ছাত্রলীগ নেতা বুলেট হত্যার বিচার হয়নি নয় বছরেরও

পাইতাম। এ দ্যাশে কি মোর পুতের হত্যাকারীগো বিচার কোনদিনই হইবো না” আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন, বিগত চারদলীয় জোট ক্যাডারদের নির্মম নির্যাতনে নিহত সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বুলেটের বৃদ্ধা মা মঞ্জু সুলতানা (৫৬)। দীর্ঘ ৯ বছরেও বুলেট হত্যার বিচার হয়নি। তাই এখানো কান্না থামেনি নিহত ছাত্রলীগ নেতার পরিবারের। বুলেটের পরিবারের অভিযোগ হত্যাকারীরা এখনও বীরদর্পে ঘোরাফেরা করছে।

সূত্রমতে, গৌরনদী উপজেলার হরিসেনা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রহমতউল্লাহ খলিফার বড়পুত্র সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বুলেট। বিগত বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় জোট সরকারের প্রথমাধ্যে (২০০১ সালের ২০ নবেম্বর) বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) নির্বাচনী এলাকার তৎকালীন সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনের চিহিৃত ক্যাডার বাহিনী গৌরনদী বন্দরের খালপাড়ে বসে নির্মম নির্যাতন চালায় ছাত্রলীগ নেতা বুলেটের ওপর। গুরুতর অবস্থায় গৌরনদী ও বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয়দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২৬ নবেম্বর সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন ছাত্রলীগ নেতা বুলেট। তৎকালীন সময়ে এ ঘটনায় নিহত ছাত্রলীগ নেতা বুলেটের পিতা রহমত উল্ল¬াহ খলিফা বাদি হয়ে যুবদল ও ছাত্রদলের ১৪ জনকে আসামি করে গৌরনদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে সময়ে স্থানীয় বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যের চাপের মুখে মামলার এস.আই সরদার ইউনুস আলী ঢিমেতালে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে নিহত ছাত্রলীগ নেতার পিতা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি এয়ার ভাইসমার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরীর কাছে পুত্র হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেও ব্যর্থ হন।


নিহত ছাত্রলীগ নেতার পিতা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রহমত উল্লাহ খলিফা (৬৫) কান্নাজড়িত কন্ঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশের প্রচলিত আইনে হত্যাকারীরা যদি বিনা বিচারে পার পেয়ে যায়, তাহলে দেশে আইন আদালতের প্রয়োজন আছে কি? নাকি টাকা ও ক্ষমতার কাছে দেশের সাধারন মানুষগুলো এখনো জিম্মি অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন ঘোষনা করেছেন, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলের ধামাচাপা পরা সকল হত্যা মামলা পূনঃরুজ্জীবিত করা হবে। তার এ আশার কথাশুনে পুত্র হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে তিনি (রহমত উল্লাহ খলিফা) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে আবেদনও করেছেন। তার পরেও পুত্র হত্যাকারীদের বিচার হবে কিনা এ নিয়ে তিনি ও তার পরিবার হতাশায় রয়েছেন।