গৌরনদীতে ২৮ লক্ষ টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা

ঠিকাদার বৃহস্পতিবার গৌরনদী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মাহিলাড়া ইউপি কার্যালয়ে সিডিউল ফরম কিনতে গেলে তাদের কাছে সিডিউল ফরম বিক্রি না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ঠিকাদাররা জানায়, হাইসাওয়া ফান্ডের অর্থায়নে ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৯ টাকা ব্যয়ে উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৫৩ টি গভীর নলকুপ স্থাপনের জন্য গত ২৫ জুলাই দরপত্র আহ্বান করে মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান। ওই  দরপত্রে ১৬ আগস্ট দরপত্র বিক্রির শেষদিন ও ১৭ আগস্ট দরপত্র দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তখন বরিশাল জেলা ও গৌরনদী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং মাহিলাড়া ইউপি কার্যালয় থেকে ১৮  টি সিডিউল ফরম বিক্রি করা হয়। টেন্ডার  গুছ কমিটির আওয়ামীলীগ   নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম খানের চাপের মুখে ওই টেন্ডার বাতিল করে পুর্নরায় দরপত্র আহ্বান করে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পুনঃদরপত্রে আগামি ৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ও ৬ সেপ্টেম্বর দরপত্র দাখিলের দিন ধার্য করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ঠিকাদার যুবলীগ নেতা বকতিয়ার হাওলাদার, সুব্রত রায়, মাহাবুল, জুলহাস সরদার গৌরনদী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সিডিউল ফরম কিনতে গেলে তাদের কাছে অফিস সহকারী সেলিম হাওলাদার সিডিউল ফরম বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানান। মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান  গৌরনদী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে তিনটি ও বরিশাল জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ৫ টি  সিডিউল ফরম পাঠায়। টেন্ডার গুছ কমিটির মনোনীত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স একে ট্রেডার্স, মেসার্স শিকদার এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স শহিদুল ইসলাম ট্রেডার্স বৃহস্পতিবার গৌরনদী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে  ওই তিনটি  সিডিউল ফরম ক্রয় করে।

ঠিকাদার যুবলীগ নেতা বতকিয়ার হাওলাদার জানান,  ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোঃ মোশারফ হোসেন ট্রেডার্সের নামে এক হাজার টাকা দিয়ে গত ১২ আগস্ট একটি সিডিউল ফরম  ক্রয় করেছিল যুবলীগ নেতা আলামিন হাওলাদার। ওই টেন্ডার বাতিল করা হলে পুর্নরায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি দরপত্র ফরম আনতে গেলে গৌরনদী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের  অফিস সহকারী সেলিম তাকে সিডিউল ফরম দিতে অস্বীকৃতি জানান। তাকে অফিসে বসিয়ে রেখে জোহরের নামাজ পড়ার কথা বলে অফির সহকারী সেলিম গাঁ ঢাকা দিয়ে বিকেল ৪ টার দিকে অফিসে ফিরে আসেন বলেও তিনি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  একাধিক  ঠিকাদার  জানান, মাহিলাড়া ইউনিয়নে নলকুপ স্থাপনে টেন্ডার গুছ কমিটির আওতায় থাকায় সিডিউল ফরম গুছ কমিটির মনোনীত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে সিডিউল ফরম বিক্রি করা হচ্ছে না।

বরিশাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে টেন্ডার গুছ কমিটি মনোনীত ঠিকাদারদের সিডিউল ক্রয়ের নির্দেশ দেয় গুছ কমিটি। উপজেলা চেয়ারম্যান টেন্ডার গুছ করে তিনটি সিডিউল ফরম দাখিল করার অলিখিত ঘোষনা দিয়েছেন বলে  ঠিকাদাররা জানান। মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত তোতা জানান, প্রথমবার টেন্ডার আহ্বানে ১৮টি সিডিউল ফরম বিক্রি হলেও রহস্যজনক কারনে ওই টেন্ডার বাতিল করে পুর্নরায় টেন্ডার আহ্বান করা  হয়েছে। উল্লেখিত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শাহ আলম খান জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। সে অসুস্থ্য হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।