যৌতুক ॥ পাষন্ড স্বামীরা অমানুষিক নির্যাতন করেছে গৌরনদীর তিন গৃহবধূকে

হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাগুলো ঘটেছে গত শুক্রবার রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার শংকরপাশা, কালনা ও বড়কসবা গ্রামে।

যৌতুকলোভী পলাশএলাকাবাসি ও আহত সূত্রে জানা গেছে, শংকরপাশা গ্রামের সিরাজ সরদারের পুত্র মিরাজ সরদারের সাথে গত সাড়ে চারবছর পূর্বে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী কলাবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর মোতালেব খলিফার কন্যা সাথীর (২৪) সাথে। বিয়ের সময় বর পক্ষের দাবিকৃত যৌতুকের ২০ হাজার টাকা ও ২ ভরি স্বর্ণালংকার দেয়া হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের রিপা নামের একটি শিশু কন্যা রয়েছে। সম্প্রতি মিরাজ ও তার পরিবার ব্যবসার কথা বলে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক আনার জন্য সাথীকে চাপ প্রয়োগ করে। এতে গৃহবধূ সাথী অসম্মতি জানালে প্রায়ই তাকে পাষন্ড মিরাজ ও তার পরিবারের লোকজনে শারিরিক নির্যাতন করতো। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পূর্ণরায় গৃহবধূ সাথীকে শারিরিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে সে জ্ঞানশূণ্য হয়ে পরলে বাড়ির লোকজনে মুমুর্ষ অবস্থায় ওইদিন রাতেই সাথীকে গৌরনদী হাসাপাতালে ভর্তি করে।

অপরদিকে শংকরপাশা গ্রামের দিনমজুর নাসির ভূঁইয়ার স্কুল পড়ুয়া কন্যা রুমা খানমের (১৯) সাথে গত একবছর পূর্বে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী কালনা গ্রামের রুস্তুম আকনের পুত্র আজমির ওরফে পলাশের সাথে। বিয়ের পর তারা ঢাকার রায়েরবাজারে বসবাস করেন। অতিসম্প্রতি পলাশ চাকুরি নেয়ার কথা বলে তার শ্বশুড়ের কাছে যৌতুক হিসেবে দুই লক্ষ টাকা দাবি করে। এতে গৃহবধূ রুমা বেগম বাঁধা দেয়ায় প্রায়ই তাকে শারিরিক নির্যাতন করা হতো। সর্বশেষ গত ৬ ডিসেম্বর দাবিকৃত যৌতুকের টাকার জন্য পাষন্ড স্বামী পলাশ রুমা বেগমের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে ঢাকার বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সে (রুমা) গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পরেন। লোক মারফত খবর পেয়ে রুমার পিতা নাসির ভূইয়া এলাকাবাসির সহায়তায় মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকার রায়েরবাজারের বাসা থেকে রুমা বেগমকে উদ্ধার করে শুক্রবার রাতে গৌরনদী হপাসালে ভর্তি করেন।

একইভাবে ব্যবসার কথা বলে এক লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে ৪ সন্তানের জননী আগৈলঝাড়া উপজেলার নগরবাড়ি গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন শাহ্ কন্যা শাহনাজ বেগমকে (২৯) পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে পাষন্ড স্বামী উপজেলার বড়কসবা গ্রামের হামেদ ফকিরের পুত্র মন্টু ফকির। উল্লেখিত ঘটনায় গৌরনদী থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো মৌখিখভাবে শুনেছি। এখানো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।