দেবী মনসার নির্দেশে অলৌকিক অগ্নিপরীক্ষা দিলেন সুখদেব

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ বিশ্বাসের পুত্র সুখদেব বিশ্বাস দেবী মনসার স্বপ্নে প্রাপ্ত নির্দেশে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মনসা পূজার দিন অগ্নিকুন্ডের আয়োজন করেন। সুখদেব পেশায় একজন মিষ্টির কারিগর। বর্তমানে তিনি সংসারের প্রতি উদাসীন। সংসার জীবনে সে ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাকে এ পরীক্ষার জন্য স্ত্রী সুলতা বিশ্বাসসহ বাড়ির লোকজনে নিষেধ করলেও সুখদেব মনসার নির্দেশে ছিলেন অনড়। দেবীর নির্দেশে পূজার পূর্ব রাত্র থেকে অগ্নিপরীক্ষা পর্যন্ত তিনি আহার এবং কথা বলা থেকে বিরত ছিলেন।
সুখদেব জানান, খুলনায় মিষ্টির দোকানে কাজ করার সময় থেকেই সে মনসা দেবীর পূজা-অর্চনা করে আসছেন। বিগত ৫ বছর পূর্বে বাড়ি ফিরলে দেবী মনসা তার বসতঘরের এক কোণে জাগ্রত হয়। প্রথমে ঘরে পূজা শুরু করলেও দেবীর নির্দেশে ঘরের পাশে সুখদেব আলাদা একটি মন্দির নির্মান করে পূজা-অর্চনা করতে থাকেন। এরমধ্যে তিনি মনসা দেবীর ভক্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেন। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন লোক বিভিন্ন সমস্যা ও রোগবালাই নিয়ে তার কাছে এসে উপকৃত হন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সুখ দেবের শিষ্যসহ হাজার-হাজার ভক্তরা অলৌকিক এ ঘটনা দেখতে জমায়েত হতে শুরু করেন। সবাই রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষায় ছিলেন অলৌকিক এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য। অবশেষে হাজার-হাজার লোকের উপস্থিতিতে তার বাড়ির মন্দিরের সামনে ১০ মন লাকড়ি পুড়িয়ে ১০ হাত দৈর্ঘ্যরে জ্বলন্ত কয়লার অগ্নিকুন্ডে সুখদেব হেঁটে ৫ বার প্রদক্ষিণ করেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার নৈয়ারবাড়ি গ্রামের অপূর্ব জয়ধরের মা উর্মিলা জয়ধর বলেন, আমার ৯ বছরের নাতী অতীশ জয়ধর মানসিক ও শারিরীক প্রতিবন্ধ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তার চিকিৎসার জন্য দেশের ও ভারতের একাধিক ডাক্তার বিফল হলে আমরা কবিরাজী চিকিৎসায়ও ব্যর্থ হই। এক পর্যায়ে লোকমুখে সুখ দেবের নাম শুনে তার স্মরণাপন্ন হলে তার (সুখদেবের) চিকিৎসায় অতীশ জয়ধর আরোগ্য লাভ করে। অগ্নিকুন্ড প্রদক্ষিণ শেষেও সুখ দেব ছিলেন সুস্থ্য ও স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে রাজিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন সিকদার বলেন, ঘটনাটি অলৌকিক। আমি নিজেও তা প্রত্যক্ষ করেছি। এরমধ্যে প্রতারণার কোন আশ্রয় নেই।