ফরম পূরণ না করলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপত্র ইস্যু

এ নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রশ্ণের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজে। সংশ্লিষ্ট কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ওই কলেজের ছাত্র ও উপজেলার কাঠিরা গ্রামের সদানন্দ মজুমদারের পুত্র লিটন মজুমদার। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে বি.এ শ্রেণীতে লিটন ভর্তি হয়। তার কলেজ রোল-১৫২। ওই শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত সময়ে ফি দিয়ে ফরম পূরণ করেনি লিটন। কলেজ ১১৩জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করে ৩৫ হাজার ৩০ টাকা গত ১৮ জুলাই ৫৫০৫৩৬২ নম্বরের ড্রাফ্টসহ ২২ জুলাই পৃথক ১১৩জন শিক্ষার্থীর নামে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত উদ্দিন ফরোয়ার্ডিং-এর মাধ্যমে প্রেরণ করেন। যথাসময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই ১১৩ জন শিক্ষার্থীর তালিকা প্রেরণ করেন। সে মোতাবেক তাদের প্রেরিত ১১৩জন শিক্ষার্থীর অনুকূলে ১১৩টি প্রবেশপত্র গত ৩ অক্টোবর কলেজ গ্রহণ করে।

এরপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগৈলঝাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষকে ১১৪টি প্রবেশপত্র দিলে তারা কলেজ থেকে লিটনের ফরম পূরণ না করায় তার প্রবেশপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অফিসে বসেই তাৎক্ষণিক ফেরৎ দেয়া হয়। এরপর অজ্ঞাতকারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অব এগ্জামিনেশন বদরুজ্জামান স্বাক্ষরিত ০১৫৬৪৪৩ সিরিয়াল নম্বরের প্রবেশপত্রটি লিটনের হাতে এসে পৌঁছায়। ওই প্রবেশপত্রে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ (কোড নং-১১২২), কেন্দ্র- গৌরনদী সরকারী কলেজ (কোড নং-৫৮৬), নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে বিএ প্রথমবর্ষ (স্পেশাল), যার রোলনং- ৬৫৭২৮২, রেজিঃ নং-৮৭৭৪২৩৩ লেখা রয়েছে। ওই প্রবেশপত্র হাতে পেয়েও লিটন কেন গত ১১ অক্টোবর পরীক্ষায় অংশ নেয়নি তার কোন সদুত্তর ০১৯১৩১৩৫১৭৯ ফোন করে পাওয়া যায়নি। লিটন কলেজের কাছেও তার পরীক্ষা না দিতে পারার কারণ সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেনি। ফরম পূরণ না করে কলেজের নামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যুকৃত প্রবেশ পত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে ফরম পূরণ ৭ সদস্যসের কমিটির প্রধান অধ্যাপক বিরল চৌধুরীর কাছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত উদ্দিন লিখিত ভাবে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা লিখিত জানান, ওই ছাত্রের ফরম তারা পূরণ করেননি, কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা তাদের জানানেই।

এ ঘটনার জন্য হেমায়েত উদ্দিন দুঃখ প্রকাশ করে সংবাদ কর্মীদের জানান, তাদের নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা যথা সময়ে প্রবেশপত্র পেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। কলেজের নামে অতিরিক্ত একটি প্রবেশপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিভাবে ইস্যুকরল তাতে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ঘটনাটি কলেজ সভাপতি স্থানীয় এমপি তালুকদার মো. ইউনুসকে জানানো হয়েছে। তার নির্দেশক্রমে সত্তর গভর্নিং বডির মিটিং ডেকে তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে খুজে বের করা হবে কলেজের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী এর সাথে জরিত কিনা? এর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে, এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রের সভাপতি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি আইন শৃংখলায় রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি তার দেখার আওতা ভূক্ত না হলেও ঘটনার সাথে কলেজের অবশ্যই কেউ না কেউ জরিত রয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা সহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

এব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফিরোজ আহম্মেদের ০১৭১২৭৮৬৯১১ নম্বরে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরিশাল বিভাগের বিষয়টি রেজিষ্ট্রার হাসান দেখেন। একই নম্বরে হাসানের সাথে  কথা বললে বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কোন  সদোত্তর দিতে পারেননি।