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। সূর্যমুখীর তেল স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় স্থানীয়ভাবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, উপজেলার ১৩ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১০জন কৃষকদের প্রনোদনার মাধ্যমে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ সহায়তাসহ কৃষি কাজ করে লাভবান হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।