ফের অনিশ্চয়তার মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের উপরে উচ্চ আদালতের স্থাগিতাদেশ গতকাল রবিবার এখানকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এসে পৌছেছে। কর্নকাঠী গ্রামের জনৈক মোকসেদ আলম তালুকদার হাইকোর্টে গত ১৫ ডিসেম্বর একটি রিট আবেদন করেন। তাতে ওয়ার্কফস্টেট অধিগ্রহণের কোন আইনগত বিধান নেই বলে তিনি দাবী করেন।

বিচারপতি মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসাইনের সমন্বয় গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ ঐ জমি অধিগ্রহণ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এ মর্মে শিক্ষা সচিব, বরিশালের  জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন (রাজস্ব) ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে (আরডিসি) ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। একই সাথে ঐ জমি অধিগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। কর্নকাঠীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচনের পর পরই স্থানীয় বিএনপি এর বিরোধীতায় নামে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নানান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত মোকসেদ আলমের দায়েরকৃত রিটের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম থমকে দাড়াল।

ইতিমধ্যে বিভিন্ন  জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।  ঐ টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প পরিচালক হস্তান্তর করেছেন।  দু’টি কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করা হয়। যার মধ্যে দেড় কোটি টাকা গত বছর পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা গত ১৩ জানুয়ারী চেকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।  এর পরপরই আদালতের নিষেধাজ্ঞা এসে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে এসে পৌছায়। 

বিএনপি আমলে শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নগরীর ডেফুলিয়ায় ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। বিরোধপূর্ণ জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সম্মতি দেয়নি পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয় নগরীর গড়িয়ার পাড়ে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সকল দিক বিবেচনা করে দপদপিয়া সেতু সংলগ্ন কর্নকাঠীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থান নির্বাচন করে। জাতীয় সংসদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হওয়ার পর প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করে শুরু হয় জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য দ্রুত গতিতে কাজ চলছিল। একাডেমীক  ও প্রশাসনিক ভবন সহ অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আগামী মাসে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আপাতত ঐ জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন আদালতে ঐ রীট পিটিশনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। শোকচ নোটিশের জবাব পাওয়ার পর মহামান্য আদালত বাস্তবতা বুঝতে পারবেন। সরকারী কাজে ওয়াকফ স্টেট সহ যে কোন স্টেটের জমি অধিগ্রহণ করার বিধান রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান। আইনের এই কথাই তারা আদালতের কাছে তুলে ধরবেন। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যহত করার জন্যই ঐ রীট পিটিশন করা হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন পরিষদের নেতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোঃ হানিফ। তিনি জানান, আইনগত ভাবে ঐ পিটিশন টিকে থাকার কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়ায় হতাশ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।