গৌরনদীর কমিডিয়ান নানা-নাতী

দরিদ্রতার কষাঘাতে ধুকে ধুকে মরছেন প্রতিভাবান আঃ করিম সরদার (৫০)। তবুও থেকে যাননি তিনি। অন্যকে আনন্দ দিয়ে সে নিজে তৃপ্তি পান। এ কারনে নিরান্দ থাকতে পারেন না। তিনি রপ্ত করেছেন বিভিন্ন পশু পাখির ডাক, মুখ অভিনয়, একাঙ্গী নাট্য সংবাদ, জাদু প্রদর্শনী, সংগীত, মিউজিক, কবিতা আবৃত্তি, কৌতুক ইত্যাদি। স্বরচিত অসংখ্য গানের রচয়িতা, সুরকার ও গীতিকার হচ্ছেন তিনি। যেকোন অনুষ্ঠানের দর্শক শ্রোতাদের ঘন্টার পর ঘন্টা মাতিয়ে রাখতে পারাটা তার একার জন্য মোটেও কঠিন কাজ নয়। এলাকার বিভিন্ন মেলা, বিয়ে অনুষ্ঠান, স্কুলের স্বাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তার যাদু প্রদর্শনী, একক অভিনয়, কৌতুক, রং ঢংয়ে সকলকে মাতিয়ে তোলে। আবার তারই গাওয়া বিষদের গান শুনে অনেকেরই চোখের পানি ঝড়ে। সম্প্রতি গৌরনদীর টরকী বন্দর এলাকার পাল পাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কমিডিয়ান আঃ করিমের একক জাদু প্রদর্শনী, কৌতুক, গান পরিবেশিত হয়। সুইজারল্যান্ড প্রবাসী আকন আজাদের সৌজন্যে স্থানীয়রা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাপানী নাগরিক হিরোশী তার একক প্রদর্শনী দেখে অবাক হয়ে যান। আঃ করিমের ইচ্ছে অনুযায়ী একটি সিডি বের করা।

গৌরনদীর সুন্দরদী (রামনগর) গ্রামের মৃত পুনাই সরদারের পুত্র আঃ করিম। অভাব অনটনের সংসারে তার জন্ম। এ কারনে নবম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে তাকে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করতে হয়। বর্তমানে স্ত্রী, ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক আঃ করিম নিজ উদ্যোগে গান, অভিনয়, কৌতুক শিখেছেন। তবে যাদু বিদ্যা শিখেছেন বিক্রমপুরের ওস্তাত এম.এ রউফের কাছে। কমিডিয়ান করিমের ছেলে-মেয়েরা তার প্রতিভাকে ধরে রাখতে না পারলেও তার নাতী (বড় মেয়ের পুত্র) সাঈমুন (১৩) নানার কাছে (করিমের কাছে) গান, কৌতুক, অভিনয় শিখে ইতিমধ্যে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। এ জন্য নিজেকে গর্বিত মনে করেন আঃ করিম। সম্প্রতি টরকী বন্দর ভিক্টোরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে নানা-নাতী গান, কৌতুক ও অভিনয় করে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।

কমিডিয়ান করিমের জীবনের শেষ ইচ্ছে, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ম্যগাজিন অনুষ্ঠান হানিফ সংকেতের ইত্যদি অনুষ্ঠানের দর্শকদের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে এসব বিনোদন ধর্মী কলা কৌশল পরিবেশন করা। এজন্য তিনি তিনবার বাংলাদেশ টেলিভিশনের কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্ণা দিয়েও ব্যর্থ হন। তাদের দাবিকৃত উৎকোচের টাকা জোগাড় করতে না পারায় কমিডিয়ান আঃ করিমের শেষ আশা এখন নিরাশার পথে। আঃ করিমের ধারনা তার বিনোদন ধর্মী কলাকৌশল দেখে দর্শকরা নিশ্চয় মুগ্ধ হবেন। আর এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।