পূর্নাঙ্গ নারী হয়ে ওঠার আগেই মানুষিক বিকাশে বাঁধাগ্রস্ত ॥ গৌরনদীর ১১ বছরের এক কিশোরী

ও অব্যাহত হুমকির কারনে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পথে। সমাজপতিরা শাসন করেও দমাতে পারেনি বখাটের দলকে। উল্টো সমাজপতিরা শুনেছে গালিগালাজ, দেখেছে বখাটে দলের বীর দর্পের মহড়া। বখাটেরা এতটা বেপরোয়া হওয়ার সাহস পায় কোথায়? এ প্রশ্ন ওই কিশোরীর অভিভাবকদের। প্রত্যক্ষদর্শী, থানা পুলিশ, ভিকটিম ও তার অভিভাবক সুত্রে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে (১১) স্কুলে যাওয়া আসার পথে টরকী বন্দর সংলগ্ন সুন্দরদী গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার বখাটে পুত্র সুমন মোল্লা ও তার কয়েকজন সহযোগী প্রায়ই উত্যক্ত করত।

গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) ওই কিশোরী স্কুল ছাত্রী স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফেরার পথে টরকী পোষ্ট অফিসের সামনে বসে বখাটে সুমন মোল্লা তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে নিজের মোবাইল ক্যামেরায় কৌশলে কিশোরী ছাত্রীটির ছবি তোলে। এ সময় ওই কিশোরী স্কুল ছাত্রী তার ছবি তোলার প্রতিবাদ করলে বখাটে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীকে গালিগালাজসহ নানা রকম ভয়ভীতি দেখায়। স্কুল ছাত্রী ঘটনাটি তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজ্রনাথ বিশ্বাস ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন হাওলাদারকে জানিয়ে তাদের কাছে বখাটের বিচার দাবী করে। ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বখাটে সুমন মোল্লাকে ডেকে স্কুলে নিয়ে তার মোবাইল ক্যামেরা থেকে ছাত্রীর ছবি মুছে ফেলে বখাটেকে শ্বাসিয়ে দেয়। এতে বখাটে সুমন মোল্লা আরো ক্ষিপ্ত হয়। সে তার ৭/৮ জন বখাটে সহযোগীকে নিয়ে ওইদিন রাত ৮ টার দিকে টরকী বন্দর এলাকায় বীরদর্পে মহড়া দিয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন হাওলাদারকে গালিগালাজ করে। এরপর বখাটেরা স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখায়। এ সময় তারা  ওই কিশোরী স্কুল ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথ থেকে জোর পুর্বক তুলে নেয়ারও হুমকি দিয়ে আসে। নিজের নাম জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে স্কুল ছাত্রীর মা জানান, বখাটেদের অব্যাহত হুমকির মুখে গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে তার কিশোরী কন্যা ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরীর পিতা জীবিত নেই। তার মা তাকে নিয়ে তার চাচার সংসারে থাকছেন। চাচা’ই তার ভরন পোষন ও লেখাপড়ার খরচ দিচ্ছেন।

গালি গালাজের শিকার বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন হাওলাদার জানান, ঘটনার দিন রাতে বিষয়টি গৌরনদী থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে। গৌরনদী থানার ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর ওই রাতেই এএসআই নুরুল ইসলাম বাদলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এএসআই নুরুল ইসলাম বাদল জানান, বখাটেদের গ্রেফতারের জন্য ইতোমধ্যে একাধিক স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে ওই বখাটেদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরএকটি সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা গত ৬ অক্টোবর বখাটেকে ধরে নিয়ে স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার (স্কুল ছাত্রীর) ও তার মায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়াসহ ২৫ বার কানধরে ওঠবস করান। পরবর্তীতে ওই বখাটে আর কোনদিন কোন স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করবেনা বলেও মুচলেকা দিয়ে রেহাই পায়। এতে কি ক্ষান্ত্য হবে বখাটেদের দল? নাকি কয়েকদিন পর আবার শুরু হবে তাদের বখাটেপনা। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

-লেখকঃ খোকন আহম্মেদ হীরা
সম্পাদক
Gournadi.com