যুবলীগ নেতার বিয়ে!!!

উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের রিক্সা চালক শাহ আলম খান জানান, তার মেয়ে শাহনাজ আক্তার (১৪) পিঙ্গলাকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী । দীর্ঘদিন থেকে তার কন্যাকে পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী ভাষাই সরদারের পুত্র ও নলচিড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন মোহন (৪০) স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করে আসছিল। শাহানাজ গত ২০ মার্চ স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দলীয়ভাবে বৃত্তি দেয়ার কথা বলে শাহনাজের কাছ থেকে একটি সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহন করে এবং মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে শাহনাজের ছবি তোলেন। গত ২২ মার্চ নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শাহনাজের বড় ভাই পরিচয় দিয়ে মোহন প্রতারনার মাধ্যমে তার জন্মসনদ উত্তোলন করে। নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উত্তোলন করা জন্মসনদে শাহনাজের বয়স দেখানো হয়েছে ১৮ বছর।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা মোহন দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে স্বাক্ষরিত ষ্ট্যাম্প, ছবি ও জন্মসনদ দিয়ে গত ৭ জুন বরিশালের নোটারী পাবলিকের এডভোকেট মোঃ জাকির হোসেনের কাছ থেকে একটি কোর্ট ম্যারিজের হলফনামা নিয়ে আসে। গত ৩ জুলাই মোহন তার সহযোগীদের নিয়ে তার বাড়িতে আসে। এসময় নোটারীর কাবিন দেখিয়ে শাহনাজকে তার স্ত্রী দাবি করে টানাহেচরা শুরু করেন। এসময় তাদের চিৎকারে পাশ্ববর্তী বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বীরদর্পে চলে যায়। পরেরদিন (৪ জুলাই) স্কুল ছাত্রী শাহনাজ বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করে। এ ঘটনার পর গত ৯ জুলাই যুবলীগ নেতা মোহন তার সহযোগীদের নিয়ে বাড়িতে গিয়ে শাহনাজকে খুঁজতে থাকে। এসময় তাকে না পেয়ে শাহনাজের বাবা-মাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ তাদের শারিরিক লাঞ্চিত করে। স্কুল ছাত্রীর মা মাজেদা বেগম বলেন, মোহন তার ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে বলে গেছে, যদি শাহনাজকে তাদের হাতে তুলে দেয়া না হয় তাহলে ভয়াবহ পরিনতি ভোগ করতে হবে। সোমবার দুপুরে পুনর্রায় মোহন তার সহযোগীদের নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে শাহনাজকে আগামি ৭ দিনের মধ্যে তাদের হাতে তুলে দিতে বলে নতুবা বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

অভিযোগের ব্যাপারে নলচিড়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মো. মহিউদ্দিন মোহনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি হুমকি ও ভয়ভীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি শাহনাজকে স্ত্রী দাবি করে বলেন, শাহনাজের সাথে তার বৈধভাবেই বিয়ে হয়েছে। মোহনকে শাহনাজের ১৮ বছর বয়সের ভুয়া জন্মসনদ দেয়া প্রসংগে নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেকান্দার আলী মৃধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আত্মীয় পরিচয় দিয়ে যেভাবে জন্মসনদ পাওয়ার আবেদন করেছে সে অনুযায়ী দেয়া হয়েছে। পিঙ্গলাকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন এ প্রসংগে বলেন, একটি মেধাবী মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে এলাকা ছাড়তে বাধ্যা করা হয়েছে, আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নুরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে যত ক্ষমাসীনই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।