টুকু-আলিমের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে ছাত্রদল বরিশাল

কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বরিশাল ছাত্র দলের বিক্ষুদ্ধরা। এরপর ক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরিশাল জেলা ও মহানগরের ঘোষিত কমিটিতে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করায় বরিশাল বিএনপির কার্যালয়ে তালাবদ্ধের পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে তারা ঐ কর্মসূচী পালন করেছে ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পোনে ২টায় বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির সদর রোডস্থ কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদল টুকুর কুশপুত্রলিকা দাহ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা ঘোষিত কমিটিকে বিতর্কিত কমিটিকে আখ্যা দিয়ে বলেন বিতর্কিত কমিটি বাতিল করা না হলে বড় ধরনের কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে। তারা আরো বলেন স্বেচ্ছা সেবক দলের নেতা অছাত্র খন্দকার আবুল হাসান লিমনকে মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক করার বিষয়টি হাস্যকর। কুশপুত্তলিকা দাহে অংশ গ্রহন করেন ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদুল ইসলাম সজিব, হাওলাদার আলামিন,স্বদেপ,আশরাফুল হক রিমন,রোকনুজামান।

এর আগে সোমবার রাত সোয়া ১১ টায় বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির সদর রোডস্থ কার্যালয়ে তালা ঝুঁলিয়ে ও কার্যালয়ের সামনে আগুন জালিয়ে বিক্ষোভ করেছে। রাত ১০টায় রাজধানী ঢাকায় ছাত্রদলের অঙ্গনে চাউর ঘটে বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি চুড়ান্ত শেষে নবনির্বাচিত জেলা এবং মহানগরের আহবায়কের নিকটও কমিটির কপি পৌছে গেছে। কমিটিতে ভাইটাল পদের প্রত্যাশীদের একাংশকে মূল্যায়ন না করার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই রাজধানীতে অবস্থান করা এখানকার নেতা-কর্মীরা বরিশালে তাদের অনুসারীদের অবহিত করে। গুরুত্বপূর্ন পদে না পাওয়ার ক্ষোভে ক্ষুদ্ধ হয়ে বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুঁলিয়ে রেখেছে পদ বঞ্চিতদের অনুসারীরা। একই সঙ্গে ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেছে। বিপরীতদিকে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদে ঠাঁই পাওয়াদের মাঝে আনন্দ উল্লাস বিরাজ করছে। কমিটিতে জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক হয়েছেন মাসূদ হাসান মামুন। কো আহবায়ক হয়েছেন এসএম তসলিম ও নুরুল আমিন কয়েস। যুগ্ন আহবায়করা হলেন হাফিজ আহমেদ বাবলু,জাহিদুল ইসলাম সমীর,নাজমুল হাসান ছবির,আরিফুর রহমান মুন্না,মিঠু,আজাদ,সাইফুল ইসলাম সুজন,মাসুম বিল্লাহ শামীম,হাবিবুল্লাহ। মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক হলেন খন্দকার আবুল হাসান লিমন। কো আহবায়ক হয়েছেন আফরোজা খানম নাছরিন, মাজাহারুল ইসলাম জাহান। যুগ্ন আহবায়করা হলেন আমিনুল ইসলাম লিপন, শহিদুল হাচান আনিচ, মিজানুর রহমান পলাশ,ফিরোজ আলামিন পলাশ,মশিউর রহমান মঞ্জু, জনি,জাবের আবদুল্লাহ সাদি।

বিক্ষুদ্ধ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক হাফিজ আহমেদ বাবলু বলেন অযোগ্য ও নিস্ক্রিয়দের ভাইটাল পদে রেখে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি চুড়ান্ত করা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে কমিটি ঘোষনা করা হতে পারে। চুড়ান্ত কমিটিকে বিতর্কিত কমিটি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন  ওই কমিটিতে সংগঠনের ত্যাগী বা মাঠের নেতাদের মূল্যায়ন করা হয় নি। সেখানে অযোগ্যদের ঠাই দিয়ে পকেট কমিটি করা হয়েছে। এজন্য কমিটি প্রত্যক্ষ্যান করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। নুরুল আমিন কয়েস একজন মুদী ব্যাবসায়ী হিসাবে পরিচিত। সে অছাত্র। তাকেও মহানগরের কো কনভেনার  করা হয়েছে। অপরদিকে মহানগর কমিটিতে যুগ্ন আহবায়ক পদে ঠাঁই পাওয়া মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন চুড়ান্ত কমিটিতে যোগ্য নেতৃত্বরাই ঠাঁই পেয়েছে। খুব সুন্দর কমিটি হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে একটি সূত্র বলছে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনোয়ার হোসেন জিপুর অনুসারীরা পদবঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভের বিস্ফোরন ঘটিয়েছে। যদিও জিপু বলেছেন আমি তো এখন ছাত্রদলে নেই। তবে কেন্দ্র থেকে যতদুর জেনেছি বরিশাল জেলা মহানগরের চুড়ান্ত তালিকা করেছে। সেই তালিকায় যোগ্যদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের ঠাঁই দেয়ায় ছাত্রদলের মধ্যে ক্ষোভের বিস্ফোরন ঘটে। এরপর কেন্দ্র সেই চুড়ান্ত কমিটি স্থগিত করে রেখেছে।

প্রসঙ্গত  ২০০৩ সালে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়েছিল। এর মধ্যে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন মনোয়ার হোসেন জিপু এবং সাধারন সম্পাদক হন পারভেজ আকন বিপ্লব। অন্যদিকে মহানগরের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মশিউল আলম সেন্টু এবং সম্পাদক জিএম আতায়ে রাব্বী। বছর দুয়েক আগে সেন্টু ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। গত ২ আগষ্ট জেলা ৩ আগষ্ট মহানগর ছাত্রদলের প্রতিনিধি সন্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কমিটি অনিবার্য কারন-বশত প্রতিনিধি সন্মেলন স্থগিত ঘোষনা করে। ১ আগষ্ট অভ্যন্তরীন কোন্দল চরম আকার ধারণ করায় স্থান পরিবর্তন করে ঢাকায় সম্মেলনের ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।এর ফলে ৫ আগষ্ট জেলা ও মহানগরের সন্মেলন হয়েছে।