ভাগ্য বদলায়নি গৌরনদীর সর্বশান্ত পান চাষীদের

ও আগৈলঝাড়া উপজেলার ৮ হাজার পান চাষী। সরকারি ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীদের পূর্ণবাসন সহায়তার ঘোষনা দেয়া হলেও দু’উপজেলার মাত্র ৫’শ পান চাষীকে ৩ হাজার করে নগদ টাকা প্রদান করা হয়। যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।  

ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিডরের তান্ডবে গৌরনদী উপজেলায় ৫ হাজার ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় ৩ হাজার পান চাষী সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলো। সরকারি হিসেব মতে, এ দু’উপজেলায় সিডরে পান চাষীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিলো ৬০ কোটি টাকা কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের হিসেব অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিলো প্রায় এক’শ কোটি টাকা। পান চাষীরা জানান, অর্থের অভাবে তারা তাদের ধ্বংষ হয়ে যাওয়া পান বরজ আজো মেরামত করে নতুন করে চাষ শুরু করতে পারেননি। কেউ কেউ বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন গ্রহন করে চাষ শুরু করলেও আইলা ও জলোচ্ছাসে তা পূর্ণরায় ধ্বংষ হয়ে গেছে। পরবর্তীতে অর্থের অভাবে আর পান চাষ শুরু করতে না পারায় অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে অন্যের পান বরজে এখন দিনমজুরের কাজ করে জিবীকা নির্বাহ করছেন। গৌরনদী উপজেলার উত্তর বাউরগাতি গ্রামের পান চাষী সাহেব আলী সরদার (৪৫) জানান, তার সংসারের আয়ের একমাত্র অবলম্বন ছিল পান বরজ। সিডরে তার সকল পান বরজ বির্ধ্বস্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলন করে পূর্নরায় বিধ্বস্ত পান বরজ গড়ার পর অতিসম্প্রতি জলোচ্ছাসে তা পূর্ণরায় ধ্বংষ হয়ে গেছে।

চাঁদশী গ্রামের পান চাষী সুকন্ঠ সোম (৪০), দক্ষিণ বাউরগাতির সবুজ খান (৩৫) সহ একাধিক পান চাষীরা জানান, সিডরে তাদের পান বরজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আর্থিক সংকটের কারনে আজো তারা পেশায় ফিরে যেতে পারেননি। তারা পান চাষীদের পূর্ণবাসনের জন্য সহজ শর্তে সরকারি ভাবে ঋন দেয়ার জন্য দাবি করেন। গৌরনদী উপজেলার উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীরা অনেকেই চাষ শুরু করতে না পারায় পেশা পরিবর্তন করে অন্যের পান বরজে এখন দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। গৌরনদী উপজেলা কৃষি অফিসার রতন কুমার মন্ডল জানান, সিডর এ অঞ্চলের পান চাষীদের সর্বশান্ত করে দিয়ে গেছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আইলা ও জলোচ্ছাসের ছোবলে পূর্ণরায় পান চাষীরা নিঃস্ব হয়ে গেছে। তাদের পূর্ণবাসনে সরকারি সাহায্য পর্যাপ্ত নয়। যে কারনে অনেক চাষীই এ চাষ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরো জানান, পান চাষীদের পূর্ণবাসনে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন।