জৈব সার বিক্রি করে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে ॥ গৌরনদীর তোতা মিয়ার সংসারে

কার্যকর ভূমিকা পালন করছে তার জৈব সার। এলাকার কৃষকদের কাছেও মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে এর কদর বেড়ে গেছে। শুধুমাত্র ইরি ক্ষেত্রেই নয়, শাক সবজির ক্ষেত খামার, পান বরজ ও মৎস্য খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এ সার। আগে বাড়িতে বসে এ সার বিক্রি করলেও ক্রেতাদের সুবিধার্থে তোতা মিয়া বর্তমানে কাসেমাবাদ বাসষ্ঠ্যান্ডে তৈরি করেছেন একটি বিক্রয় কেন্দ্র। কৃষকদের সুবিধার্থে ১’শ কেজির প্রতি বস্তা সার তিনি মাত্র ১’শ টাকায় বিক্রি করছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে, তোতা মিয়া ৪/৫ বছর আগে নিজ বাড়িতে তৈরি করেন ‘আল বারাকা’ নামের একটি ডেইরী ফার্ম। গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি নানা সমস্যার কারনে ডেইরী ফার্মের আয়ে যখন তার সংসার চলছিলো না। তখন তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। মাত্র ৬ মাস আগে নিজের ফার্মের ২৫টি গবাদী পশুর বর্জ দিয়ে তিনি জৈব সার উৎপাদন শুরু করেন। সাক্ষাতে তোতা মিয়া জানান, জৈব সার উৎপাদনে তাকে উৎসাহ জুগিয়েছেন গৌরনদী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম। এ জন্য কৃষি অফিস থেকে তাকে ২ দিনের প্রশিক্ষন দেয়া হয়। তোতা মিয়া গোবর দিয়ে গ্যাসপ্লানও তৈরী করেন। পরিবারের রান্নাবান্নার কাজ চলছে ওই গ্যাস দিয়ে। এবছর তিনি প্রায় ১ হাজার বস্তা জৈব সার (গোবর সার) উৎপাদন করেছেন। কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিনি গোবর সংরক্ষনের জন্য একটি টিনের ঘর তৈরি করেছেন। প্রতিবিঘা জমিতে ৩ বস্তা (তিন’শ কেজি) জৈব সার প্রয়োগের পরামর্শ দেন তোতা মিয়া। আগামীতে তিনি অধিক জৈব সার উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। গোবর দিয়ে উৎপাদিত সার বিক্রি করে তার সংসারে কিছুটা হলেও স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, জৈব সার হচ্ছে মাটির জীবন, যা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা করে। আমাদের দেশের কৃষকরা অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে জমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতা বিনষ্ট করে ফেলে। তারা জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করেন না। তিনি অধিক ফলনের জন্য জমিতে জৈব সার প্রয়োগের জন্য সকল কৃষকদের প্রতি অনুরোধ জানান।