আগামিকাল ভয়াল ২১ আগস্ট ॥ “সেন্টু ভাই ছিলেন আমাদের অহংকার”

মানুষকে ভালবেসে আপন করে নিতেন। তার অনুপস্থিতি আজ মুলাদীকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, রয়ে গেছে তার সকল স্মৃতি”। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামীলীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহসম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শহীদ মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টুর স্মৃতিচারন করতে গিয়ে কান্নাজাড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও মুলাদী উপজেলার রামারপোল গ্রামের মোঃ রাজিব হোসেন ভূইয়া রাজু।

 

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও বরিশালের মুলাদী উপজেলার রামপোল গ্রামের মরহুম আফসার উদ্দিন হাওলাদারের ৭ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানের মধ্যে সেন্টু ছিলেন ৬ষ্ঠ। তার মাতা মিসেস মনোয়ারা বেগম গৃহিনী। স্ত্রী আইরিন সুলতানা বেবী মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কর্মকর্তা। একমাত্র কন্যা আফসানা আহম্মেদ হৃদি উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের চতুর্থ শ্রেনীতে অধ্যায়নরত।

পারিবারিক ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র জীবন থেকেই মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু আওয়ামীলীগের রাজনিতীর সাথে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে কখনোই তিনি নিজের কথা ভাবেননি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশপ্রেম মমতার ছাঁপছিলো তার মাঝে। তাই তার সব সময় চিন্তা ছিলো দেশের উন্নয়নকে ঘিরে।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম হেলাল মিয়াসহ একাধিক আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করেন। তৎকালীন সময় এখানকার বিএনপি দলীয় ক্যাডাররা নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অপরাধে আওয়ামীলীগ সমর্থক নেতা-কর্মীদের ওপর এমনকি তাদের বাড়ি-ঘরে অর্তকিত ভাবে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করে। বিএনপি ক্যাডারদের নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এতদাঞ্চলের হাজার-হাজার আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থক বাড়ি ঘরে ছেড়ে পালিয়ে যায়। সে সময় আওয়ামীলীগ সমর্থকদের পালানোর একমাত্র নিরাপদ রুট ছিলো গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী রামারপোল দিয়ে লঞ্চযোগে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার। ওইসময় মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রামারপোল এলাকায় তার লোকজন নিয়ে বসে থেকে বরিশাল-১ আসন থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামীলীগ সমর্থকদের নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামীলীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় সেই মহান নেতা মোস্তাক আহম্মেদ সেন্টু মাত্র ৩৬ বছর বয়সে শহীদ হন।