পলাতক ছয় খুনির সন্ধানে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক উদ্যোগ চলছে সমানতালে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের চিন্তাও রয়েছে সরকারের। এ দুইটি দেশে দুইজন খুনী রয়েছে। দেশ দুইটির সঙ্গে আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তি সম্পাদিত হলে দুইজনকে সহজেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আর ইন্টারপোল নোটিসে সাড়া পাওয়া গেলে অন্য চারজনের অবস্থান পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। সরকারের অবস্থান হল- কূটনৈতিক সুসম্পর্ক ও পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে আস্থায় এনে ছয় খুনীকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা। সূত্র দৈনিক ইত্তেফাক (১৫ আগস্ট)।

সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স প্রায় এক বছর ধরে খুনীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কাজ করছে। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় এবং কয়েকটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বয়ে গঠিত এই টাস্কফোর্সের আহবায়ক হলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। এই টাস্কফোর্স এত দিনে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। টাস্কফোর্স সময়ে সময়ে সরকারি সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। টাস্কফোর্সের প্রধান আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ গতকাল শনিবার ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে বলেন, খুনীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কাজ চলছে। সরকার বসে নেই। এ পর্যন্ত অগ্রগতি সন্তোষজনক। আইনী ও কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। সেসব দেশের অভ্যন্তরীণ আইনী প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রায় তিন যুগ ধরে ওরা বিদেশে আছে। এর মধ্যে এক যুগ ছিল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কূটনীতিক হিসাবে। সেই সুযোগে তাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ বেড়েছে। কেউ কেউ শিকড় গেড়ে বসেছে। শিকড় উৎপাটন করে আনা সময়সাপেক্ষ। তবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ১২ জন খুনীর মধ্যে বিদেশে পালিয়ে আছে ছয়জন। এ ছয় জন হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও মোসলেহউদ্দিন খান। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডায় আছে। সে শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় চাইলে কানাডা সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে। অভিবাসন আইনের আওতায় নূর চৌধুরী আদালতে আপিল করেছে। আপিল নিষ্পত্তি হলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে কানাডা সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলস-এ আছে অপর খুনী রাশেদ চৌধুরী। তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। পালিয়ে বেড়ানো অপর চারজন খন্দকার আবদুর রশিদ, আবদুল মাজেদ, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেহউদ্দিন খান পাকিস্তান, লিবিয়া ও কেনিয়ায় থাকলেও তারা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এ বছরের ২৭ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঁচ খুনীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। তারা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন (ল্যান্সার), কয়েক বছর আগে জিম্বাবুইতে মারা গেছে আজিজ পাশা।