উইকিলিকস-ইসরাইল গোপন চুক্তি? প্রশ্ন তুলেছেন ব্লগাররা

উইকিলিকসের মধ্যে গোপন চুক্তি হয়েছে বলে মনে করেন অনেক ব্লগার। তারা আরও মনে করেন, মার্কিন এ সব গোপন নথি প্রকাশের মাধ্যমে একমাত্র লাভ হয়েছে ইসরাইলেরই।

তারা প্রশ্ন তুলেছেন, ইসরাইল নিয়ে কোনো কেলেংকারীর কথা কেন প্রকাশ হয়নি উইকিলিকস প্রকাশিত মার্কিন কূটনীতি বিষয়ক গোপন নথিপত্রে। এর জবাব হিসেবে তারা মনে করেন, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এবং ইসরাইলি কর্মকর্তারা গোপন চুক্তি করেছেন এবং নথিপত্র প্রকাশের আগে ইসরাইলের কেলেংকারী বিষয়ক সব কাগজপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ কথা বলেছেন, যুদ্ধ বিরোধী ওয়েবসাইট ‘ভেটারনস টুডে’র সম্পাদক গর্ডন ডাফ। কেউ কেউ মনে করেন, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের গোপন চুক্তি হয়েছে জেনেভায়। আরবীভাষী ওয়েবসাইট ‘আল হাকিকা’ জানায়, এ চুক্তি মোতাবেক ইসরাইলের স্বার্থ ক্ষুন্ন করতে পারে এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করা হবে না বলে তেলআবিবকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। এ সম্পর্কে ইন্ডিমিডিয়া নামের একটি ব্লগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্লগার লিখেছেন, লেবানন ও গাজা যুদ্ধ সংক্রান্ত সব তথ্য মার্কিন গোপন নথিতে রয়েছে এবং সে বিষয়টি আগে থেকেই জানতো ইসরাইল। তেলআবিব ও বৈরুতের মার্কিন দূতাবাস থেকে এ সব গোপন তথ্য পাঠানো হয়েছে এবং চুক্তি অনুসারে অ্যাসাঞ্জ সম্ভবত তা ধ্বংস করে দিয়েছেন। কারণ একমাত্র অ্যাসাঞ্জের কাছেই এ সব নথি দেখার জন্য প্রয়োজনীয় পাস ওয়ার্ড আছে।

উইকিলিকস যে সব নথি প্রকাশ করছে তাতে লাভ হয়েছে ইসরাইলের বলে চলতি মাসের গোড়ার দিকে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসির আতালে। তিনি বলেন, উইকিলিকসের প্রকাশ করা নথিপত্রে যে দেশটির কথা বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যে দেশটির কথা তেমনভাবে উল্লেখ করা হয়নি সেটি হলো ইসরাইল এবং উইকিলিকস প্রকাশিত কাগজপত্রে যে দেশটির লাভ হয়েছে সেটিও ইসরাইল।

‘সরকারের সব তৎপরতা হোক উন্মুক্ত ‘ এমন স্লোগান সামনে রেখে ২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সে সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সংবাদ জনগণের কাছে তুলে ধরাই উইকিলিকসের লক্ষ্য বলে ঘোষণা দেয়া হয়।

উইকিলিকস এ পর্যন্ত ১২ লাখ গোপন নথিপত্র প্রকাশ করেছে। আরও ২০ লাখ নথিপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছে এই ওয়েবসাইট। হেলিকপ্টারে চড়ে মার্কিন সৈন্যরা রয়টার্সের ক্যামেরাম্যানসহ বেসামরিক এবং নিরস্ত্র ইরাকি মানুষকে গুলি করে মারছে-এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। আর একে অনেকেই উইকিলিকসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও বলে মনে করছেন।

লন্ডনের একটি আদালত মঙ্গলবার জামিন মঞ্জুর করার পর ৩৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ বৃহস্পতিবার বৃটেনের হাজত থেকে মুক্তি পেয়েছেনে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত সপ্তাহে লন্ডন পুলিশের কাছে আত্মসর্মপণ করেন তিনি। যৌন অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করে সুইডেন। অ্যাসাঞ্জ অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন। মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, অ্যাসাঞ্জকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ খাড়া করেছেন সুইডেনের কর্মকর্তারা। গোপন নথিপত্র প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রকে কেলেংকারীর মুখে ফেলে দিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ । এ জন্য তাকে ধরে নিয়ে বিচারের জন্য হন্যে হয়ে উঠেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।