আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে চরমোনাইর মাহফিল সম্পন্ন

চরমোনাইর বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্ল­ীর উপস্থিতিতে মাহফিলের আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন চরমোনাইর পীর সাহেব আমিরুল মুজাহিদীন সৈয়দ মাওঃ রেজাউল করিম।

Chormonai Mahfil 2010আখেরী মোনাজাত পূর্বক ফজর বাদ শেষ বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন আওয়ামীলীগ-বিএনপি বা জামায়াতের সমালোচনা নয় যারা ইসলামের বিরোধীতা করে তাদেরই সমালোচনা করি। এখন যে প্রচলিত রাজনীতি চলছে তা হচ্ছে পেটনীতি। আর আমরা যা করছি তা হচ্ছে রাজনীতি। কারণ আল্ল­াহ্ ও তার রাসুলের কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের আন্দোলনই হচ্ছে সত্যিকারের রাজনীতি।


গত শুক্রবার লাখো লাখো মুসল্ল­ীর অংশগ্রহনে শুরু হওয়া এ মাহফিল গতকাল সোমবার সকালে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চরমোনাইর মরহুম পীর হযরত মাওঃ সৈয়দ মুহাম্মাদ এছহাক (রহঃ) সময়  থেকে শুরু হওয়ার পর থেকে এই বছরই প্রথম সর্বাধিক পরিমান মুসল্লীরা অংশগ্রহন করেছেন। মাহফিল এলাকায় কোন খালি জমি না থাকায় মুসল্ল­ীরা পাশ্ববর্তী বাগানে, রাস্তার ওপর, গাছের নীচে, লঞ্চে, ট্রলারে, স্কুল-মাদ্রাসার ছাদে, বারান্দায় অবস্থান করে ওয়াজ শুনেন ও অতিকষ্টে রাত্রি যাপন করেন।


গতকাল বাদ ফজর চরমোনাই পীর হযরত মাওঃ সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম মাহফিলের সমাপ্তি বয়ানে বলেন, আমি মুসলমান হিসেবে সত্য কথা আমাকে বলতেই হবে। তাতে আমাকে যত গালি আর শাস্তি দেয়ার কথা বলা হোক আমি সত্য কথা বলা থেকে পিছ পা হবনা ইনশআল্ল­াহ।


তিনি প্রশ্ন করে বলেন, যে মুসলমানের সন্তানেরা ইসলামী বিধান অনুযায়ী চলেনা, নিজে হালাল কামাই করে না, স্ত্রী-কন্যা-সন্তান পর্দা করে না, সে কেমন মুসলমান? যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে সে না খেয়ে থাকলেও কোন দিন হারাম খাবেনা। আল্ল­াহর ভয় থাকলে আল্ল­াহ বান্দাকে যে কোন ভাবেই হোক গুনার পথ থেকে ফিরিয়ে নেকের পথে রাখবেন।


চরমোনাইর মুরীদদেরকে জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে মুক্তি লাভে আল্লাহর ওলীদের ন্যায় অধিক পরিমানে কান্নাকাটি করাসহ তিনি তাদের ৫টি সবক গ্রহন করার আহবান জানান। ছবকগুলো ১. সকাল বিকাল হালকায়ে জিকির করা, ২. নিয়মিত কিছু সময় আল্লাহর ওলীদের বই পুস্তক পাঠ করা, ৩. সাপ্তাহিক হালকায় জিকিরে অংশ গ্রহন করা,৪. মাসিক ইস্তেমায় শরীক হওয়া ৫. চরমোনাইর বার্ষিক মাহফিলে উপস্থিত হয়ে ইয়াকীন, আল্লাহর ভয় ও আমলকে দুরুস্ত করার আহবান জানান। তিনি ঈমান আমলের হেফাজতে ৫ ছবককে রক্ষা কবচ আখ্যায়িত করেন। এর একটি ছুটলে অন্যসব আমল ব্যর্থ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই তিনি সকলকে এসব ব্যাপারে সচেতন থাকার পাশাপাশি খাটি মুসলমান হয়ে কবরে যাওয়ার কথা ভেবে পুরো পূর্ন ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক কাজ করার নির্দেশ দেন।
মাহফিল শেষে শাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ আগত মুসল্ল­ীরা আল্লাহর জিকির করতে করতে স্ব-স্ব গন্তব্যে রওয়ানা করেন।