গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র দালালদের দখলে ॥ রোগীদের হয়রানি

সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল উত্তর জনপদের একমাত্র গৌরনদী মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রে এলাকার দরিদ্র ও সাধারন রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে বিনামূল্যে গর্ভবর্তী সেবা, এম.আর সেবা, ৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের সেবা, প্রজনন তন্ত্রের সেবা/যৌনবাহিত রোগের সেবা, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক পরামর্শ প্রদান, জন্ম নিরোধক ইনজেকশন, ভাসেকটমি, গর্ভোত্তর সেবা, নবজাতকের সেবা, এ.আর.ই সেবা, ভিটামিন এ ক্যাপসুল বিতরন, জন্মনিয়ন্ত্রন চিকিৎসা, কপারটি, টিউবেকটমি (স্থায়ী পদ্ধতি)সহ নারীদের সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা রয়েছে।

আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব সুজনকাঠী গ্রামের হানিফ মোল্লার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৫) জানান, তার পুত্রবধূ গর্ভবতী শাহনাজ বেগম গত ২০ জুলাই অসুস্থ্য হয়ে পরে। ওইদিন রাত ১১ টার দিকে অন্তঃস্বত্তা শাহনাজকে নিয়ে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে প্রবেশের সময় কেন্দ্রের সম্মুখের চাঁদশী মেডিকেল হলের মালিক মাসুদ হাসান মিঠু তাদের গতিরোধ করেন। মিঠু কৌশলে ডাক্তার আব্দুস সামাদের কোয়ার্টারে শাহনাজকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মিঠু তাদের চিকিৎসার বিষয়ে নানাভয়ভীতি দেখিয়ে ৫ হাজার টাকার চুক্তিতে ওই রাতেই অপারেশনের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বাকি টাকায় শাহনাজকে সির্জার অপারেশন সম্পন্ন করা হয়।

তিনি আরো জানান, অপারেশনের পরেরদিন (২১ জুলাই) জানতে পারেন এ কেন্দ্রে সির্জার অপারেশন বিনামূল্যে করা হয়। পরবর্তীতে মিঠুর সাথে চুক্তির টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় মিঠু তাকে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে অব্যাহত চাপের মুখে তারা পুরো চুক্তির টাকা দিতে বাধ্য হন। একই ভাবে বাঙ্গিলা গ্রামের মুজাহার হাওলাদারের স্ত্রী ঝুমকার কাছ থেকে ৭ হাজার, গৈলা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী পারভীন বেগমের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকাসহ একাধিক রোগীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

কুতুবপুর গ্রামের বারেক খলিফার স্ত্রী তানিয়া বেগম জানান, স্থানীয় কতিপয় ঔষধ ব্যবসায়ী, হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারীরা ডাক্তারের ও এফডব্লিউভির যোগসাজসে দুরদুরান্ত থেকে আসা সাধারন রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একথা শুধু তানিয়ার একার নয় একইভাবে জানালেন, মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা সুফিয়া বেগম, রিনা বেগম, লাকি বেগম, মিতালী চক্রবর্তীসহ অনেকেই।

অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় ঔষধ বিক্রেতা মাসুদ হাসান মিঠু বলেন, আমার কাছ থেকে বাকিতে নেয়া ঔষধের দাম চাইতে গেলে আনোয়ারা সাথে বাকবিতন্ডা হয়। দালালদের সাথে যোগসাজস ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের ইনচার্জ ডাক্তার আব্দুস সামাদ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।

উল্লেখিত অভিযোগের ব্যাপারে বরিশাল জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।