সংখ্যালঘু পরিবারের সম্পত্তি জাল দলিল করে দখল নেয়ার পাঁয়তারা

স্থানীয় এমপি’র ভায়রা। আর এ জালিয়াতির সাথে যুক্ত হয়ে সার্বিক সহায়তার অভিযোগ উঠেছে এমপি’র শ্বশুরের বিরুদ্ধে। ওই সংখ্যালঘু পরিবার লিখিতভাবে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন।

উপজেলার বাগধা গ্রামের মৃত রাখাল চন্দ্র দাশের ছেলে গৌতম দাশ কর্তৃক স্থানীয় রিপোটার্স ইউনিটি ও প্রশাসনের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, তার পিতার মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তির একমাত্র ওয়ারিশ হয় গৌতম। ওয়ারিশসূত্রে হাল রেকর্ডের মালিকও তিনি (যার হাল খতিয়ান নং- ১২০৮)। উক্ত খতিয়ানভূক্ত এসএ ৩৮৫০ হাল ৪৯৮২ দাগের ৯ শতক, এসএ ৩৮৫১ হাল ৪৯৮৩ পুকুর ১৪ শতক ও এসএ ৩৮৫২ হাল ৪৯৮৪ বাড়ি ৩৯ শতকসহ মোট ৬২ শতক জমি স্থানীয় এমপি এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুসের ভায়রা স্থানীয় সিরাজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে আকবর মিয়া জনৈক আশুতোষ দাশকে মালিক সাজিয়ে ভূয়া দলিল করে দখল নেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, উক্ত আশুতোষ ভারতীয় নাগরিক। দেশ স্বাধীন হবার আগেই সে ভারতে বসবাস করছে। আশুতোষকে দাতা সাজিয়ে স্থানীয় দলিল লেখক আলমগীর হাওলাদারের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করে গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে দলিল সম্পাদনের জন্য দাখিল করেন। এখবর সংখ্যালঘু ওই পরিবার জানতে পেরে আগৈলঝাড়া সাব-রেজিষ্ট্রার ও আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে দলিল সম্পাদন না করার জন্য লিখিতভাবে আবেদন জানান। তাদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের কারণে সেদিন ওই ভূয়া দলিলটি সাব-রেজিষ্ট্রার নিবন্ধন করেননি। তবে তার অফিসে জমা হওয়া ভূয়া দাতার দলিলটি অজ্ঞাতকারণে গ্রহীতার হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়। গ্রহীতা আকবর মিয়া দলিল না করতে পেরে তা ফেরৎ নিয়ে বরিশাল থেকে তিনি দলিল সম্পাদন করাবেন বলেও হুমকি দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উক্ত আশুতোষের জন্য আগৈলঝাড়ার কোন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধনের সনদপত্র সংগ্রহ করতে না পেরে বরিশাল থেকে জন্মনিবন্ধনের একটি সনদপত্র সংগ্রহ করেন ওই জালিয়াতি চক্র। সংখ্যালঘু ওই পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে চরম নিরপত্তাহীনতায় ভূগছেন।

ক্ষমতার দাপটে এমপি’র ভায়রা ও শ্বশুর তাদের ন্যায্য সম্পত্তি ভূয়া দলিলের মাধ্যমে দখলপূর্বক তাদের দেশত্যাগ করাতে পারে বলেও তারা আশঙ্কায় করছেন। ভূয়া দাতার দলিলটি সম্পাদন না করাসহ জীবনের নিরাপত্তার জন্য গৌতম দাশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন। এব্যাপারে এমপি’র শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ মিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি মোবাইলে (০১৭২৭-৮৬১৩২৫) জানান, রাখাল ধুপীর ৩ ছেলের মধ্যে বড় আশুতোষ ভারতে চলে যাওয়ায় ছোটভাই গৌতম তার সম্পত্তি দখল করে স্থানীয় মনির, শাহজাহান ও আব্দুল¬াহ্র কাছে বিক্রির জন্য ৫ লাখ টাকায় চুক্তি করে। এটা জেনে আশুতোষকে দেশে আনা হয়েছে। আশুতোষের সম্পত্তিতে তাকে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে দলিলটি আকবরের নামে নয়, আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের নামে একদিন পরে হলেও সম্পাদিত হবে। গৌতমকে স্থানীয় লোকজন বিশেষ করে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল ভাট্টি ভুল পথে চালাচ্ছে।