জীবন যুদ্ধে পরাজিত

কন্যা সন্তানকে নিয়েই ছিলো কাঞ্চন বেগের সংসার। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় কাঞ্চন আলী প্রতিনিয়ত এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। দিনমজুরের কাজ করেও কাঞ্চন আলী স্বপ্ন দেখেছিলেন ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার। কিন্তু সে স্বপ্ন তার স্বপ্নই রয়ে গেছে। তার বড়পুত্র শহিদুল ইসলাম সোহেল ছিলো মেধাবী ছাত্র। ২০০১ সালে উপজেলার বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশের পর তার পুত্র সোহেল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে। গৌরনদীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পুত্রকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে কাঞ্চন বেগ ধারদেনা এমনকি পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পরেন। বর্তমানে অর্থাভাবে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে রনাঙ্গণ কাঁপানো বীর মুক্তিযোদ্ধা কাঞ্চন বেগ ও তার পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসকরা বলেছেন সোহেলের উলসান রোগ হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তাকে ভারতের মাদ্রাজে নিয়ে চিকিৎসা করানো না হলে তাকে আর বাঁচানো যাবেনা। যেখানে নিজেই নানারোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন সেখানে নিজের জীবনের কথা না ভেবে জীবন সায়াহেৃর শেষ প্রান্তে মুক্তিযোদ্ধা কাঞ্চন বেগ তার বড় পুত্র সোহেলকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তশালীদের কাছে হাত পেতেছেন।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কাঞ্চন বেগ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, “মোর আর কোন ইচ্ছা নাই, মরার আগে জানি মোর পোলাডারে ভাল চিকিৎসা করাইয়া মরতে পারি”। নিজের অসুস্থ শরীর নিয়ে ছেলের চিকিৎসার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কাঞ্চন বেগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার ধর্ণা দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তার মৃত্যুর পূর্বে কি ছেলের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারবেন এ নিয়ে নানা দুরচিন্তার মধ্যে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা কাঞ্চন বেগ। তিনি আরো জানান, ঢাকার চিকিৎসকরা বলেছেন সোহেলের উলসান (ব্রেন ও লিভারের সমস্যা) রোগ হয়েছে। যা ভারতের মাদ্রাজে গিয়েই উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা অসহায় পরিবারটির পক্ষে পুরোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই অসহায় পরিবারটি সোহেলকে বাঁচাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের মহানুভব বিত্তশালীদের কাছে হাত পেতেছেন।