এ্যানথ্যাক্সের বিরুপ প্রভাব পড়েছে গৌরনদীর গো-হাটে

ব্যবসায়ীদের চলছে চরম দুর্দিন চলছে। অস্বাভাবিক ভাবে গরু ক্রয়-বিক্রয় কমে গেছে। এ্যানথ্যাক্স আতংকে গৌরনদীর লোকজন গরুর মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। আর এজন্য ব্যবসায়ীরা দায়ি করছেন মিডিয়া কর্মীদের। স্থানীয় প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন এলাকায় এ্যানথ্যাক্স নেই। গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

সূত্রমতে, কসবা গো-হাটেরদিন ৪ থেকে ৫ হাজার গবাদি পশু বিকিনিকি হতো। এ্যানথাক্স আতংকের কারনে গত ৩ সপ্তাহ থেকে গবাদি পশু বিকিনিকি চারভাগের এক ভাগে নেমে গেছে। এমনই অবস্থায় চরম বিপাকে পরেছেন স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী ও গরুর মাংস বিক্রেতারা। মন্দার কারনে ইতোমধ্যে অর্ধিকাংশ ব্যবসায়ীরা ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সরেজমিনে কসবা গো-হাটে গরু বিক্রি করতে আসা মন্টু ফকির, সেলিম তালুকদার, জসিম মোল্লাসহ একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘মোরা শ্যাষ হইয়া গেছি। এ্যাহন প্রতি গরুতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে’। চররমজানপুর গ্রামের গরু ব্যবসায়ী আলেক সিকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত সপ্তাহে গ্রাম থেকে ৭৫ হাজার টাকায় ৩টি গরু কিনেছি। ক্রেতা নেই, তাই ৭৫ হাজার টাকার গরুর দাম এখন ৬০ হাজার টাকায় উঠেছে। নিরুপায় হয়ে ১৫ হাজার টাকা লোকসান দিয়ে গরু ৩টিকে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। বাজার মন্দার জন্য তিনি মিডিয়াকে দায়ি করেন। কসবা গো-হাটের ইজারাদার রাজ্জাক হাওলাদার ক্ষোভের সাথে জানান, এ্যানথাক্স আতংকের কারনে গত ৩/৪টি হাটে গরু বিকিনিকি আংশকাজনক হারে কমে গেছে। পথে বসেছে গরু ব্যবসার সাথে জড়িত ৪/৫’শ ব্যবসায়ী। তিনি আরো জানান, হাটে যে হারে গরু ওঠে তার সিকিভাগও বিক্রি হচ্ছে না।
গৌরনদী বন্দরের গরুর মাংস বিক্রেতা রেজাউল সিকদার মিডিয়া কর্মীদের দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আর কতো বাঁশ দেবেন, আমরাতো শ্যাষ হইয়া গেছি। মানুষ ভয়ে এ্যাহন গরুর মাংস কিনতে চায়না’। আশোকাঠী বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা বাবুল হোসেন বলেন, গরুর মাংস কেনাতো দুরের কথা, এ্যানথাক্স আতংকে মানুষ এ্যাহন দোকানের ধারেও ঘিষতে চায়না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আইউব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গৌরনদী এখনও এ্যানথাক্স মুক্ত। তবে একশ্রেনীর লোক এ্যানথাক্সের গুজব ছড়াচ্ছে। আতংকিত হবার কারন নেই। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা গৌরনদী উপজেলার প্রতিটি এলাকার ৩ হাজার ১’শ গবাদি পশুকে এ্যানথাক্সের ও পিপিআর, বাদলা, গলাফুলা ও ক্ষুরা রোগের ৪ হাজার গবাদি পশুকে টিকা প্রদান করেছি।